আর্জেন্টিনার অগ্নিপরীক্ষা
আর্জেন্টিনা গত আসরের ফাইনালিস্ট। কিন্তু তাদের প্রথম ম্যাচটা দেখার পর মনে হচ্ছে না আর্জেন্টিনা দ্বিতীয় রাউন্ডে যেতে পারবে। তবে আমি আর্জেন্টিনার ভক্ত। আর্জেন্টিনা না থাকলে বিশ্বকাপেরই ক্ষতি। ব্রাজিল-আজেন্টিনা না থাকলে বাণিজ্যিকভাবেও ক্ষতি। সমর্থক হিসেবে বলব, আর্জেন্টিনা জেতার মতো দল। আর পেশাদারিত্বের দিক থেকে বলতে গেলে ক্রোয়েশিয়ার জন্য আর্জেন্টিনা ম্যাচটা খুব কঠিন। প্রথম ম্যাচ ড্র করায় চাপে আছে তারা। প্রথম ম্যাচে ক্রোয়েশিয়া জিতে আসায় ফুরফুরে মেজাজে আছে। আর্জেন্টিনার বিপক্ষে এক পয়েন্ট পেলেও মোটামুটি তাদের একটা অবস্থান তৈরি হয়ে যাবে। কিন্তু দ্বিতীয় রাউন্ডে যেতে চাইলে আর্জেন্টিনাকে জিততেই হবে। ম্যাচটা হারলে সেটা হবে বিপজ্জনক। সে ক্ষেত্রে শেষ ম্যাচ জিতলেও সমীকরণের মারপ্যাঁচে পড়তে হবে। কারণ শেষ ম্যাচ সব সময় সমীকরণের ওপর দাঁড়িয়ে থাকে। তাই আমি মনে করছি, এখন থেকেই আর্জেন্টিনার দ্বিতীয় রাউন্ড শুরু হয়ে গেছে। এই ম্যাচ জিতলেও তাদের শেষ ম্যাচের জন্য অপেক্ষা করতে হবে। তবে ক্রোয়েশিয়া ম্যাচটা আর্জেন্টিনার জন্য সহজ হবে না। আজ অগ্নিপরীক্ষা দিতে হবে মেসিদের।
বিশ্বকাপে আগে যারা হট ফেভারিট দল ছিল তারা প্রথম রাউন্ডেই ভালো একটা অবস্থান তৈরি করে ফেলত। দ্বিতীয় রাউন্ড মোটামুটি নিশ্চিত করে রাখত। কিন্তু এবারের বিশ্বকাপে প্রথম রাউন্ডের খেলা দেখে মনে হচ্ছে এবার পুরোটাই ভিন্ন। এবার যারা হট ফেভারিট দল তাদের প্রায় সবাই পয়েন্ট হারিয়েছে। ফ্রান্স ও ইংল্যান্ড জিতলেও তাদের বেশ কষ্ট হয়েছে। এই আসরে একমাত্র রাশিয়া ছাড়া কোনো দলই তেমন প্রভাব বিস্তার করে খেলতে পারেনি।
এদিক থেকে এবারের বিশ্বকাপটা আসলেই চমকপ্রদ। কারণ সবকটি দলই তাদের শুরুটা একইভাবে করেছে। কেউ সহজে জিততে পারেনি। কীভাবে খেললে আর্জেন্টিনাকে রুখে দেওয়া যাবে, সেই প্রস্তুতি নিয়েই কিন্তু আইসল্যান্ড মাঠে নেমেছিল এবং সেটা কাজেও দিয়েছে। ব্রাজিলকে আটকানোর কৌশল নিয়ে সুইজারল্যান্ড মাঠে নেমেছিল। সেখানে তারাও সাফল্য পেয়েছে।
আগের বিশ্বকাপ থেকে এবারের আসর অনেক গতিশীল। খেলার মান অনেক উঁচু। ব্যক্তিগতভাবে একমাত্র রোনালদো ভালো খেলছেন। আগের ম্যাচে হ্যাটট্রিক করেছেন। কাল নিজেদের দ্বিতীয় ম্যাচে গোল করে পর্তুগালকে জিতিয়েছেন। তার পারফরম্যান্স চোখে পড়ার মতোই।
দল হিসেবে স্পেন চমৎকার একটা দল। ভালো ফুটবল খেলে থাকলে একমাত্র স্পেনই পর্তুগালের সঙ্গে খেলেছে। ভুলের কারণে ওভাবে ডেথ বলে গোল হজম না করলে ম্যাচটা কিন্তু স্পেনই জিতত। সব মিলিয়ে প্রথম রাউন্ড খুবই শ্বাসরুদ্ধকর হয়েছে। এখন দ্বিতীয় রাউন্ডের ম্যাচ দেখার পর বোঝা যাবে কারা কারা নকআউট পর্বে যাবে। জার্মানি যদি পরের ম্যাচে হারে তারা কিন্তু শেষ ষোলোতে যেতে পারবে না। ব্রাজিল-আর্জেন্টিনার ক্ষেত্রেও কিন্তু একই অবস্থা হতে পারে।
"