নিজস্ব প্রতিবেদক

  ২৬ মে, ২০১৯

দুই হাজার ভবনের মধ্যে ত্রুটিহীন ২৯৩!

রাজধানীতে রাজউকের তদন্ত দলের পরিদর্শন

পুরান ঢাকার চুড়িহাট্টা কিংবা অভিজাত বনানী এলাকার এফআর টাওয়ার। এক একটি দুর্ঘটনা যেন অজস্র প্রাণহানি আর কান্নার আবরণে মোড়ানো অসহায়ত্ব ও বেদনার গল্প। এক মাসেরও কম সময়ের ব্যবধানে সাম্প্রতিক বড় দুটি অগ্নিকা-ের ঘটনায় নড়েচড়ে বসে সরকারের সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় আর দফতরগুলো। পুরো রাজধানীকে আটটি জোনে ভাগ করে অভিযানে নামে রাজউকের ২৪টি দল। তবে শুরুতে শুধু বহুতল ভবনগুলোকে চিহ্নিত করতে চালানো হয় অভিযান।

রাজউক তদন্ত দলের ১ হাজার ৮১৮টি ভবনে চালানো অভিযানের ফলাফল বলছে, এর মধ্যে অগ্নিনির্বাপক যন্ত্র নেই ১ হাজার ১৫৫টি ভবনে। অগ্নিনির্গমন সিঁড়িতে সমস্যা আছে ১ হাজার ২৮৭টিতে। রাজধানীর ৮টি এলাকা পরিদর্শন করে প্রায় ২ হাজার বহুতল ভবনের মধ্যে মাত্র ২৯৩টিকে সর্বাংশে ত্রুটিহীন পেয়েছে রাউজকের তদন্ত দল। বাকি ভবনগুলোর কোনোটিতে নকশা জটিলতা, আবার কোনোটির নকশাই দেখাতে পারেননি ভবন মালিকরা। নকশাই দেখাতে পারেনি এমন ভবনের সংখ্যা ৪৩১টি আর সরকারি ভবনে নকশা প্রদর্শন করা হয়নি এমন সংখ্যা ৪৪টি। এর আগে যতবারই ব্যবস্থা নেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে, ততবারই উচ্চ আদালতের স্থগিতাদেশের আশ্রয় নিয়েছেন ভবন মালিকরা। এবার যাতে সে সুযোগ না পান, সেটা মাথায় রেখেই এগোচ্ছে সরকার।

এদিকে ত্রুটিপূর্ণ ভবনগুলোর বিষয়ে দ্রুত সিদ্ধান্ত না নিলে আরেকটি দুর্ঘটনার আশঙ্কা নগর পরিকল্পনাবিদদের। নগর পরিকল্পনাবিদ অধ্যাপক নজরুল ইসলাম বলেন, এটি তো বড় একটা দুঃসংবাদ। এখান থেকে বোঝা যায়, আমরা কি ধরনের ঝুঁকির মধ্যে আছি। এই যে, রানা প্লাজা। সেখানে কার কার গাফিলতি। খুঁজলে এমন হাজার রানা প্লাজা পাওয়া যাবে। সেসব দেখার দায়িত্ব রাজউকের, কিন্তু তারা কী সে দায়িত্ব পালন করছে?

গৃহায়ন ও গণপূর্তমন্ত্রী শ ম রেজাউল বলছেন, আইনের ফাঁক গলে যাতে অভিযুক্তরা বের হয়ে যেতে না পারেন, সে জন্য সব ধরনের প্রক্রিয়া অনুসরণ করবে সরকার। কারণ যদি ভবন মালিকদের আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ না দিয়েই কালকে ভাঙার নোটিস দিই, তাহলে হাইকোর্টে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে আধা মিনিটে সেটি স্টে হয়ে যাবে। এই জন্য ধরতে চাই শক্ত করে।

সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, পর্যায়ক্রমে রাজধানীর সব এলাকায় সব ভবনেই এ অভিযান চালানো হবে। রাজধানীকে আটটি জোনে ভাগ করে রাজউক যে অভিযান চালায়, তাতে নকশাবহির্ভূত নির্মাণ, অগ্নিনির্বাপণ সমস্যাসহ সবচেয়ে বেশি সমস্যা খুঁজে পাওয়া যায় চার নম্বর জোনে। বনানী, গুলশান, বারিধারা, খিলক্ষেত, কারওয়ান বাজার এবং তেজগাঁও শিল্প এলাকায় সবচেয়ে বেশি সমস্যা খুঁজে পাওয়া যায়। অভিযান অব্যাহত থাকলে এই তালিকা ক্রমেই আরো বাড়বে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close