আদালত প্রতিবেদক

  ০৫ জুলাই, ২০১৮

মল্লিকা-মেহেদীর ডিভোর্স প্রসঙ্গে হাইকোর্ট

বাবা-মায়ের তালাকে ক্ষতি হচ্ছে শিশুদের

প্রত্যেক ডিভোর্সে (তালাক) শিশুরা ক্ষতিগ্রস্ত হয় আর তাদের সবার অনুভূতিও একই রকম বলে মন্তব্য করেছেন হাইকোর্ট। আদালত বলেছেন, বিচ্ছেদ হওয়া মা-বাবাকে একসঙ্গে কাছে পেতে দুই শিশু ধ্রুব ও লুব্ধ আদালতে যে অনুভূতি প্রকাশ করেছে, সেটা এই সমাজের প্রতি একটা বার্তা। গতকাল বুধবার বিচারপতি জে বি এম হাসান ও বিচারপতি মো. খায়রুল আলমের হাইকোর্ট বেঞ্চ থেকে এমন মন্তব্য আসে।

২০০২ সালে রাজশাহীর মেয়ে কামরুন্নাহার মল্লিকা এবং মাগুরার ছেলে মেহেদী হাসান বিয়ে করেন। মল্লিকা পেশায় স্কুল শিক্ষিকা আর মেহেদী বেসরকারি ব্যাংকের কর্মকর্তা। তারা দুই সন্তানের বাবা-মা। তবে একপর্যায়ে এসে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে মনোমালিন্যের সৃষ্টি হয়। গত বছরের মে মাসে নোটিশের মাধ্যমে বিয়ে বিচ্ছেদের প্রক্রিয়া শুরু করেন তারা। তবে এর কয়েক দিন আগে দুই সন্তানকে মাগুরায় গ্রামের বাড়ি পাঠিয়ে দেন মেহেদী। বড় ছেলের বয়স এখন ১২ আর ছোট ছেলের ৯ বছর।

বোনের তত্ত্বাবধানে মাগুরা জেলা শহরের একটি স্কুলে সন্তানদের ভর্তি করিয়ে দেয় মেহেদী। এর মধ্যে প্রায় এক বছরেরও বেশি দুই সন্তানের দেখা পাননি মা মল্লিকা। শেষ পর্যন্ত সন্তানদের নিজ হেফাজতে নেওয়ার জন্য হাইকোর্টে আবেদন করেন মা মল্লিকা। এ আবেদনের পর গত ২৯ মে শিশু দুটিকে হাইকোর্টে হাজির করতে সংশ্লিষ্ট পুলিশ ও বাবা মেহেদীকে নির্দেশ দেন আদালত। গত ২৫ জুন তাদের হাজির করতে বলা হয়। ২৫ জুন হাজির হলে দীর্ঘদিন পর মুখোমুখি হওয়ায় সন্তান ও মায়ের কান্নায় আদালতে এক হৃদয়বিদারক পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। ওই দৃশ্যে বিচারপতি, আইনজীবী ও উপস্থিত সাংবাদিকরাও আবেগপ্রবণ হন। একপর্যায়ে আদালতের জিজ্ঞাসার জবাবে বড় ছেলে বলেÑ ‘আমরা আর কিছু চাই না। বাবা-মাকে একত্রে দেখতে চাই।’

বড় ছেলের এমন বক্তব্যের পর বাবা-মাকে নিয়ে খাস কামরায় কথা বলেন আদালত। পরে আদেশে আদালত বলেন, ‘৪ জুলাই পর্যন্ত শিশু সন্তান দুটি মায়ের হেফাজতে থাকবে। তবে এই সময়ে পিতা শিশু দুটির দেখাশোনা করার অবারিত সুযোগ পাবেন। ওইদিন শিশু দুটিকে হাজির করার নির্দেশ দিয়ে বিষয়টি ওইদিন মূলতবি করা হয়।’

আদালতে মেহেদী হাসানের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী তাপস কান্তি বল। আর মল্লিকার পক্ষে শুনানিতে অংশ নেন ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল। আইনজীবী রুহুল কুদ্দুস কাজল গতকাল বলেন, ‘আজকে (বুধবার) আদালতে বাবা-মাসহ বাচ্চা দুটি উপস্থিত ছিলেন। আদালত আমাদের কাছ থেকে জানতে চেয়েছেন তাদের দুজনের পারিবারিক ও দাম্পত্য জীবন পুনরুদ্ধারের ক্ষেত্রে অগ্রগতি কত দূর। আমরা বলেছি যে, আর একটু সময় যদি আপনারা দেন। তাহলে আমি সন্তানের মায়ের পক্ষ থেকে বলেছি, মা ওপেন আছেন। বাবার পক্ষ থেকে তার আইনজীবীও বলেছেন, সন্তানের ভালোর জন্য তিনি মেনে নেবেন। আমাদের এ বক্তব্য আদালত শুনে আগামী ১ আগস্ট পরবর্তী তারিখ রেখেছেন।’

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close
Error!: SQLSTATE[42S02]: Base table or view not found: 1146 Table 'protidin_sangbad.news_hits_counter_2020_04_07' doesn't exist
Error!: SQLSTATE[42S02]: Base table or view not found: 1146 Table 'protidin_sangbad.news_hits_counter_2020_04_07' doesn't exist