reporterঅনলাইন ডেস্ক
  ০৬ মে, ২০২৪

সমস্যার বেড়াজাল থেকে মুক্ত হোক রেলওয়ে

বাংলাদেশ রেলওয়ে সরকারি মালিকানা ও সরকার পরিচালিত দেশের একটি মুখ্য পরিবহন সংস্থা। দেশে গণপরিবহনের সবচেয়ে সুবিধাজনক ও কার্যকর মাধ্যম হতে পারত এই রেল পরিবহন। কিন্তু দুঃখজনকভাবে তা হয়নি। কেন হয়নি, তা নিয়ে নানা ধরনের কথাবার্তা শোনা যায়। কিন্তু সমস্যাগুলো সঠিকভাবে চিহ্নিত করে সমাধানের কার্যকর উদ্যোগ নেওয়া হয় না, যা কিছু করার চেষ্টা করা হয়, তা-ও ফলপ্রসূ হয় না। তাই তো আমাদের রেল পরিবহনব্যবস্থা চিরকালই রুগ্ণ রয়ে গেল।

ব্রিটিশ শাসনামল থেকেই ট্রেন ব্যবস্থাপনা নিয়ে রয়েছে নানা প্রশ্ন। স্বাধীনতার পর থেকে রেল যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নে কম টাকা বিনিয়োগ করা হয়নি। বর্তমান সরকারের আমলেও অভূতপূর্ব উন্নয়ন হয়েছে রেলের। তার পরও রেল ছুটে চলেছে পেছনের দিকেই। বর্তমান বাংলাদেশ বিশ্বের কাছে উন্নয়নের সিঁড়িতে থাকলেও উন্নয়ন বা পরিবর্তন হচ্ছে না ট্রেন ব্যবস্থাপনা। রেলওয়ে এখনো বহু সমস্যায় জর্জরিত। রেলের লক্ষ্যে পৌঁছানোর পথে প্রধান বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে টিকিট কালোবাজারি, দায়িত্বপ্রাপ্তদের দুর্নীতি, মন্ত্রণালয়ের নির্দেশ না মানা, প্রকল্পের কাজে গাফিলতি, দায়িত্বে অবহেলা, শিডিউল বিপর্যয় এবং সিগন্যালিং সমস্যা। এ অবস্থায় রেলপথ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির প্রথম সভায় নানা অসন্তোষ ও ক্ষোভ ঝেড়েছেন কমিটির সভাপতিসহ কয়েকজন সদস্য, যারা একাদশ সংসদেও এ কমিটির দায়িত্বে ছিলেন। তারা রেলের লাভজনক না হওয়ার পেছনে অনিয়ম, দুর্নীতি ও স্বজনপ্রীতিকে দায়ী করেছেন। ফলে বিএনপি-জামায়াতের সময়ে তলানিতে পৌঁছানো রেলকে টেনে তুলতে বর্তমান সরকারের নানামুখী উদ্যোগেও লাভজনক হচ্ছে না এই খাতটি। রেল সংসদীয় কমিটি বলছে, নানা সমস্যা নিরসন করা সম্ভব হলে রেলকে লাভজনক করে বছরে আট হাজার কোটি টাকা আয় করা সম্ভব।

প্রতিদিনের সংবাদে গতকাল রবিবার প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে বলা হয়, ট্রেন যথানিয়মে পরিচালনা, ট্রেনের ইঞ্জিনে সিসি ক্যামেরা লাগানো এবং ঢাকা-চট্টগ্রাম স্টেশনে স্ক্যানিং মেশিন বসানোর জন্য গত ১০ বছর আগে সিদ্ধান্ত হয়। দীর্ঘ সময় পেরিয়েছে অথচ সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন হয়নি। এ ধরনের সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে রেল কর্তৃপক্ষের গড়িমসির অন্যতম কারণ অবৈধ বাণিজ্য বন্ধ হওয়া। কারণ স্ক্যানিং মেশিন বা সিসি ক্যামেরা বসালে বিভিন্ন অবৈধ মালামাল, যেমন- ফেনসিডিল, ইয়াবা, স্বর্ণ চোরাচালান নির্বিঘ্নে সম্ভব নয়। এতে দায়িত্বরত কর্মকর্তাদের উপরি আয় কমে যাবে। ফলে সংসদীয় কমিটি কিংবা সরকারের সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে গড়িমসি করে কর্তৃপক্ষ। এ ছাড়া বিগত বিএনপি সরকারের আমলে কিছু বাসমালিকদের সুবিধা দিতে রেলওয়েকে ধ্বংসের দিকে ঠেলে দেওয়া হয়েছিল। ঠিকাদারদের সুবিধার জন্য রেলের আউটসোর্সিং কিছু জনবল নিয়োগ দেওয়া হয় অথচ তাদের কোনো কাজও নেই। এভাবেই বিগত সরকারের আমলে রেলওয়ে নানা সমস্যায় জর্জরিত হয়ে পড়ে।

প্রতি বছর রেলের বরাদ্দ বাড়লেও বাড়ছে না ট্রেনের গতি এবং কাঙ্ক্ষিত সেবার মান। রেলের পেছনে ব্যয় করা উচিত পরিকল্পিতভাবে। সেবার সার্বিক মান উন্নত করার মাধ্যমে আরো বেশি যাত্রী আকর্ষণ ও আয় বাড়ানোই হওয়া উচিত প্রধান লক্ষ্য। আমাদের প্রত্যাশা থাকবে, সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ রেলওয়ের সমস্যাগুলো দূর করে একে লাভজনক করতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেবে।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close