reporterঅনলাইন ডেস্ক
  ০৫ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪

ওষুধের বাজার নিয়ন্ত্রণ জরুরি

দেশে সব ধরনের নিত্যপণ্যের দাম লাগামহীন। দাম বাড়ার বাড়তি প্রতিযোগিতার চাপে পিষ্ট সাধারণ মানুষ। মধ্য বা নিম্নবিত্তের জীবনযাত্রার ব্যয় মেটাতে নাভিশ্বাস অবস্থা। এমনিতেই দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিতে হিমশিম খেতে হচ্ছে মানুষকে, তারপর আবার ওষুধের দাম বাড়তি। এ যেন মড়ার উপর খাঁড়ার ঘা। এখন অনেকেরই খরচের বড় অংশ ব্যয় হয় ওষুধের পেছনে। করোনা মহামারির পর ওষুধ ভেদে বড় ব্যবধানে দাম বেড়েছে। এরপর ধাপে ধাপে ঘোষণা ছাড়াই বাড়ছে ওষুধের দাম। এতে বিপাকে পড়েছে সাধারণ মানুষ।

ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরের তথ্য মতে, অতি প্রয়োজনীয় ওষুধের দাম ২ বছরে ১০০ থেকে ১৪০ শতাংশ বেড়েছে। গত ছয় মাসে দেশের শীর্ষ ৬ কোম্পানি ২৩৪টি জীবনরক্ষাকারী ওষুধের দাম ১০ থেকে ৫০ শতাংশ পর্যন্ত বাড়িয়েছে। গত এক মাসের ব্যবধানে আবারও ওষুধের দাম বেড়েছে ৩৫ থেকে ৪০ শতাংশ। ২০২৪ সালের শুরুতেই নতুন করে ওষুধের দাম বাড়ানোর ঘোষণা দিয়েছে এরিস্টোফার্মা, এসিআই ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেড। ঘোষণা ছাড়াই দাম বেড়েছে ইনসেপ্টা লিমিটেডের বেশ কিছু ওষুধের। এসব কোম্পানির শীর্ষে ছিল অপসোনিন ফার্মা লিমিটেড। এই কোম্পানির ৫২টি ওষুধের দাম সর্বোচ্চ ৫০ শতাংশ বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ৩৭ শতাংশ বাড়ে ইনসেপ্টা ফার্মাসিউটিক্যাস লিমিটেডের ৪৭টির। ৩৩ শতাংশ পর্যন্ত বাড়ে এসকেএফ ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেডের ৪৬টির। স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেডের ৩৯টির দাম ২৮ শতাংশ পর্যন্ত বাড়ে। সবশেষ নতুন করে দাম বাড়ানোর ঘোষণা দিয়েছে দুই কোম্পানি। লিভার, হৃদরোগ, হাঁপানি এবং গ্যাস্ট্রিকসহ জীবন রক্ষাকারী অধিকাংশ ওষুধের দাম বেড়েছে। বাদ যায়নি জ্বর-সর্দির ট্যাবলেট-ক্যাপসুলও।

দেশে মানুষের চিকিৎসা বাবদ খরচের বড় অংশই ওষুধের পেছনে ব্যয় হয়, সেখানে ওষুধ ভেদে বড় ব্যবধানে দাম বাড়ায় বিপাকে সাধারণ মানুষ। এভাবে ওষুধের দাম বাড়তে থাকলে চিকিৎসা খাত বড় সংকটে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে। দফায় দফায় ওষুধের মূল্যবৃদ্ধি যৌক্তিক কি না সেটা ভেবে দেখা প্রয়োজন। দাম বৃদ্ধি কাঙ্ক্ষিত নয়। ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তর শুধু কয়েকটি ওষুধের দাম বাড়াতে পারে। ওষুধের দাম মাত্রারিক্ত বাড়ানো কোনোভাবেই কাম্য নয়। মানুষের আয়ের বড় একটি অংশ চলে যায় চিকিৎসা বাবদ। এর সিংহভাগ ব্যয় হয় ওষুধের পেছনে। এরপর যদি ব্যয়ের পরিমাণ আরো বেড়ে যায়, তাহলে পরিস্থিতি কোন দিকে মোড় নিতে পারে তা বলার অপেক্ষা রাখে না। নিম্ন আয়ের সাধারণ মানুষের কথা ভেবে এ বিষয়ে সরকারের উচ্চপর্যায়ে বর্তমানের ওষুধ মূল্য পুনর্বিবেচনা করা প্রয়োজন। মানুষের জীবনের সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িত এই চিকিৎসা উপকরণের বিষয়ে সমন্বিত এবং সুচিন্তিত সিদ্ধান্ত নেওয়া দরকার। অবশ্যই প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর কথা ভাবতে হবে। দেশের কোটি কোটি মানুষের জীবন নিয়ে হুটহাট কোনো সিদ্ধান্ত চাপিয়ে দেওয়া ঠিক হবে না। বিভিন্ন ওষুধ কোম্পানি এবং ঔষধ প্রশাসনের কর্তাব্যক্তিদের অনতিবিলম্বে এমন সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা করা দরকার।

দেশের ওষুধের বাজার নিয়ন্ত্রণ সময়ের দাবি। ওষুধের বাজার নিয়ন্ত্রণ হলেই শুধু দেশের সাধারণ মানুষ প্রয়োজনীয় ওষুধের চাহিদা মেটাতে সক্ষম হবে এবং সুস্থভাবে বেঁচে থাকতে পারবে। এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ করবে- এটাই আমাদের প্রত্যাশা।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close