নিজস্ব প্রতিবেদক ও সাভার প্রতিনিধি

  ২৮ মার্চ, ২০২৪

স্বাধীনতা দিবস উদযাপন

সমৃদ্ধ দেশ গড়ার প্রত্যয়

সাম্প্রদায়িক শক্তি দেশ থেকে উৎখাত ও ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত, সমৃদ্ধ এবং স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ে তোলার প্রত্যয়ে ৫৪তম ‘স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস-২০২৪’ উদযাপন করেছেন দেশবাসী। রক্তক্ষয়ী যুদ্ধ শেষে বাঙালি পেয়েছেন সোনার বাংলাদেশ। যাদের আত্মত্যাগের বিনিময়ে অর্জিত হয়েছে এদেশ, সেই সূর্যসন্তানদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে গত মঙ্গলবার সর্বস্তরের মানুষের ঢল নামে সাভারের জাতীয় স্মৃতিসৌধ প্রাঙ্গণে। এ সময় জাতির সূর্যসন্তানদের বিনম্র শ্রদ্ধায় স্মরণ করে গোটা জাতি। পরাধীনতা থেকে মুক্তি পেতে বাঙালির দীর্ঘ আন্দোলনের পথ ধরে ৯ মাস মরণপণ যুদ্ধ শেষে এসেছিল যে স্বাধীনতা, পাকিস্তানি শোষণ-বঞ্চনার শৃঙ্খল ভেঙে উড়েছিল লাল-সবুজের পতাকা, অভ্যুদয় ঘটেছিল স্বাধীন বাংলাদেশের সেই গৌরবোজ্জ্বল ইতিহাসের ৫৪তম দিবসে স্বদেশ বিনির্মাণে আরো একবার শপথ নিয়েছে বাঙালি জাতি। ধ্বংসস্তূপ থেকে উঠে দাঁড়িয়ে বিভিন্ন চড়াই-উতরাই পেরিয়ে অগ্রযাত্রার ধারায় এখন উন্নয়নশীল হওয়ার পথে এগোনো দেশ স্বপ্ন দেখছে উন্নত সমৃদ্ধ সোনার বাংলার।

মঙ্গলবার স্বাধীনতা দিবস উদযাপনে ভোর ৫টা ৫৬ মিনিটে দিনের প্রথম প্রহরে জাতীয় স্মৃতিসৌধে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং রাষ্ট্রীয় সফরে বাংলাদেশে আসা ভুটানের রাজা জিগমে খেসার নামগিয়েল ওয়াংচুক। শহীদবেদিতে ফুল দেওয়ার পর সেখানে দাঁড়িয়ে কিছু সময় নীরবতা পালন করেন তারা। এ সময় বিউগলে বাজানো হয় করুণ সুর। সশস্ত্র বাহিনীর একটি চৌকস দল গার্ড অব অনার প্রদান করে। এর আগে ঢাকাসহ সারা দেশে প্রত্যুষে ৩১ বার তোপধ্বনির মাধ্যমে দিবসটির সূচনা হয়।

প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শ্রদ্ধা নিবেদনের পর শেখ হাসিনা আওয়ামী লীগ সভাপতি হিসেবে দলের সিনিয়র নেতাদের সঙ্গে নিয়ে জাতীয় স্মৃতিসৌধে শ্রদ্ধা জানান। শ্রদ্ধা নিবেদনের পর স্মৃতিসৌধ প্রাঙ্গণ ত্যাগ করার আগে রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী ও ভুটানের রাজা পরিদর্শন বইয়ে স্বাক্ষর করেন। ভুটানের রানি জেৎসুন পেমাও উপস্থিত ছিলেন জাতীয় স্মৃতিসৌধে। এ সময় জাতীয় সংসদের স্পিকার, প্রধান বিচারপতি, মন্ত্রিপরিষদ সদস্য, সিনিয়র রাজনীতিবিদ, তিন বাহিনীর প্রধান, সংসদ সদস্য, বীর মুক্তিযোদ্ধা, কূটনীতিক, বিভিন্ন উন্নয়ন সহযোগী সংস্থার প্রতিনিধি এবং পদস্থ বেসামরিক-সামরিক কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

পরে জাতীয় সংসদের স্পিকার ও প্রধান বিচারপতিও জাতীয় স্মৃতিসৌধের শহীদবেদিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে বীর শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান। দেশি-বিদেশি কূটনীতিক ও রাজনৈতিক নেতাদের শ্রদ্ধা নিবেদনের পর সর্বসাধারণের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হয় সৌধ প্রাঙ্গণ। এরপরই শহীদবেদিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান যুদ্ধাহত বীর মুক্তিযোদ্ধা ও বীরশ্রেষ্ঠ পরিবারের সন্তানরা। আওয়ামী লীগ ও তার বিভিন্ন সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মী এবং গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিরা শ্রদ্ধা জানান। সরকারি-বেসরকারি নানা প্রতিষ্ঠান, রাজনৈতিক সংগঠন, স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন, বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যানার নিয়ে দলে দলে জনস্রোত প্রবেশ করে স্মৃতিসৌধে।

শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি), গণসংহতি আন্দোলন, বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি, বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টি, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল জাসদ, বাসদসহ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়, সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, রাজনৈতিক দল, প্রেস ক্লাব ও বিভিন্ন সামাজিক, সাংস্কৃতিক সংগঠন ও সাধারণ মানুষ। এ সময় ফুলে ফুলে ভরে ওঠে স্মৃতিসৌধের বেদি। এদিকে ঢাকা জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে সাভার জাতীয় স্মৃতিসৌধ এলাকায় ছিল কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা। সিসি ক্যামেরাসহ সাদা পোশাকেও পুলিশের নজরদারি করা হয় সৌধ এলাকায়।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close