নিজস্ব প্রতিবেদক

  ১৯ মার্চ, ২০২৩

আওয়ামী লীগের মূলনীতি হলো টাকা পাচার

মির্জা ফখরুল

বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, আওয়ামী লীগের মূল নীতি হলো টাকা পাচার আর দুর্নীতি। এই সরকারের দুর্নীতির ফিরিস্তি দিতে গেলে এক দিনে হবে না, এক মাস লাগবে। যেখানে যাবেন, সেখানে দুর্নীতি। টিআইবি রিপোর্টে সবচেয়ে বেশি দুর্নীতি করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পিয়নের চাকরির জন্যও ১৫ লাখ টাকা ঘুষ দিতে হয়। শনিবার (১৮ মার্চ) বিকেলে রাজধানী ঢাকার নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ বিএনপি আয়োজিত প্রতিবাদ সমাবেশে তিনি একথা বলেন।

মির্জা ফখরুল বলেন, এই সরকার বিদ্যুৎ খাতকে দুর্নীতির প্রধান খাত হিসেবে বেছে নিয়েছে। এর আছে তেল আমদানি খাত। সিআইডি বলেছে, দেশ থেকে প্রতিবছর হু-ির মাধ্যমে ৭৫ হাজার কোটি টাকা পাচার হয়। একটা বালিশ কিনেছে ৫ হাজার ৭০০ টাকায়। ১০ হাজার কোটি টাকার পদ্মা সেতু ৩০ হাজার কোটি টাকায় বানিয়েছে। আবার নতুন শুরু করেছে পাতাল রেল। উদ্দেশ্য একটাই, লুট। ২১ কিলোমিটার পাতাল রেলে খরচ হবে ৫২ হাজার কোটি টাকা।’

তিনি বলেন, ‘টাকা পাচার করে অর্থনীতিকে একেবারে ফোকলা করে দিয়েছে। ব্যাংকিং খাত থেকে ৮০০ কোটি টাকা লোপাট হয়ে গেছে। ডলার সংকটে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য আমদানি বন্ধ হয়ে গেছে। এই রাষ্ট্রকে আওয়ামী লীগ ধ্বংস করে দিয়েছে। দুদিন আগে সুপ্রিম কোর্টে পুলিশ ঢুকে আইনজীবীদের পিটিয়ে আহত করেছে।’ মহানগর উত্তর বিএনপির আহ্বায়ক আমান উল্লাহ আমানের সভাপতিত্বে মহানগর উত্তরের সদস্য সচিব আমিনুল হক ও দক্ষিণের সদস্য সচিব রফিকুল আলম মজনুর পরিচালনায় আরো বক্তব্য দেন স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, মহানগর দক্ষিণ বিএনপির আহ্বায়ক আবদুস সালাম, ভাইস চেয়ারম্যান আহমেদ আযম খান, যুগ্ম মহাসচিব মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এনি, বিএনপি নেতা ফজলুল হক মিলন, নাজিম উদ্দীন আলম, ডা. রফিকুল ইসলাম, ব্যারিস্টার কায়সার কামাল, রকিবুল ইসলাম বকুল, ইশরাক হোসেন, সাঈদ সোহরাব, যুব দলের সুলতান সালাউদ্দীন টুকু, স্বেচ্ছাসেবক দলের এসএম জিলানী, রাজিব আহসান, মুক্তিযোদ্ধা দলের সাদেক আহমেদ খান, মহিলা দলের আফরোজা আব্বাস, সুলতানা আহমেদ, ছাত্র দলের সাইফ মাহমুদ জুয়েল প্রমুখ

সমাবেশে দফায় দফায় মারামারি : রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির প্রতিবাদ কর্মসূচিতে স্বেচ্ছাসেবক দল ও ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা নিজেদের মধ্যে দফায় দফায় মারামারিতে জড়িয়ে পড়েন। এ মারামারির ঘটনায় সমাবেশে অনেকটা ছন্দপতন ঘটে। নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারসহ ১০ দফা ও বিদ্যুৎসহ নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের মূল্য কমানোর দাবিতে শনিবার দুপুর সোয়া ২টায় বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে সমাবেশ শুরু হয়। সমাবেশ শুরুর আগে প্রথমে দুপুর ২টার দিকে নয়াপল্টনে হোটেল শাংরি-লা-ইন এর সামনে স্বেচ্ছাসেবক দলের দুই গ্রুপের মধ্যে মারামারির ঘটনা ঘটে। পরে বিএনপির সিনিয়র নেতাদের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে। এরপর দ্বিতীয় দফায় বিকেল পৌনে ৩টায় মঞ্চে বিএনপির নেতারা বক্তব্য দিচ্ছিলেন। এমন সময় কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে ছাত্রদলের দুই গ্রুপ মারামারিতে জড়ায়। মারামারি থামাতে ছাত্রদলের সভাপতি কাজী রওনকুল ইসলাম শ্রাবণ ও সাধারণ সম্পাদক সাইফ মাহমুদ জুয়েল মঞ্চ থেকে নেমে আসেন। দীর্ঘসময় চেষ্টা করেও তারা মারামারি থামাতে পারেননি। এরপর মঞ্চ থেকে বক্তব্য দেওয়ার জন্য ছাত্রদলের সভাপতির নাম ঘোষণা করা হয়। বক্তব্য দেওয়ার সময় মাইকে মারামারি থামানোর কথা বলেন তিনি। পরে ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদকসহ কেন্দ্রীয় নেতাদের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে।

এর আগে দুপুর ১২টা থেকেই নয়াপল্টন ও এর আশপাশের এলাকা বিএনপি নেতাকর্মীদের উপস্থিতিতে সরগরম হয়ে ওঠে। রাজধানীর বিভিন্ন ইউনিটিনের ছোট ছোট মিছিল নিয়ে বিএনপির অঙ্গ সহযোগী সংগঠন নেতাকর্মীরা নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে জড়ো হতে থাকেন। স্লোগানে স্লোগানে মুখরিত হয়ে ওঠে নয়াপল্টন। দলের চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া ও গ্রেফতারকৃত নেতাকর্মীদের মুক্তির দাবিতে স্লোগান দেন নেতাকর্মীরা। ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ বিএনপি এ সমাবেশের আয়োজন করে। উত্তরের আহ্বায়ক আমান উল্লাহ আমানের সভাপতিত্বে সমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। বিশেষ অতিথি হিসেবে ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটি সদস্য মির্জা আব্বাস।ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির সদস্যসচিব আমিনুল হক ও দক্ষিণ বিএনপির সদস্যসচিব রফিকুল আলম মজনু সমাবেশ সঞ্চালনা করেন।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close