ক্রীড়া ডেস্ক
এমবাপ্পের হাতে নতুনের কেতন
রাশিয়া বিশ্বকাপের নকআউট পর্বের প্রথম ম্যাচে মুখোমুখি হয়েছিল সাবেক দুই বিশ্বচ্যাম্পিয়ন আর্জেন্টিনা ও ফ্রান্স। একদিকে লিওনেল মেসি, হাভিয়ের মাশ্চেরানোদের মতো তারকাবহুল আর্জেন্টিনা। অন্যদিকে আঁতোয়ান গ্রিজম্যান, পল পগবাদের নিয়ে গড়া ফ্রান্স। কিন্তু ফুটবল বিধাতা এইদিন হয়তো অন্য এক স্ক্রিপ্ট লিখে রেখেছিল। সবাইকে ছাপিয়ে নতুনের কেতন উড়িয়ে বিশ্বমঞ্চের আলোটা নিজের দিকে টেনে নেন এক তরুণ তুর্কি। জোড়া গোল করে মেসিদের বিশ্বকাপ থেকে ছিটকে দেন কিলিয়ান এমবাপ্পে নামের সাড়ে ১৯ বছর বয়সী ফরওয়ার্ড।
এরপর থেকে মেসি, ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদোদের যোগ্য উত্তরসূরী হিসেবে ভাবা হচ্ছে এমবাপ্পেকে। তুলনা করা হচ্ছে কিংবদিন্ত পেলের সঙ্গে। ফ্রান্সকে রাশিয়া বিশ্বকাপের ফাইনালে তুলতে অন্যতম ভূমিকাটাও পালন করেছেন তিনি। ফাইনালেও একই রূপ দেখিয়েছেন এমবাপ্পে। লুঝনিকির ফাইনালে দলের হয়ে চতুর্থ গোলটি এসেছে তার পা থেকে। তাছাড়া একটি গোলেও পরোক্ষ ভূমিকা রেখেছেন এই পিএসজি ফরওয়ার্ড। এই নিয়ে প্রতিপক্ষকে গতি ও ড্রিবলিংয়ে কাবু করে ৭ ম্যাচে করেছেন করেছেন ৪ গোল। দুর্দান্ত খেলার স্বীকৃতিটাও পেয়েছেন তিনি। আসরের সেরা উদীয়মান তারকার পুরস্কার জিতেছেন এমবাপ্পে। গত বিশ্বকাপেই ২০ বছর বয়েসে এই পুরস্কারটি জিতেছিলেন তারই সতীর্থ পগবা।
১৯৫৮ সুইডেন বিশ্বকাপ থেকে চালু হওয়া এই পুরস্কারটি প্রথম হাতে উঠে বিশ্বসেরা ফুটবলার পেলের হাতে। সবচেয়ে কম বয়সী বিশ্বকাপজয়ী ও উদীয়মান ফুটবলার হিসেবে রেকর্ডটি এখনো অক্ষত আছে পেলের। ১৯৯৮ ফ্রান্স বিশ্বকাপে মাত্র ১৮ বছর বয়সে বেস্ট ইয়াং প্লেয়ার পুরস্কারটি জিতেছিলেন ইংল্যান্ডের মাইকেল ওয়েন। এবার ১৯ বছর বয়সে খেতাবটি জিতে কিংবদন্তিদের পাশে নাম লেখালেন এমবাপ্পে। রাশিয়া বিশ্বকাপ শুরুর আগে থেকে ‘উদীয়মান ও আলোচিত তারকা’ হওয়ার দৌড়ে এগিয়ে ছিলেন এমবাপ্পে। সেই দৌড়টা তিনি দেখালেন আর্জেন্টিনার বিপক্ষে। কাজানে সেদিন ঘণ্টায় ৩৭ কিলোমিটার বেগে দৌড়েছিলেন ফরাসিদের এই ‘ওয়ান্ডার বয়।
অভিষেক বিশ্বকাপে এসেই কয়েকটি রেকর্ড নিজের করে নিয়েছেন এমবাপ্পে। বিশ্বকাপে ফরাসিদের হয়ে সবচেয়ে কম বয়সী (১৯ বছর ১৮৩ দিন) গোলদাতা এখন তিনি। আগের রেকর্ডটি ছিল তার পূর্বসূরি ডেভিড টেজেগের। ২০ বছর ২৪৬ দিন বয়সে ১৯৯৮ বিশ্বকাপে গোল করেছিলেন তিনি। কিংবদিন্ত পেলের পরে ফাইনালে টিনেজার হিসেবে গোল পেয়েছেন এমবাপ্পে। ১৯৫৮ বিশ্বকাপে মাত্র ১৭ বছর ৮ মাস বয়সে ফাইনালে গোল করেছিলেন পেলে। ৬০ বছর পর তারই পুনরাবৃত্তি করেলেন এই পিএসজি ফরওয়ার্ড।
এমবাপ্পের পুরো নাম কিলিয়ান এমবাপ্পে লটিন। জন্মগ্রহণ করেছেন ফ্রান্সের রাজধানী প্যারিসে। ২০ ডিসেম্বর ১৯৯৮ বিশ্বকাপে। যে বছর ফ্রান্স ঘরের মাঠে প্রথম বিশ্বকাপ জিতে। তাই হয়তো বিশ্বকাপের সঙ্গে একটা যোগসূত্র আছে এমবাপ্পের। কারণ প্রথম বিশ্বকাপেই যে কিংবদন্তি পূর্বসূরিদের পাশে নাম লিখিয়ে ফেলেছেন এমবাপ্পে!
"