প্রতিদিনের সংবাদ ডেস্ক

  ৩০ মার্চ, ২০২৪

জাতিসংঘের প্রতিবেদন

দিনে নষ্ট হয় ১০০ কোটি মানুষের খাবার

খাদ্য নিরাপত্তাহীনতার মধ্যে রয়েছে পৃথিবীর এক-তৃতীয়াংশের বেশি মানুষ। কিন্তু এমন পরিস্থিতিতেও প্রতিদিন ১০০ কোটি মানুষের এক বেলার সমান খাবার নষ্ট হচ্ছে। অর্থাৎ প্রতিদিন বিশ্বজুড়ে পাঁচ ভাগের এক ভাগ খাবার ফেলে দেওয়া হচ্ছে। গত বুধবার জাতিসংঘের পরিবেশ সংস্থার (ইউএনইপি) ‘ফুড ওয়েস্ট ইনডেক্স রিপোর্ট-২০২৪’-এর প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে। প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০২২ সালে ১০৫ কোটি টন খাবার নষ্ট হয়েছে, যা বিশ্ববাজারে আসা উৎপাদিত খাদ্যদ্রব্যের প্রায় এক-পঞ্চমাংশ। আর ভোক্তাদের প্রায় ১৯ শতাংশ খাবার দোকান, রেস্তোরাঁ ও গৃহস্থালি পর্যায়ে নষ্ট হয়। ফসল তোলার পর থেকে বিক্রি পর্যন্ত সরবরাহ শৃঙ্খলের মধ্যে ১৩ শতাংশ খাবারের অপচয় হয় বলে জানিয়েছে জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থা। খাবার অপচয়ের এ চিত্রকে ‘বৈশ্বিক ট্র্যাজেডি’ হিসেবে ফুড ওয়েস্ট ইনডেক্স শীর্ষক প্রতিবেদনে তুলে ধরা হয়েছে। এতে বলা হয়, বিশ্বের প্রায় ৭৮ কোটির বেশি মানুষ যখন না খেয়ে আছে, তখন শতকোটি টন খাবার ময়লার ঝুড়িতে ফেলা হচ্ছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০২২ সালে যত খাবার নষ্ট হয়েছে, তার ২৮ শতাংশ নষ্ট হয়েছে রেস্তোরাঁ, ক্যান্টিন ও হোটেলের মতো খাদ্য পরিষেবা ব্যবস্থাগুলোয়। কসাই ও মুদিদোকানে নষ্ট হয়েছে ১২ শতাংশ খাবার। তবে সবচেয়ে বেশি অর্থাৎ ৬০ শতাংশ খাবার নষ্ট হয়েছে বাসাবাড়িতে, যার পরিমাণ ৬৩ কোটি ১০ লাখ টন। ইউএনইপির নির্বাহী পরিচালক ইনগার অ্যান্ডারসন এক বিবৃতিতে বলেন, মানুষ প্রয়োজনের চেয়ে বেশি খাবার কিনছে বলে এ ধরনের অপচয় হচ্ছে। এছাড়া তারা কতটুকু খেতে পারবে, তা-ও আন্দাজ করতে পারছে না। এতে খাবার উচ্ছিষ্ট থেকে যাচ্ছে। এ ধরনের ঘটনাকে ‘পরিবেশগত ব্যর্থতা’ হিসেবে তুলে ধরে জাতিসংঘের প্রতিবেদনে বলা হয়, এ ধরনের অপচয়ের ঘটনা নৈতিক নয়। উড়োজাহাজ চলাচল থেকে নিঃসরিত কার্বন যতটা না বৈশ্বিক উষ্ণতা বাড়াচ্ছে, তার থেকে পাঁচ গুণ উষ্ণতা বাড়াচ্ছে খাদ্যবর্জ্য।

এখন পর্যন্ত বিশ্বে খাবারের অপচয় নিয়ে জাতিসংঘের সংকলিত দ্বিতীয় প্রতিবেদন এটি। প্রতিবেদনটি তৈরিতে জাতিসংঘকে সহযোগিতা করেছে অলাভজনক সংস্থা ডব্লিউআরএপি। খাবার অপচয় নিয়ে এটি এ পর্যন্ত সবচেয়ে পূর্ণাঙ্গ চিত্র উপস্থাপন করেছে। ডব্লিউআরএপির কর্মকর্তা রিচার্ড সোয়ানেল বলেন, এ চিত্র দেখে আমি হতভম্ব। বিশ্বে এক বেলায় যত খাবার নষ্ট হয়, শুধু তা দিয়েই অনাহারে থাকা প্রায় ৮০ কোটি মানুষকে প্রতি বছর খাওয়ানো সম্ভব। খাবার অপচয়ের আরেকটি কারণ হিসেবে মেয়াদোত্তীর্ণের তারিখ উল্লেখ করে সোয়ানেল বলেন, উৎপাদিত খাবার নষ্ট হচ্ছে কারণ, মানুষ ভুলবশত ধারণা করে যে তাদের খাবারের মেয়াদ নেই। উন্নয়নশীল বিশ্বে প্রচুর খাদ্য অযথাই অপচয় হয়নি, বরং এগুলো পরিবহনের সময় কিংবা রেফ্রিজারেটরের অভাবে নষ্ট হয়েছে বলেও প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close