আরিফ সোহেল

  ১৪ জুলাই, ২০১৯

নতুন রাজার অপেক্ষায় বিশ্ব

শিরোপা স্বপ্নে বিভোর ইংল্যান্ড

ওয়ানডে বিশ্বকাপ ক্রিকেট আসরের কেটে গেছে ২৩ বছর। অধরা স্বপ্ন ছুঁয়ে দেখার এর চেয়ে বড় উপলক্ষ-আয়োজন আসেনি। বরং বারবার ফসকে গেছে। প্রলম্বিত বিশ্বকাপ আসরে আজ জিতলেই রঙে-রূপে ‘সোনালি’ হয়ে উঠবে ক্রিকেটের আতুরঘর ইংল্যান্ড। বাংলাদেশ সময় বিকাল সাড়ে ৩টায়, লর্ডসে শেষ ম্যাচে তাদের পথের কাঁটা হয়ে দাঁড়িয়ে নিউজিল্যান্ড। ওয়ানডে বিশ্বকাপে দক্ষিণ আফ্রিকা যেমন চোকার বলেই খ্যাত। ঠিক তেমন ইংল্যান্ডের কাছেও তেমন কিছু- শিরোপার কথা উঠলেই তাদের বুক ফেটে যাওয়ার অবস্থা দাঁড়ায়। এবার দেশের মাটিতে ১২তম বিশ্বকাপ আসরের শুরুতেই তেড়েফুঁড়ে অনেকেই বলেছেন, এবার বিশ্বকাপে ব্রিটিশ সাম্রাজের বিজয় সুনিশ্চিত। দারুণ সূচনা দেখে মনে হচ্ছিল তাই। কিন্তু শ্রীলঙ্কায় গোত্তা খাওয়া পর ইংল্যান্ডের ফের ত্রাহি অবস্থা। হচপচ হয়ে পড়েছিল অনেক কিছুই। আর সেখানে সামনে এসে দাঁড়িয়েছিল সমীকরণ নামক অনভিপ্রেত এক ঘটনা। যেখানে সামিল ছিল বাংলাদেশ-পাকিস্তান-শ্রীলঙ্কাও। সেই অবস্থা থেকেই ফিরে এসেছে ইংল্যান্ড। গ্রুপ পর্বে দুরন্ত ভারতকে প্রথম হারের লজ্জা দিয়েছিল। সেখানেই ঘুরে দাঁড়িয়ে পড়ে ইংল্যান্ড। খুঁজে পেয়েছে স্বপ্নমুখের সন্ধান। আর সেমিফাইনালে তা শতভাগ টের পেয়েছে দুর্ধর্ষ অস্ট্রেলিয়া। একেবারে একপেশে ম্যাড়মেড়ে ম্যাচে ব্রিটিশ পতাকার বিজয়। এবার তাদের সামনে আসরের সবচেয়ে গুছানো দল নিউজিল্যান্ড। ভারতের হাতে টিকিট ধরিয়ে দিয়ে বিশ্বকাপের সবচেয়ে বড় আপসেট সম্পাদন করেছে উইলিয়ামসনরা। তাও মাত্র ২৪০ রানের টার্গেট দিয়ে; ব্যাটিংজেল্লায় আকাশে উড্ডীন রোহিত-বিরাট-রাহুর ধোনিদের গুঁড়িয়ে দিয়েছে।

এই ইংল্যান্ড দলের বড় শক্তি তাদের ব্যাটিং গভীরতা। ১১ নম্বরে নামা উডও দরকারে ব্যাট হাতে দলকে সাহায্য করতে পারেন। এই মুহূর্তে ইংল্যান্ড যেন ওয়েল অয়েল্ড মেশিন। তারা যেভাবে অস্ট্রেলিয়াকে ধ্বংস করেছে তাতে ফাইনালেও যে তারা ভয়ংকর হয়ে উঠবে তা বলাই যায়।

এবারের বিশ্বকাপে অনেক বিশেষজ্ঞই ইংল্যান্ডকে সম্ভাব্য বিজয়ী বলছিলেন। সত্যি বিশ্বকাপের দাবিদার। ফাইনালে অনেকেরই ফেভারিট ইংল্যান্ড। তাদের প্রধান অস্ত্র ফর্মে থাকা জেসন রয় ও আক্রমণাত্মক জনি বেয়ারস্টো। বিধ্বংসী এই জুটি সব বোলারদেরই ফাটিয়ে দিচ্ছে। কাঁপিয়ে দিচ্ছে প্রতিপক্ষের বুক। বাটলার, জো রুটও রয়েছেন দারুণ ফর্মে। ১০ ম্যাচে ৫৪৯ রান করে এই মুহূর্তে ইংল্যান্ডের সর্বাধিক রান সংগ্রহকারী তিনিই। রোহিত শর্মার ৬৪৮ রান টপকাতে ফাইনালে তাকে শতরান করতে হবে। অধিনায়ক ইয়ান ইয়ান মরগানও দুর্দান্ত ফর্মে। মিডল অর্ডারও অসাধারণ। বল হাতে দুরন্ত ফর্মে রয়েছেন জোফরা আর্চার। ১০ ম্যাচে নিয়েছেন ১৯ উইকেট। ফাইনালে শুরুতেই তার কাজ হবে নিউজিল্যান্ডের অফ-ফর্মে থাকা ওপেনারদের ফিরিয়ে দেওয়া। তার যোগ্য সঙ্গ দিচ্ছেন মার্ক উড। এরই মধ্যেই তার শিকার ১৭টি উইকেট। এই বিশ্বকাপে ইংল্যান্ডের জোড়া গতি নাভিশ্বাস তুলেছে বহু দলের। ফাইনালেও যে তারা লর্ডসে গতির আগুন ঝরাবেন। সেইসঙ্গে ক্রিস ওকসের গতিও চিন্তায় ফেলার জন্য যথেষ্ট। তারও এরই মধ্যে সংগ্রহ ১৩টি উইকেট।

লর্ডসের পিচে যদি স্পিন ধরে, তাহলে কিন্তু আদিল রশিদ ও মইন আলির আক্রমণও সামলাতে হবে কিউইদের। দল বিপদে পড়লে বল হাতে পার্টনারশিপ ভাঙতে দুজনেই বেশ কার্যকর। এই ইংল্যান্ড দলের ফিল্ডিংও বেশ ভালো। রুটের হাতেই জমা পড়েছে ১২টি ক্যাচ। উইকেটের পেছনে ভালো ফর্মে জস বাটলারও। তার ১৩টি শিকারের মধ্যে ১১টি ক্যাচ ও ২টি স্টাম্প। এবারে বিশ্বকাপের ফাইনালে যেই জিতুক সে হবে প্রথমবারে জন্য বিশ্বজয়ী। তাই দুই দলের লড়াই ক্রিকেটপ্রেমীদের কাছে বেশ উপভোগ্য হবে। অপেক্ষা আর এক দিন।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close