আতিকুর রহমান, ইবি

  ১৭ জানুয়ারি, ২০২৪

শিক্ষার আলো ছড়াচ্ছে ফুলকলি একাডেমি

নরসিংদী শহর থেকে প্রায় ৮ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত আলোক বালী ইউনিয়ন। মেঘনা নদীর মাঝে জেগে উঠা একটা ভূখণ্ডের নাম আলোক বালী। শহরের সাথে যোগাযোগের একমাত্র মাধ্যম হলো জলপথ। জরুরি কোনো কাজে শহরে যেতে হলে অনেকে স্পিডবোট ব্যবহার করে থাকে। বর্তমান সরকারের ডিজিটাল সুযোগ সুবিধা থেকে বঞ্চিতই বলা যায়। এই এলাকায় বিদ্যুতের সংযোগ এসেছে বেশিদিন হয় নাই। শিক্ষা, চিকিৎসার মতো মৌলিক অধিকার থেকেও বঞ্চিত ইউনিয়নবাসি। যোগাযোগ ব্যবস্থার বেহাল দশা’কে দায়ী করে মানসম্মত কোনো শিক্ষক এমন প্রত্যন্ত অঞ্চলে আসতে চায় না। ফলে সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোর অবস্থা হাঁটুভাঙাই বলা যায়।

এমন বৈরী পরিবেশে ভবিষ্যৎ প্রজন্মের ধারক বাহক শিশুদের মাঝে মানসম্মত শিক্ষার আলো ছড়াচ্ছে আলোক বালী ফুলকলি একাডেমি। একদল দক্ষ ও শিক্ষিত মানুষের সমন্বয়ে গঠিত হয়েছে ফুলকলি একাডেমি পরিচালনা পরিষদ। যোগ্য ও মানসম্মত শিক্ষকদের মাধ্যমে পাঠদান করানো হয়। সব শিক্ষক স্থানীয় হওয়ার কারণে দীর্ঘসময় শিক্ষার্থীদের পিছনে ব্যয় করতে পারে। শিক্ষার মান যাচাই করার জন্য সাপ্তাহিক, মাসিক পরীক্ষার সঙ্গে সঙ্গে শিক্ষার্থীদের বাড়িতে গিয়ে খোঁজ খবর নেওয়া হয়। ফলে ফুলকলি একাডেমি ইতোমধ্যে ঈর্ষণীয় সাফল্য অর্জন করেছে।

এ ব্যাপারে ফুলকলি একাডেমির পরিচালনা পরিষদের সদস্য হুমায়ুন কবির বলেন, ফুলকলি একাডেমি গ্রামের গরিব মানুষের সন্তানদের সুশিক্ষিত করতে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। নামেমাত্র অর্থের মাধ্যমে গুণগত শিক্ষাপ্রদান করতে বদ্ধপরিকর। ফুলকলি একাডেমি প্রাইভেট প্রতিষ্ঠান হওয়া সত্যেও প্রতিষ্ঠানটির মূল লক্ষ হলো, গরিব মানুষের সন্তানদের মানসম্মত শিক্ষা প্রদান করা। ইতোমধ্যে প্রতিষ্ঠানটি অত্র এলাকায় সুনাম কুড়িয়েছে। শিক্ষার্থীদের দেশপ্রেমে উজ্জীবিত করতে পড়াশোনার পাশাপাশি বিভিন্ন জাতীয় দিবস পালন করে থাকে।

পরিচালনা পরিষদের অন্যতম সদস্য শফিকুল ইসলাম বলেন, আলোকবালী ফুলকলি একাডেমি প্রান্তিক মধ্যবিত্ত, নিম্নমধ্যবিত্ত ও শ্রমজীবী মানুষের সন্তানদের আলোর পথে দূরন্ত দুর্বার দিগি¦জয়ী সৈনিক হিসেবে গড়ে তোলার জন্য প্রতিষ্ঠাকাল থেকে আজ অব্দি নিরন্তর কাজ করে যাচ্ছে। শিক্ষার মৌলিক দর্শনের প্রতি লক্ষ্য রেখে আমরা একটি স্বাপ্নিক, মানবিক, নৈতিক গুণসম্পন্ন প্রজন্ম প্রস্তুত করতে প্রতিনিয়ত চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। সফলতা ব্যর্থতার নিক্তিতে নিজেদের না চড়িয়ে আমরা শুধু সবার সহযোগিতায় পরিবর্তনের অঙ্গীকার বাস্তবায়নে কাজ করে যেতে চাই। আমরা স্বপ্ন দেখি আমাদের চরাঞ্চলের সন্তানেরা একদিন সব বেড়াজাল অতিক্রম করে সম্ভাবনার সোনালি দিগন্তে পৌঁছুবে, জ্ঞানে-গুণে, মেধায়-মননে হবে বিশ্ব নাগরিক। একবিংশ শতাব্দীর সব চ্যালেঞ্জকে মোকাবিলা করে কিশোর-কিশোরী তরুণ প্রাণ দূরন্ত বলাকারা ছুটে যাবে আলোর অসীম দিগন্তে। সিন্দবাদের নাবিকের মতো তারাই হবে আমাদের আগামীর অগ্রপথিক, যারা নেতৃত্ব দিবে স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে।

প্রধান শিক্ষক আবু কাউসার মিয়া বলেন, ফুলকলি একাডেমি স্মার্ট বাংলাদেশের স্মার্ট নাগরিক তৈরি করতে নিরলসভাবে কাজ করছে। একাডেমিক পড়াশোনার সঙ্গে সঙ্গে নৈতিক শিক্ষায় শিক্ষিত করে দেশ ও সমাজের দক্ষ জনবল তৈরি করতে কাজ করছে।

হাতের নাগালে নামমাত্র অর্থের বিনিময়ে মানসম্মত শিক্ষা পেয়ে পিতামাতার পাশাপাশি এলাকার সচেতন মানুষ আনন্দ প্রকাশ করেছে। ফলে স্থানীয়ভাবে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে আলোক বালী ফুলকলি একাডেমি।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close