নিজস্ব প্রতিবেদক

  ২৯ মার্চ, ২০২৪

বিআরটি প্রকল্পের অগ্রগতি ৯০%

বহুল প্রতীক্ষিত গ্রেটার সাসটেইনেবল আরবান ট্রানজিট প্রজেক্ট (বিআরটি, গাজীপুর-এয়ারপোর্ট) প্রকল্পের কাজ ৯০ শতাংশ শেষ হয়েছে। আগামী জুনের মধ্যে প্রকল্পের কাজ শেষ হবে। এর মাধ্যমে গাজীপুরসহ দেশের উত্তরাঞ্চল ও বৃহত্তর ময়মনসিংহগামী যানবাহন এবং যাত্রীদের গত ১২ বছর ধরে চলা অবর্ণনীয় দুর্ভোগের অবসান হবে। এতে গাজীপুরের শিববাড়ী থেকে বিমানবন্দর পর্যন্ত যেতে সময় লাগবে ৪৪ মিনিট। কোম্পানির নিজস্ব ১৩৭টি নতুন ডিজেলচালিত এসি বাস এ রুটে চলাচল করবে।

প্রকল্পসংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান, গাজীপুর শহরের শিববাড়ী থেকে বিমানবন্দর পর্যন্ত ২০.৫০ কিলোমিটার দীর্ঘ পথ বাসে যেতে সময় লাগবে ৪৪ মিনিট। কোম্পানির নিজস্ব ১৩৭টি নতুন ডিজেলচালিত এসি বাস চলাচল করবে। প্রকল্পের শিববাড়ী ও বিমানবন্দরে দুটি বাস টার্মিনাল, আটটি ফ্লাইওভার, ২৫টি বাস স্টপেজ, ১৫টি ফুট ওভারব্রিজ, ফুটপাত ৩২ কিলোমিটার, উভয় পাশের ড্রেন ৫৫ কিলোমিটার এবং মাটি থেকে নিয়মানুযায়ী উচ্চতা থাকবে ৮.৫ মিটার। বাস চলাচলের সময় কোথাও জ্যাম থাকবে না এবং যথারীতি ৪৪ মিনিটে গন্তব্যে পৌঁছার নিশ্চয়তা থাকবে।

গত বুধবার গাজীপুর জেলা প্রশাসকের ভাওয়াল সম্মেলনকক্ষে এক গণশুনানি হয়। এ সময় সাবেক মেয়র মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলমসহ কিছু সাংবাদিক প্রকল্পের ধীরগতি ও দীর্ঘসূত্রতা এবং প্রকল্পের কয়েকবার ব্যয় বৃদ্ধি ও ত্রুটি-বিচ্যুতির সমালোচনা করে জনদুর্ভোগের বিষয়টি তুলে ধরেন। পাশাপাশি প্রকল্পের শেষ পর্যায়ে এসে না করে প্রথমে গণশুনানি করলে যেসব ত্রুটি ধরা হয়েছে, সেগুলো এড়ানো সম্ভব হতো বলে অভিমত ব্যক্ত করেন।

জাহাঙ্গীর আলম বলেন, এ প্রকল্পে নানা অসংগতি ও ত্রুটি রেখে দেশের অর্থের এবং সময়ের অপচয়ের দায়ে বিআরটি প্রকল্পের সঙ্গে জড়িত সংশ্লিষ্ট ডিজাইনার ও প্রকৌশলীদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা এবং গ্রেপ্তারের দাবি করছি। যদি ৫ হাজার টাকা চুরি করে, তার জন্য যদি কোর্টে হাজিরা দিতে হয়, তবে যারা হাজার হাজার কোটি টাকা নষ্ট করল, লাখো মানুষের ক্ষতি ও ভোগান্তি করল, তাদের বিরুদ্ধে কেন ব্যবস্থা নেওয়া হবে না?

উল্লেখ্য, ‘নগরে ছন্দময় পথচলা’ স্লোগান নিয়ে বিআরটি ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে গাজীপুর পর্যন্ত বিআরটি লেনের কার্যক্রম শুরু করে। দীর্ঘমেয়াদি পরিবহন পরিকল্পনা প্রণয়ন ও সমন্বয় সাধনের জন্য ২০০৫ সালে স্ট্র্যাটেজিক ট্রান্সপোর্ট প্ল্যান প্রণয়ন করে তা ২০১৫ সালে রিভাইজ করা হয়। যার আওতায় বিআরটি প্রকল্প বাস্তবায়ন হচ্ছে। এ প্রকল্পের আওতায় ৫ একর জমিতে আধুনিক সুযোগ-সুবিধাসম্পন্ন বাস ডিপো নির্মাণ করা হয়েছে। এর করিডোরের দুই পাশে ৩৪ কিলোমিটার ফিডার রোড নির্মাণ করা হয়েছে। এর দুই পাশে ২৪.৪২ কিলোমিটার ড্রেন নির্মাণ করা হয়েছে।

প্রকল্পের ৯টি ফ্লাইওভারের মধ্যে ২৪ মার্চ ৭টি খুলে দেওয়া হয়েছে। এছাড়া ৩২ কিলোমিটার ফুটপাতের ৪০ শতাংশ সম্পন্ন হয়েছে। প্রকল্পের কাজটি শেষের দিকে। চলতি বছরের ডিসেম্বরের মধ্যেই চালু হবে বলে জানান প্রকল্পসংশ্লিষ্টরা। বিআরটি প্রকল্পের সুবিধা হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে নিজস্ব বিআরটি লেন, পরিবেশবান্ধব পরিবহন, যানজটমুক্ত পরিবহন ব্যবস্থা, অটোমেটিক টিকেটিং সিস্টেম, ২০.৫ কিলোমিটার রাস্তায় ২৫টি স্টেশন, গাজীপুর থেকে এয়ারপোর্ট ৩৫-৪০ মিনিটে পৌঁছে যাবে। এছাড়া ৩০ সেকেন্ড পরপর স্ট্যান্ডার্ড এসি বাস চলবে, বিআরটি লেনে অন্য কোনো পরিবহন চলবে না, লেনের উভয় পাশে ব্যারিকেড দেওয়া থাকবে।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close