নিজস্ব প্রতিবেদক

  ৩০ মার্চ, ২০২৪

ঢাকা-আশুলিয়া উড়াল সড়ক

নির্দিষ্ট সময়ে কাজ শেষ করতে তিন বাধা

* এখনো সরানো হয়নি বিভিন্ন সেবা সংস্থার লাইন * সড়কে মালামাল, বিদ্যুতের খুঁটি স্থানান্তরের জন্য জমি অধিগ্রহণে জটিলতা * ২৪ কিলোমিটারের এ সড়ক পাড়ি দিতে হচ্ছে ১৩ সংস্থার ওপর দিয়ে * মাথা তুলছে আবদুল্লাপুরে, সার্বিক অগ্রগতি ৩৭% * সব পক্ষের সঙ্গে সমন্বয় করে বাধা দূর করার চেষ্টা চলছে : প্রকল্প পরিচালক

তিন বাধার মুখে পড়েছে ঢাকা-আশুলিয়া উড়ালসড়কের (এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে) নির্মাণকাজ। এ কারণে নির্দিষ্ট সময়ে প্রকল্পের কাজ শেষ করা চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে পারে। যদিও প্রকল্প পরিচালক মো. সাহাবুদ্দিন খান বলেছেন, সব পক্ষের সঙ্গে সমন্বয় করে বাধা দূর করার চেষ্টা চলছে। আর্থিক জটিলতা কাটিয়ে নির্ধারিত সময়ের দুবছর বাদে ২০২২ সালে শুরু হয় এ উড়ালসড়কের কাজ। এরপর থেকে এ প্রকল্পের কাজের অগ্রগতি চোখে পড়ার মতো। আবদুুল্লাপুর থেকে আশুলিয়ায় মাথা তুলে দাঁড়াচ্ছে নতুন এ গতিপথ। যার সার্বিক অগ্রগতি ৩৭ শতাংশ হলেও প্রকল্পের পূর্ত কাজ হয়েছে ২১ শতাংশ। ২৪ কিলোমিটারের এ পথ পাড়ি দিতে সরকারি ১৩টি সংস্থার ওপর দিয়ে যেতে হচ্ছে। তাই প্রতিবন্ধকতা পেরিয়ে কাজ এগিয়ে নেওয়াই বড় চ্যালেঞ্জ বলে স্বীকার করেছেন পিডি মো. সাহাবুদ্দিন খান।

প্র্রকল্প এলাকা ঘুরে জানা গেছে, ঢাকা-আশুলিয়া উড়ালসড়কের মূল দৈর্ঘ্য ২৪ কিলোমিটার। এর সঙ্গে থাকবে ১৪টি র‌্যাম্প। যার দৈর্ঘ্য প্রায় ১১ কিলোমিটার। উত্তরা ৮ নম্বর সেক্টর এলাকায় রেললাইনের পাশে পিলার উঠে গেছে। আবদুুল্লাপুর এলাকায় পিলার ক্যাপও বসানো হয়েছে। আর আশুলিয়া বেড়িবাঁধ এলাকায় পিলার তৈরির কাজ প্রায় শেষ। এখন চলছে পিলার ক্যাপ বসানোর কাজ। এর ওপরই মূলত সড়ক নির্মাণ করা হবে। কাওলা এলাকার এ পয়েন্টেই ঢাকা উড়াল সড়ক ও ঢাকা-আশুলিয়া উড়াল সড়ক যুক্ত হবে। তৈরি হবে ৪৪ কিলোমিটারের একটি নিরবচ্ছিন্ন পথ। কিন্তু কাজ এখনো শুরুই হয়নি।

প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা বলেছেন, ঢাকা উড়াল সড়ক দীর্ঘদিন ধরে এ জায়গা থেকে মালামাল সরিয়ে না নেওয়ায় কাজ শুরু করা যাচ্ছে না। তাছাড়া বিদ্যুতের খুঁটি আটকে দিয়েছে আশুলিয়া পয়েন্টের কাজ।

দেখা গেছে, কয়েকটি জায়গায় পিলারের কাজ এগিয়ে গেছে, আবার কয়েকটি জায়গায় কিছু বাধাও আছে। জিরাবো এলাকায় সড়কের পাশে বিদ্যুতের খুঁটি থাকায় সেখানে কাজ করতে পারছে না প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা। আশুলিয়া-ধউর বেড়িবাঁধে ২.৭২ কিলোমিটারের একটি সেতু হবে। বিদ্যুতের তার আর ব্রিজের পিলারের উচ্চতা প্রায় কাছাকাছি হওয়ায় সেখানেও তৈরি হয়েছে জটিলতা। সমস্যা সমাধানে এ পয়েন্টে নতুন করে ৪টি বিদ্যুতের পিলার তৈরি করা হচ্ছে। আবার জিরাবো থেকে প্রায় তিন কিলোমিটার উচ্চ ভোল্টের বৈদ্যুতিক সঞ্চালন লাইন স্থানান্তর সম্ভব না হওয়ায় সেখানেও কাজে হাতই দিতে পারেনি কর্তৃপক্ষ।

এ বিষয়ে পিডি মো. সাহাবুদ্দিন খান বলেন, পাইলিংয়ের কাজ চলছে। কিন্তু ওপরে কাজ করতে পারছি না। বিদ্যুৎ অফিস থেকে আমাদের কাছে একটু সময় চেয়েছে। বলেছে, ছয় মাসের মধ্যে তারা এগুলো সরাতে পারবে। এজন্য আমরা কাজের গতি বাড়াতে পারছি না।

বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ড (বিআরইবি) বলেছে, শিল্প এলাকায় চাইলেই শাটডাউন করে কাজ করা সহজ না। তাছাড়া জটিলতা আছে স্থানান্তরের জমি অধিগ্রহণেও।

ঢাকা পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-১-এর সিনিয়র জোনাল ম্যানেজার মো. মুশফিকুল হাসান বলেন, অনেক জায়গায় আমরা জমি অধিগ্রহণ করতে পারিনি। যার কারণে বিদ্যমান লাইন কোন দিকে নেওয়া হবে, তা ঠিক করাই কঠিন হয়ে পড়েছে। যদিও এরই মধ্যে ৪৬৫ পোল স্থাপন করা হয়েছে। পুরো পথে পোল বসবে ১ হাজার ৮১৮টি।

এদিকে, আশুলিয়া-ধউর বেড়িবাঁধের ওপর প্রায় তিন কিলোমিটারের একটি সেতু হবে। বিদ্যুতের তার আর ব্রিজের পিলারের উচ্চতা প্রায় কাছাকাছি হওয়ায় সমস্যা সৃষ্টি হয়েছে। সমস্যা সমাধানে এ পয়েন্টে নতুন করে ৪টি বিদ্যুতের পিলার তৈরি হচ্ছে। এর বাইরেও প্রকল্প এলাকার ভেতরে থাকা বিভিন্ন সেবা সংস্থার লাইন এখনো সরানো হয়নি। ফলে ঝুঁকি নিয়ে কাজ করতে হচ্ছে। প্রকল্প এলাকার বেশিরভাগ এলাকায় আছে উচ্চ ভোল্টের বৈদ্যুতিক লাইন। যা মূলত বড়বড় শিল্প প্রতিষ্ঠানের চাহিদা মেটায়। ফলে বিদ্যুৎ বন্ধ রেখে কাজ করারও উপায় নেই। আবার লাইনগুলো না সারলে কাজ এগোনো যাচ্ছে না।

এ বিষয়ে মো. সাহাবুদ্দিন খান বলেন, এ সময় যদি বিদ্যুতের লাইনটা সরে যায় তাহলে আমরা কাজ শেষ করতে পারব। যেহেতু আমাদের সময় আছে আড়াই থেকে তিন বছর, এ সময়ে আমরা কাজ শেষ করতে পারব বলে আশাবাদী।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close