আমির হোসেন

  ১৫ জুলাই, ২০১৮

লড়াইটা মডরিচ-এমবাপ্পেরও

রাশিয়া বিশ্বকাপের ফাইনালে মুখোমুখি হবে ফ্রান্স ও ক্রোয়েশিয়া। ২০ বছর পর ফাইনালে এসেছে ফ্রান্স। প্রথমবারের মতো ফাইনালের মঞ্চে ক্রোয়েশিয়া। প্রথমবারের মতো তাদের সামনে হাতছানি শিরোপা জয়ের। এই লড়াইটা কেবল ফ্রান্স আর ক্রোয়েশিয়ার নয়। লড়াইটা ম্যান টু ম্যান। জার্সি নাম্বার টু জার্সি নাম্বারের। ফ্রান্সের ১০ নম্বর জার্সিধারী কিলিয়ান এমবাপ্পে যেমন ফরোয়ার্ড লাইনে গতিময় ফুটবল দিয়ে ছিঁড়ে-ফুড়ে ফেলেন প্রতিপক্ষের রক্ষণভাগ। তেমনি ক্রোয়েশিয়ার ১০ নম্বর জার্সিধারী লুকা মডরিচও মাঝ মাঠ থেকে গোলের রসদ জোগান ফরোয়ার্ড লাইনে। কখনো কখনো অবতীর্ণ হন ত্রাতার ভূমিকায়। গোল করতে ও গোল করাতে ভীষণ পারদর্শী তিনি। ক্রোয়েশিয়াকে প্রথমবারের মতো ফাইনালে তুলতে তার অবদান অনেক। রিয়াল মাদ্রিদের এই তারকা রাশিয়া বিশ্বকাপের গোল্ডেন বল জয়ের দৌড়ে এগিয়ে আছেন। ফাইনালের আগে চলুন চোখ বুলিয়ে আসা যাক এই দুই তারকার পারফরম্যান্সের দলিলে।

সেমিফাইনালে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে শুরুতেই পিছিয়ে পড়েছিল ক্রোয়েশিয়া। সেখান থেকে সমতা ফেরানোর পর দলকে প্রথমবারের মতো ফাইনালে তুলতে অতিরিক্ত সময়ে হওয়া গোলটিতে অবদান রাখেন লুকা মডরিচ। এবারের বিশ্বকাপে তার পারফরম্যান্স চোখে পড়েছে সবার। আর্জেন্টিনার বিপক্ষে গ্রুপ পর্বের ম্যাচে তার দূরপাল্লার বাঁকানো শট থেকে করা গোলটি মুগ্ধ করেছে সবাইকে। ৬ ম্যাচে তিনি ২টি গোল করার পাশাপাশি একটি গোলে অ্যাসিস্টও করেছেন। ছয় ম্যাচে তিনি ৫৩৫ বার বল টাচ করেছেন। পেছনে ফেলেছেন টিকিটাকা বিশেষজ্ঞ স্পেনের ইসকো ও সার্জিও রামোসকে। ৫৩৫ টাচের মধ্যে ২৮৯টি ছিল প্রতিপক্ষের অর্ধে। ১৪৭টি ছিল আক্রমণভাগে। বল হারিয়ে সেটা পুনরুদ্ধার করার দৌড়ে মডরিচ আছেন চতুর্থ স্থানে। তিনি ৪৮ বার বল হারিয়ে আবার পুনরুদ্ধার করেছেন। তিনি দলের জন্য ১৬টি সুযোগ তৈরি করেছেন। সবচেয়ে বেশি সুযোগ তৈরি করেছেন ব্রাজিলের নেইমার (২৩টি)। আর্জেন্টিনার বিপক্ষে অসাধারণ গোল ছাড়াও নাইজেরিয়ার বিপক্ষে পেনাল্টি থেকে গোল করে তিনি পূর্ণ ৩ পয়েন্ট এনে দিয়েছেন দলকে। তার নেতৃত্বে বিশ্বকাপে টানা ছয় ম্যাচে অপরাজিত আছে ক্রোয়েশিয়া।

এদিকে কিলিয়ান এমবাপ্পে গ্রুপ পর্বে খুব বেশি আলোচনায় ছিলেন না। আর্জেন্টিনার বিপক্ষে নকআউট পর্বের ম্যাচে তিনি পাদপ্রদীপের সবটুকু আলো কেড়ে নেন। গতিময় ফুটবল দিয়ে মুগ্ধ করেন ফুটবলবোদ্ধা ও দর্শকদের। ম্যাচের শুরুতেই মাঝ মাঠ থেকে বল নিয়ে এমন জোরে ছুটতে শুরু করেন যে আর্জেন্টিনার মার্কাস রোহোর সামনে তাকে ফেলে দেওয়া ছাড়া আর কোনো উপায় ছিল না। ডি-বক্সে মধ্যে রোহে তাকে ফেলে দিলে রেফারি পেনাল্টির বাঁশি বাজান। গ্রিজমান গোল করে শুরুতেই এগিয়ে নেয় দলকে। দ্বিতীয়ার্ধে তার অপ্রতিরোধ্য গতির কাছে আর্জেন্টিনার রক্ষণভাগ পর্যুদস্তু হয়। বল পায়ে তিনি ৪৫ কিলোমিটার গতিতে দৌড়াতে পারেন। এবারের বিশ্বকাপে এর আগে রোনালদো ৩২.৪ এবং আন্তে রেবিক সর্বোচ্চ ৩৪ কিলোমিটার গতিতে দৌড়েছিলেন। এবারের বিশ্বকাপে সেমিফাইনাল পর্যন্ত ৪৪৪ মিনিট খেলে সবচেয়ে বেশি ড্রিবলিং করেছেন এমবাপ্পে, ৫২ বার। নেইমার ৪৬ ও হ্যাজার্ড ৪৩ বার ড্রিবলিং করেছেন। গোল করেছেন ৩টি। আজকের ফাইনালে তিনি ভোগাতে পারেন ক্রোয়েশিয়াকে।

ফ্রান্স যখন বিশ্বকাপ জিতেছে তখন জন্মও হয়নি এমবাপ্পের। এবার তিনিই খেলছেন বিশ্বকাপ। শিরোপা ভিন্ন অন্য কিছু চিন্তা করছেন না তিনি। প্রথমবার বিশ্বকাপে অংশ নিয়েই শিরোপা জেতার সুযোগ রয়েছে তার সামনে। সেটা করতে পারলে ফ্রান্সের ফুটবল ইতিহাসে জায়গা করে নিবেন আফ্রিকান বংশোদ্ভূত এই ফুটবলার। অন্যদিকে প্রথমবারের মতো ফাইনালে এসে শিরোপা জিতে ক্রোয়েশিয়ার ফুটবল ইতিহাসে নিজের নামটি স্বর্ণাক্ষরে লিখে রাখার সুযোগ রয়েছে লুকা মডরিচের সামনে। শেষ পর্যন্ত কার হাতে ওঠে শিরোপা, কার হয় স্বপ্ন পূরণ দেখার বিষয়।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close
Error!: SQLSTATE[42S02]: Base table or view not found: 1146 Table 'protidin_sangbad.news_hits_counter_2020_04_07' doesn't exist
Error!: SQLSTATE[42S02]: Base table or view not found: 1146 Table 'protidin_sangbad.news_hits_counter_2020_04_07' doesn't exist