আবদিম মুনিব, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়

  ১৯ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪

তীব্র শীতে কুহেলিকা উৎসবে

অনার্সের পরীক্ষা শেষ। ডিপার্টমেন্টের ছুটিতে সবাই বাসায় চলে যাচ্ছে। আমিও চলে আসছি। এবার ছুটি মোটামুটি লম্বা। বাসায় বসেই ভাবছিলাম কবে ক্যাম্পাসে ফিরব! দেখতে দেখতে ছুটি শেষ, আবার সবাই মিলে ক্যাম্পাস মাতিয়ে রাখতে যথাসময়ে চলে এলাম। কিন্তু শীত যেন কুষ্টিয়ায় একটু বেশিই এবার। ক্যাম্পাসে আসার পর রাতে ইবিয়ান গ্রুপে একটা ব্যানার পোস্ট চোখে পড়ল। মনোযোগ দিয়ে পড়লাম। দেখলাম ইবির সামাজিক ও পরিবেশবাদী সংগঠন অভয়ারণ্যের আয়োজনে তিন দিনব্যাপী দ্বিতীয়বারের মতো বটতলায় কুহেলিকা উৎসব অনুষ্ঠিত হবে। আসলে ক্যাম্পাসে এসে রুটিন মেনে ক্লাস, পড়াশোনা আর প্যারাময় দিন কাটছিল আমাদের। এমন একটা অনুষ্ঠান আমরা মনে মনে চাচ্ছিলাম। উৎসবের দিন ঘনিয়ে এলো। পরের দিন ক্লাস শেষ করে আমরা চলে এলাম বটতলায়। এসে দেখি ছোট ছোট স্টল আর মঞ্চ সাজানো এবং লোকজন আসতে লাগল। পিঠাপুলি, বইয়ের দোকান, শাড়ি-পাঞ্জাবির স্টলও আছে। আমি আলামীন, মেঘলাসহ অন্য বন্ধুরা মিলে ঘুরে ঘুরে দেখছি মেলা। এরই মধ্যে দেখতে পেলাম। বড় একটা চিঠির বাক্স। চারপাশে মানুষজন চিঠি লিখছে আর বাক্সের ভেতরে ফেলছে।

এ বিষয়টা ভালো লাগছে সবার একটু বেশিই। কেননা এই যান্ত্রিকযুগেও চিঠির প্রচলন এই মেলায় দেখে সবাই কমবেশি লিখছে। অভয়ারণ্যের সদস্যরা এ চিঠি পৌঁছে দেবেন প্রাপকের কাছে। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে মেলাও জমে উঠছে। আমরা ‘আগে এদিকে আসুন’ এই নামের পিঠার স্টলে গিয়ে পিঠাপুলি কিনে খেলাম। বিল কে দেবে এ নিয়ে লাগল ঠেলাঠেলি। আলামীন বলল তুই দিবি। পরে বিল দিলাম। এভাবে আমরা অনুষ্ঠান দেখছিলাম। কিছুক্ষণ পর ভিসি স্যার মেলা দেখতে এলেন।

এদিকে শেখপাড়া থেকেও লোকজন আসতে লাগল। হই-চই, খাইলেই পটবে, বই তরণী, চা-ওয়ালি, পৌষালসহ ৩২টি স্টল রয়েছে এ মেলায়। মঞ্চে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় ডিবেটিং সোসাইটির রম্য বিতর্ক অনুষ্ঠান শুরু হয়েছে। এরপর আবৃত্তি আবৃত্তির সদস্যরা আবৃত্তি করলেন এবং মিউজিক অ্যাসোসিয়েশনের সদস্যরা গান পরিবেশন করলেন। আমরা শুনছিলাম। কিছুক্ষণ পর দেখতে পেলাম সংবাদকর্মীরা চলে এসেছেন এবং মেলার দৃশ্য ক্যামেরায় ধারণ করতে লাগলেন। শিক্ষার্থীদের অনুভূতি নিচ্ছে।

মেলায় শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন সাজে সজ্জিত হয়ে এসেছে। কেউ পাঞ্জাবি, কেউ শাড়ি পরা। উৎসব উপলক্ষে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের ফটোগ্রাফিক সোসাইটির কর্মীরা সবার ছবি বিনামূল্যে তুলে দিলেন। আমি আলামীন, মেঘলাসহ সবাই আবীর ভাইয়ের ক্যামেরায় বন্দি হলাম। মঞ্চে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় ড্যান্স অ্যাসোসিয়েশনের সদস্যদের মনোমুগ্ধকর নৃত্যও হচ্ছে। নবীন ব্যাচ সংবর্ত-৩৬ এবং চারুকলা বিভাগের শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণ ছিল। মেলায় রিদিতাও হাজির। আমরা ওকে পেয়ে খুশি। সবাই মিলে আরো এক প্যাক ঘুরতে লাগলাম স্টলে। কাঠের দৈনন্দিন ব্যবহার্য সামগ্রী দেখতে লাগলাম। বেলা গড়াতে লাগল। মঞ্চে মাইম একশন সংগঠনের মূকাভিনয় দেখলাম। এরপর ফেরার পালা। কুহেলিকা উৎসবের মেইনগেটের সামনে দাঁড়িয়ে আমরা বিভিন্ন পোজে একাকী এবং গ্রুপ ছবি তুলে চলে এলাম যার যার হলে। সত্যিই অভয়ারণ্যের এই দ্বিতীয়বারের মতো এই কুহেলিকা অনুষ্ঠান মনোরম ছিল। এমন অনুষ্ঠানের ধারাবাহিকতা বজায় থাকুক।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close