বদরুল আলম মজুমদার

  ০৩ জুন, ২০১৮

বিএনপি তাকিয়ে তারেকের দিকে

গাজীপুরের পর অন্য তিন সিটি রাজশাহী, সিলেট ও বরিশালে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে ৩১ জুলাই। গাজীপুরেরও নির্বাচনের নতুন তারিখ চলতি মাসের ২৬ তারিখ। সেখানে বিএনপি মনোনীত প্রার্থী হাসান উদ্দিন সরকার ইতোমধ্যে নির্বাচনের মাঠে আছেন। ওইসব সিটির গত নির্বাচনে জয় পেয়েছিল বিএনপি। এবারও গতবারের বিজয়ীদের প্রার্থী করা হবে বলে মনে করছেন তৃণমূলের অনেকে। আবার অনেকে মনে করছেন খুলনা ও গাজীপুরের মতো নতুন প্রার্থী দেওয়া হবে। দলের পক্ষ থেকে এখনো কাউকে সবুজ সংকেত দেওয়া হয়নি। নেতারা বলছেন প্রার্থী নির্ধারণের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত দেবেন স্বয়ং তারেক রহমান। তাই আগাম কোনো কিছুই বলতে পারছেন না তারা। তবে তিন সিটিতে বিএনপি প্রার্থী বাছাইয়ের ক্ষেত্রে একটু ধীরেই এগোবে।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, তিন সিটির নির্বাচন নিয়ে বিএনপির নেতাদের আগের মতো আর আগ্রহ লক্ষ করা যাচ্ছে না। খুলনার অভিজ্ঞতার পর বিএনপি নির্বাচন কমিশনের ওপর আস্থা রাখতে পারছে না। নেতারা মনে করেন, সরকার যেভাবে চায় কমিশন তাই করছে। ভালো নির্বাচন করার আগ্রহ বা সমর্থ বর্তমান কমিশনের নেই। তাই দলটি পরবর্তী নির্বাচন নিয়ে নতুন ভাবনায় আছে। কমিশন খুলনার মতো আচরণ গাজীপুরেও করতে শুরু করেছে। খুলনার ডিআইজ ও গাজীপুরের এসপি পরিবর্তনের দাবি বিএনপি শুরু থেকেই করে আসছে। কমিশন এ ব্যাপারে কোনো উদ্যোগই নিচ্ছে না। খুলনার ডিআইজি সেখানকার নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থীর জয়ের ব্যাপারে বড় ভূমিকা পালন করেছে। গাজীপুরের এসপিও একই পথে হাঁটছেন বলে অভিযোগ বিএনপি নেতাদের।

এ বিষয়ে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশারফ হোসেন বলেন, গাজীপুরের পর পরবর্তী তিন সিটি নিয়ে চিন্তা করবে বিএনপি। আর প্রার্থী বিষয়ে আমরা খোঁজখবর রাখছি। তৃণমূলের বক্তব্য শুনছি। সব মিলিয়ে আমরা প্রার্থীর একটি সুপারিশ দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের কাছে উপস্থাপন করব। তিনিই আমাদের পরবর্তী নির্দেশনা দেবেন।

বিএনপি আগামী দিনের আন্দোলন সংগ্রামের কথা মাথায় রেখেই নির্বাচনগুলোতে অংশ নিতে চায়। তাই প্রার্থী বাছাইয়ের ক্ষেত্রেও জনপ্রিয় নেতারাই থাকবে পছন্দের তালিকায়। খুলনায় যেভাবে ভোটের বাক্স ভরা হয়েছে এভাবে বাকি সিটিতে যাতে করতে না পারে সেই রকম প্রার্থীই বিএনপি মনোনয়ন দিতে পারে। জানা যায়, খুলনায় বিএনপির অবস্থান বেশ শক্তিশালী হলেও সেখানের প্রার্থী ভোট কেন্দ্র নিয়ে কোনো ঝামেলায় জড়াতে রাজি ছিলেন না। কিন্তু এভাবে বিনা চ্যালেঞ্জে ছেড়ে দেওয়াটাও ঠিক হয়নি বলে মনে করে বিএনপির হাই কমান্ড। তাই ভোটের অধিকার ফিরিয়ে আনা এবং ভোটাদের ভোট কেন্দ্রে আনা থেকে শুরু করে মাঠ নিজেদের দখলে রাখতে সক্ষম এমন প্রার্থীই থাকবে বিএনপির পছন্দের তালিকায়।

এদিকে, বিএনপি নির্বাচনে অংশ নেওয়ার ব্যপারে খুব বেশি আগ্রহ না দেখালেও তফসিল ঘোষণার সংবাদে নড়েচড়ে বসেছেন সম্ভাব্য মেয়র প্রার্থীরা। বর্তমান মেয়র ও বিএনপি নেতা আরিফুল হক চৌধুরী এবারও সিলেট থেকে নির্বাচন করতে চান। এর বাইরে সিলেট মহানগর বিএনপির সভাপতি নাসিম হোসাইন, সেক্রেটারি বদরুজ্জামান সেলিম এবং সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক রেজাউল হাসান কয়েস লোদী চেষ্টা চালাচ্ছেন নির্বাচনে অংশ নিতে। তবে ২০ দলীয় জোটের শরিক জামায়াত ও খেলাফত মজলিসের প্রার্থীও মাঠে সরব রয়েছেন। জানা যায়, এবার সিলেট সিটিতে নির্বাচন করার ব্যাপারে অনড় জামায়াত। ঢাকা ও রাজশাহী সিটিতে ছাড় দিয়ে এবার সিলেটে তারা মাঠে নামতে চায়। তাই জামায়াতের শীর্ষ নেতারা জোর দিয়ে বলছেন, সিলেটে যেকোনো মূল্যে মেয়র পদে নির্বাচন করবেন তারা। সেক্ষেত্রে তাদের পছন্দের প্রার্থী জামায়াতের মহানগরের আমির এহসানুল মাহবুব যোবায়ের। ইতোমধ্যে জোরেশোরে সম্ভাব্য মেয়র প্রার্থী হিসেবে প্রচার প্রচারণা শুরু করেছেন সাবেক এই শিবির নেতা।

রাজশাহী সিটি করপোরেশন (রাসিক) এ বিএনপি তাদের প্রার্থী ঘোষণা না করলেও বর্তমান মেয়র মহানগর বিএনপির সভাপতি মোহাম্মদ মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুলের মনোনয়নের বিষয়টি অনেকটাই নিশ্চিত বলে শোনা যায়। তবে স্থানীয়ভাবে বিএনপির প্রার্থী বদলের গুঞ্জন থাকলেও রাজশাহীতে বুলবুলের বাইরে কারো নাম শোনা যাচ্ছে না। বিএনপির নেতৃত্বাধীন জোটের শরিক জামায়াতে ইসলামী ভাবাচ্ছে তাদের। তবে দলটি সিলেটের মনোনয়ন পেলে ছাড় দিতে পারে রাজশাহীতে।

বরিশাল সিটিতে বর্তমান মেয়র আহসান হাবিব কামাল আবারও বিএনপি থেকে প্রার্থী হতে চান। এর বাইরে বিএনপির কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক বিলকিস জাহান শিরিন, জেলা দক্ষিণ বিএনপির সভাপতি এবায়দুল হক চান, ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক আফরোজা খানম নাসরিন সম্ভাব্য মেয়র প্রার্থী হিসেবে প্রচারণা চালাচ্ছেন দীর্ঘদিন ধরে। তবে সবাইকে ছাপিয়ে আলোচনার শীর্ষে দলের যুগ্ম মহাসচিব ও মহানগর সভাপতি মজিবর রহমান সরোয়ার এবার এ সিটিতে নির্বাচন করতে পারেন বলে জানায় বিএনপির একটি নির্ভরযোগ্য সূত্র।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close
Error!: SQLSTATE[42S02]: Base table or view not found: 1146 Table 'protidin_sangbad.news_hits_counter_2020_04_07' doesn't exist
Error!: SQLSTATE[42S02]: Base table or view not found: 1146 Table 'protidin_sangbad.news_hits_counter_2020_04_07' doesn't exist