reporterঅনলাইন ডেস্ক
  ২৭ এপ্রিল, ২০২৪

কৃষিতে আধুনিক যন্ত্রপাতি ব্যবহার আরো বাড়াতে হবে

দেশে নগরায়ণ ও ঘরবাড়ি তৈরির কারণে প্রতিনিয়তই কমছে কৃষিজমি। এছাড়া জনসংখ্যা বৃদ্ধিসহ জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে বন্যা, খরা, লবণাক্ততা, বৈরী আবহাওয়া ও প্রাকৃতিক দুর্যোগে খাদ্যশস্য উৎপাদন নানাভাবে ব্যাহত হচ্ছে। তারপরও কৃষিতে বাংলাদেশের ঈর্ষণীয় সাফল্য দেখিয়েছে শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগ সরকার।

খাদ্যশস্য উৎপাদনে বাংলাদেশ এখন বিশ্বে উদাহরণ। ধান, গম ও ভুট্টা বিশ্বের গড় উৎপাদনকে পেছনে ফেলে ক্রমেই এগিয়ে চলছে বাংলাদেশ। সবজি উৎপাদনে তৃতীয় আর চাল ও মাছ উৎপাদনে বাংলাদেশ এখন বিশ্বে চতুর্থ অবস্থানে। বন্যা, খরা, লবণাক্ততা ও দুর্যোগ সহিষ্ণু শস্যের জাত উদ্ভাবনেও শীর্ষে বাংলাদেশের নাম। সরকার কৃষকদের সম্ভাব্য সব রকম উপকরণ সহায়তা দিয়ে যাচ্ছে। বর্তমান সরকারের প্রবর্তিত কৃষি উপকরণ সহায়তা কার্ড দেশে ও বিদেশে বিপুলভাবে প্রশংসিত হয়েছে। বাংলাদেশের অনুসরণে ভারত সরকার কৃষি উপকরণ সহায়তা কার্ড প্রদানের উদ্যোগ নিয়েছে। সরকারের যুগোপোযোগী পরিকল্পনা, পরিশ্রমী কৃষক এবং মেধাবী কৃষি বিজ্ঞানী ও সম্প্রসারণবিদদের যৌথ প্রয়াসেই এ সাফল্য। স্বাধীনতার পর দেশে প্রতি হেক্টর জমিতে দুই টন চাল উৎপাদিত হতো। এখন হেক্টরপ্রতি উৎপাদন হচ্ছে চার টনেরও বেশি। ধান ধরে হিসাব করলে তা ৬ টন। তা ছাড়া হেক্টরপ্রতি ভুট্টা উৎপাদনে বিশ্বে গড় ৫ দশমিক ১২ টন। বাংলাদেশে এ হার ৬ দশমিক ৯৮ টন। খাদ্যশস্যে প্রতি হেক্টরে ১০ দশমিক ৩৪ টন উৎপাদন করে বাংলাদেশের ওপরে রয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। বাংলাদেশের পরে রয়েছে আর্জেন্টিনা, চীন ও ব্রাজিল। আর এভাবেই প্রধান খাদ্যশস্যের উৎপাদন বাড়ানোর ক্ষেত্রে বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় দেশের তালিকায় উঠে এসেছে বাংলাদেশ।

আধুনিক যন্ত্রপাতির ব্যবহারে দেশের কৃষি খাতে এসেছে বৈপ্লœবিক পরিবর্তন। এসব যন্ত্রের ব্যবহারের ফলে কয়েকগুণ বেড়েছে উৎপাদন। আধুনিক প্রযুক্তির ট্রাক্টর ও পাওয়ার টিলার, জমি আবাদ, নিড়ানি হতে শুরু করে জমিতে সেচ দিতে ইঞ্জিনচালিত শ্যালো মেশিন ও বৈদ্যুতিক পাম্প, ড্রাম সিডার (বীজ বপন যন্ত্র), ধান কাটার কম্বাইন হারভেস্টার মেশিন, পাওয়ার থ্রেসার (পায়ে চালিত মাড়াই যন্ত্র), গ্রেডিং মেশিন, গুটি ইউরিয়া সারসহ সবকিছুতেই চলছে আধুনিক যন্ত্রের ব্যবহার। এসব যন্ত্রের ব্যবহারের ফলে কৃষকের কমেছে শ্রম ও উৎপাদন ব্যয়। আধুনিক প্রযুক্তি, সময়োপযোগী কৃষিনীতি আর কৃষকদের অক্লান্ত পরিশ্রমে বদলে গেছে দেশের কৃষির চিত্র। কৃষিকে বাংলাদেশের অর্থনীতির মূল চালিকাশক্তি হিসেবে উল্লেখ করেছেন স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায়মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম। গত বৃহস্পতিবার রাজধানীতে আন্তর্জাতিক কৃষি প্রযুক্তি মেলার উদ্বোধন অনুষ্ঠানে তিনি বলেছেন, ‘দেশকে এগিয়ে নিতে কৃষির আধুনিকায়ন ছাড়া বিকল্প ব্যবস্থা নেই। উন্নত বিশ্বে কৃষির সর্বস্তরে আধুনিক প্রযুক্তির ছোঁয়া লাগলেও আমাদের দেশের কৃষি খাতে; বিশেষ করে খামার যান্ত্রিকীকরণে এখনো অনেক উন্নতির সুযোগ রয়েছে।’ ওই অনুষ্ঠানে মন্ত্রী আরো বলেন, ‘কৃষি ও শিল্প খাতকে দেশের অর্থনীতির জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। এ দুটি খাতে আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার হলে দেশে সেবা খাতের বিকাশ হবে। বাংলাদেশের কৃষি ও কৃষকের উন্নয়ন এবং এর উৎপাদনশীলতা ও ফসলের নিবিড়তা বৃদ্ধিতে কাজ করতে হবে।’

প্রচলিত সনাতন ধারার কৃষি প্রযুক্তির পরিবর্তনে খামার যান্ত্রিকীকরণের পাশাপাশি উন্নত প্রযুক্তি ও কলাকৌশলের সমন্বয় একান্ত প্রয়োজন। জনসংখ্যা বৃদ্ধির ফলে খাদ্যের চাহিদা বাড়ছে। আর সে কারণেই অধিক জনসংখ্যার চাহিদা মেটাতে কৃষিতে আধুনিক যন্ত্রপাতি ব্যবহার আরো বাড়াতে হবে।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close