নিজস্ব প্রতিবেদক

  ২৪ আগস্ট, ২০১৯

ন্যাপ প্রধান অধ্যাপক মোজাফফর আহমদ আর নেই

জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের অত্যন্ত বিশ্বস্ত, মুক্তিযুদ্ধকালীন প্রবাসী বাংলাদেশ সরকারের উপদেষ্টাম-লীর সদস্য, ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টির (ন্যাপ) সভাপতি অধ্যাপক মোজাফফর আহমদ আর নেই। গতকাল শুক্রবার সন্ধ্যা ৭টা ৪৯ মিনিটে রাজধানীর অ্যাপোলো হাসপাতালে চিকিৎসাধীন তিনি মারা যান (ইন্না নিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন।

মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৯৮ বছর। তিনি স্ত্রী সাবেক সংসদ সদস্য আমেনা আহমদ, একমাত্র সন্তান (মেয়ে) আইভি আহমেদসহ অসংখ্য আত্মীয়স্বজন, রাজনৈতিক অনুসারী, শুভাকাক্সক্ষী রেখে গেছেন।

অধ্যাপক মোজাফফর আহমেদ বার্ধক্যজনিত সমস্যাসহ ফুসফুসে সংক্রমণ ও অস্বাভাবিক নিম্ন রক্তচাপ নিয়ে গত ১৪ আগস্ট এপোলো হাসপাতালে ভর্তি হন। অবস্থার অবনতি হলে ১৯ আগস্ট নিবীড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) নিয়ে লাইফ সাপোর্টে রাখা হয়েছিল তাকে।

প্রায় শতবর্ষী রাজনীতিবিদ অধ্যাপক মোজাফফর আহমদের মৃত্যুতে রাজনৈতিক অঙ্গনে শোকের ছায়া নেমে আসে। বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের পক্ষ থেকে গভীর শোক প্রকাশ, তার বিদেহী আত্মার শান্তি কামনা এবং শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জ্ঞাপন করা হয়েছে।

১৯৭১ স্বাধীনতার পক্ষে আন্তর্জাতিক সমর্থন আদায়ের জন্য তিনি বিশ্বের বিভিন্ন দেশ সফর করেন। এ সময় তিনি জাতিসংঘেও বাংলাদেশ সরকারের প্রতিনিধিত্ব করেন। মুক্তিযুদ্ধের সময় ন্যাপ-সিপিবি-ছাত্র ইউনিয়নের বিশেষ গেরিলা বাহিনী গঠনে তার ভূমিকা ছিল অবিস্মরণীয়। সরকার ২০১৫ সালে অন্যদের সঙ্গে তাকেও স্বাধীনতা পদক দেওয়ার ঘোষণা করলে তিনি তা সবিনয়ে গ্রহণ করতে অস্বীকার করেন।

১৯৫২-এর ঐতিহাসিক ভাষা আন্দোলনের অন্যতম সংগঠক ১৯৭৯ সালে দ্বিতীয় জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কুমিল্লার দেবীদ্বার আসনে ন্যাপের প্রার্থী হিসেবে কুঁড়েঘর প্রতীক নিয়ে নির্বাচিত হন। এর আগে ১৯৫৪-এর যুক্তফ্রন্ট নির্বাচনে এবং ১৯৫৭ সালের পূর্ববঙ্গ প্রাদেশিক পরিষদ নির্বাচনে বিজয়ী হন তিনি। অধ্যাপক মোজাফফর আহমদ ১৯২২ সালে ১৪ এপ্রিল কুমিল্লার দেবীদ্বার উপজেলার এলাহাবাদ গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন।

ঢাকা কলেজ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন কলেজে শিক্ষকতা করেছেন তিনি। ১৯৫৪ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপনা ছেড়ে অর্থনীতির এই শিক্ষক পুরোপুরিভাবে রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত হন।

১৯৫৭ সালের ২৭ জুলাই মওলানা ভাসানীর নেতৃত্বে ন্যাপ গঠন প্রক্রিয়ায় একজন সক্রিয় সংগঠক ছিলেন অধ্যাপক মোজাফফর আহমদ। ১৯৫৮ সালে আইয়ুবের সামরিক শাসনকালে মোজাফফর আহমদের বিরুদ্ধে হুলিয়া, গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি এবং ধরিয়ে দেওয়ার জন্য পুরস্কার ঘোষণা করা হয়।

স্বাধীন বাংলাদেশে বিভিন্ন সময়ে গণতান্ত্রিক আন্দোলন, ধর্মনিরেপেক্ষ রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার সংগ্রাম, সুস্থ সাংস্কৃতিক আন্দোলনে সামনের সারিতে থেকে দায়িত্ব পালন করেছেন অধ্যাপক মোজাফফর আহমেদ।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close