নিজস্ব প্রতিবেদক

  ১৯ মে, ২০২২

বঙ্গবন্ধু পরিবারের নাম ভাঙিয়ে প্রতারণা হোতাসহ গ্রেপ্তার ২

বঙ্গবন্ধু পরিবারের সদস্যসহ রাষ্ট্রের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তির নাম ও পরিচয় ব্যবহার করে কোটি কোটি টাকা আত্মসাৎকারী চক্রের মূলহোতাসহ দুজনকে গ্রেপ্তার করেছে এলিট ফোর্স র‌্যাব। মঙ্গলবার রাতে রাজধানীর পল্টন এলাকায় অভিযান চালিয়ে হোতা মনসুর আহমেদ (৩৩) ও তার অন্যতম সহযোগী মহসিন চৌধুরীকে গ্রেপ্তার করা হয়।

এ সময় তাদের কাছ থেকে প্রতারণার কাজে ব্যবহৃত বিভিন্ন দলিল ও ডিজিটাল ফুটপ্রিন্ট জব্দ করা হয়। র‌্যাব জানায়, গ্রেপ্তার প্রতারকরা সরকারি বিভিন্ন উন্নয়ন ও নির্মাণ প্রকল্পের কাজ পাইয়ে দেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে বিভিন্ন ঠিকাদারি ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিতেন।

গতকাল বুধবার রাজধানীর কারওয়ানবাজারে র‌্যাবের মিডিয়া সেন্টারে সংবাদ সম্মেলনে এ বিষয়ে বিস্তারিত জানান র‌্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন। তিনি বলেন, সম্প্রতি জাতীয় নিরাপত্তা গোয়েন্দা সংস্থার (এনএসআই) কাছ থেকে র‌্যাব তথ্য পায়, প্রতারক ও জালিয়াত চক্র বঙ্গবন্ধু পরিবারের সদস্যসহ রাষ্ট্রের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তির নাম ও পরিচয় ভাঙিয়ে প্রতারণা করে আসছে। প্রতারকরা সরকারি বিভিন্ন উন্নয়ন এবং নির্মাণ প্রকল্পের কাজ পাইয়ে দেওয়ার মিথ্যা আশ্বাস দিয়ে বিভিন্ন ব্যক্তি ও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে অর্থ হাতিয়ে নিচ্ছে। এমন তথ্যের ভিত্তিতে মঙ্গলবার রাতে র‌্যাব ও এনএসআই যৌথ অভিযান চালিয়ে রাজধানীর পল্টন এলাকা থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। এ সময় তারা প্রতারণায় জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছেন বলে জানায় র‌্যাব।

খন্দকার আল মঈন বলেন, গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা সংঘবদ্ধ চক্রের সদস্য। এই চক্রে পাঁচ থেকে সাতজন সদস্য রয়েছে। মনসুরের নেতৃত্বে চক্রটি তিন থেকে চার বছর ধরে বিভিন্ন প্রকল্পে কাজ পাইয়ে দেওয়ার নাম করে বিভিন্ন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে প্রতারিত করে আসছে। তারা প্রতারণার জন্য বিভিন্ন সময় নতুন কৌশল ব্যবহার করতেন। নতুন সিম কার্ড কিনে বঙ্গবন্ধু পরিবারের সদস্যসহ রাষ্ট্রের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তির নামে সেভ করতেন। চক্রের সদস্যদের বিভিন্ন মুঠোফোন নম্বর চক্রের মূল হোতা ও সহযোগীর মুঠোফোনে বঙ্গবন্ধু পরিবারের সদস্যদের নাম ও ছবি দিয়ে সেভ করতেন। পরে তারা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহার করে নিজেদের মধ্যে সরকারের বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্পের কাজ পাইয়ে দেওয়ার ব্যাপারে চ্যাটিং করতেন। এই চ্যাটিং কনটেন্ট তারা এমনভাবে তৈরি করেন, যাতে যেকোনো ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মনে করে, এর আগে অনেক কাজ তারা অর্থের বিনিময়ে পাইয়ে দিয়েছেন এবং তাদের বঙ্গবন্ধু পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে খুবই সুসম্পর্ক রয়েছে।

এ চক্রের এক সদস্য কথিত সাইফুল বর্তমানে সংযুক্ত আরব আমিরাতে রয়েছেন। তিনি নিজেকে সংযুক্ত আরব আমিরাতের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের যুগ্মসচিব পরিচয় দিতেন। সাইফুল আরব আমিরাতে বসে সরকারের বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্পের কাজ পাইয়ে দেওয়ার মিথ্যা প্রতিশ্রুতি দিতেন বলে আটক ব্যক্তিরা জিজ্ঞাসাবাদে জানান। নিজেদের বিশ্বাসযোগ্যতা প্রমাণ করতে বঙ্গবন্ধু পরিবারের সদস্যসহ বিভিন্ন রাষ্ট্রীয় গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের সঙ্গে তাদের ছবি আগ্রহী ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে দেখাতেন।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close