কুয়াকাটা (পটুয়াখালী) প্রতিনিধি

  ২০ এপ্রিল, ২০১৯

ইলিশ শিকারের নিষেধাজ্ঞা জেলেরা মানছেন না

ইলিশের ভরা মৌসুম ২০ মে থেকে ২৩ জুলাই পর্যন্ত ৬৫ দিন নতুন করে মাছ ধরার ওপর নিষেধাজ্ঞা জারির প্রতিবাদ অব্যাহত রেখেছেন মৎস্যজীবীরা। জেলেদের মধ্যে হতাশা এবং ক্ষোভ দেখা দিয়েছে। তাদের আশঙ্কা, মাছ ধরার ওপর এ নিষেধাজ্ঞার কারণে বছরের ছয় মাস মাছ ধরা থেকে বিরত থাকতে হবে। এতে বেকার হয়ে যাবেন হাজার হাজার জেলে। এসব দাবি ও অভিযোগে গতকাল শুক্রবার বেলা ১১টায় কুয়াকাটা প্রেস ক্লাবের হলরুমে সংবাদ সম্মেলন করেন মৎসজীবীরা। আজ শনিবার মৎস্যবন্দর আলীপুর-মহিপুর বন্দরে মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সভার আহ্বান করেছেন জেলেরা। এর প্রতিবাদে গত বুধবার বরগুনা এবং পিরোজপুরেও মানববন্ধন ও স্মারকলিপি দিয়েছেন মৎসজীবী এবং ট্রলার মালিকরা।

সংবাদ সম্মেলনে মহিপুর-আলীপুর-কুয়াকাটা মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির পক্ষে কুয়াকাটা-আলীপুর মৎস্য ব্যবসায়ী সমবায় সমিতি লিেিমটেডের সভাপতি মো. আনছার উদ্দিন মোল্লা লিখিত বক্তব্যে বলেন, বাংলাদেশ সরকারের মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় প্রজ্ঞাপনে আগামী ২০ মে থেকে ২৩ জুলাই পর্যন্ত সব ধরনের নৌযানের ওপর মাছ ধরা বন্ধ রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। অথচ এ সময়টা মূলত ইলিশের ভরা মৌসুম। বৈশাখ মাস থেকে আশ্বিন মাস পর্যন্ত ছয় মাস ইলিশের মৌসুম বলা হলেও প্রকৃতপক্ষে জ্যৈষ্ঠ, আষাঢ়, শ্রাবণ ও ভাদ্রÑ এই চার মাস (১২০ দিন) ইলিশ শিকারের মৌসুম। এর মধ্যে ভাদ্র মাসে প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে প্রায়ই জেলেরা সমুদ্রে যেতে পারেন না। এরপরে সরকার যদি ৬৫ দিন ইলিশ ধরা বন্ধ রাখার নির্দেশ বাস্তবায়ন করে তাহলে মৎস্যজীবীদের অপূরণীয় ক্ষতি সাধিত হবে। এ পেশা থেকে অনেকেই অন্য পেশায় চলে যেতে বাধ্য হবেন।

তিনি বলেন, এই সময়ে বঙ্গোপসাগরে অবরোধ জারি করলেও ভারতসহ পার্শ্ববর্তী দেশগুলোর সমুদ্রের জলসীমায় কোনো অবরোধ না থাকায় ওইসব দেশের জেলেরা সমুদ্রে অবাধে মাছ শিকার করছেন। তারা এ সময় বাংলাদেশের জলসীমায় ঢুকেও মাছ শিকার করে নিয়ে যান। এতে বাংলাদেশের জেলেরা ব্যাপক ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছেন। তবে একই সময় ভারতসহ পার্শ্ববর্তী দেশগুলো যদি মৎস্য শিকারের ওপর অবরোধ জারি করেন তাহলে দেশের স্বার্থ রক্ষা হবে।

এ ব্যাপারে ইকোফিশ প্রকল্পের কলাপাড়া জোনের টেকনিক্যাল অফিসার মো. রফিকুল ইসলাম বলেন, বাংলাদেশের পাশাপাশি ভারত, মিয়ানমার ও থাইল্যান্ড একই সময়ে নিষেধাজ্ঞা জারি করলে এর সুফল পাওয়া যেত। তবে সিণেধাজ্ঞা চলাকালীন বিদেশি জেলেরা যাতে বঙ্গোপসাগরের জলসীমানায় ঢুকে মাছ ধরতে না পারেন সেজন্য নৌবাহিনী ও কোস্টগার্ডকে যৌথভাবে অভিযান চালাতে হবে। অন্যথায় এ নিষেধাজ্ঞার সুবিধা নেবে অন্য দেশের জেলেরা। এ বিষয়ে কলাপাড়া উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মনোজ কান্ত সাহা বলেন, এ বিষয়ে তিনি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করবেন।

মেঘনায় অভিযানে গিয়ে ম্যাজিস্ট্রেট ও মৎস্য কর্মকর্তা হামলার শিকার : চাঁদপুর প্রতিনিধি জানান, মেঘনায় ইলিশ রক্ষা অভিযানে গিয়ে এক ম্যাজিস্ট্রেট ও এক মৎস্য কর্মকর্তা জেলেদের হামলার শিকার হয়েছেন। অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আবদুল্লাহ আল মাহমুদ জামান জানান, গত বৃহস্পতিবার রাতে মেঘনা নদীর কাটাখালি অংশে এ ঘটনায় তিনি নিজে এবং ফরিদগঞ্জ উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মিজানুর রহমান আহত হন।

ভ্রাম্যমাণ আদালতের এ অভিযানে ১৭ জেলেকে জেল-জরিমানা করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন তিনি। ইলিশ অভয়াশ্রম কর্মসূচির আওতায় জাটকা রক্ষায় চাঁদপুরের মেঘনা নদীর ৭০ কিলোমিটার এলাকায় মার্চ থেকে এপ্রিল দুই মাস ইলিশসহ সব ধরনের মাছ ধরা নিষিদ্ধ করেছে সরকার।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close