মুহম্মদ রাসেল হাসান, সোহরাওয়ার্দী কলেজ

  ০৬ মে, ২০২৪

সোহরাওয়ার্দী কলেজে বসন্তবরণ

বসন্ত মানেই তো প্রাণোচ্ছ্বাস আর রঙের ছড়াছড়ি। আর রং কি শুধু এ দেশের মানুষের পোশাক আর প্রকৃতিতেই হয়? রং এ অঞ্চলের পিঠাতেও হয়। এ দেশের সংস্কৃতির সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে বাহারি রকমের পিঠা। আর এগুলোর রয়েছে বিচিত্র সব নাম। শনিবার (১০ মার্চ) রাজধানীর লক্ষ্মীবাজারে সরকারি শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজে ঐতিহ্যবাহী এসব পিঠাকে তুলে ধরার মধ্য দিয়েই আয়োজিত হয় বসন্তবরণ।

সকাল ১০টার ভেতরেই লাল ইটের ক্যাম্পাসটি ছেয়ে যায় রং-বেরঙের ঘুড়ি আর বেলুন দিয়ে। ধানের খড় দিয়ে বানানো হয় ছবি তোলার নান্দনিক ‘ফটোজোনও’। ছেলেরা বর্ণিল পাঞ্জাবি আর মেয়েরা বাসন্তী শাড়ির সঙ্গে রেশমি চুড়িসহ বিচিত্র সাজে সজ্জিত হয়ে আসে। শুরুতেই ফটোজোনে ছবি তোলার ধুম পড়ে। এরপর রবীন্দ্রনাথের ‘ফাগুন হাওয়ায় হাওয়ায় করেছি যে দান’র মতোই সবাই আপনহারা আর বাঁধন ছেঁড়া প্রাণ বসন্তকে সমর্পণ করে।

উৎসবটি নিয়ে বাংলা বিভাগের শিক্ষার্থী অদিতি শামসী বলেন, ‘ঋতুরাজ বসন্তকে বরণে প্রকৃতির সঙ্গে আমাদের সরকারি শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজের ক্যাম্পাস অপূর্ব সাজে সেজে উঠেছে। আমার খুবই ভালো লাগছে।’

ব্যস্ততম এই শহরের যান্ত্রিকতার মধ্যে একটু প্রশান্তি আর পড়াশোনার একঘেঁয়ে কাটাতে সব বিভাগের শিক্ষার্থীরা উৎসবে যোগ দেয়।

‘আসেন ভাই বসে যান, আরাম করে পিঠা খান’ প্রতিবাদ্য শীর্ষক পিঠা উৎসব ও বসন্তবরণ উৎসবটি আয়োজিত হয় বাংলা বিভাগ, হিসাববিজ্ঞান বিভাগ ও রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থীদের উদ্যোগে। এতে অর্ধশতাধিক প্রকারের পিঠা নিয়ে পাঁচটি স্টল বসে। স্টলে অংশগ্রহণ করে উদ্ভিদবিদ্যা বিভাগ ও মৃত্তিকা বিজ্ঞান বিভাগও। এতে পুলি পিঠা, পোয়া পিঠা, পাটিসাপটা, সোমাই পিঠা, ডিম পিঠা, সন্দেশ পিঠা, শামুক পিঠা এবং নকশি পিঠাসহ বিচিত্র ধরনের পিঠা ছিল। পিঠার মূল্য ছিল প্রতি পিস ৩০ থেকে ৬০ টাকার মধ্যে। অতিরিক্ত আনন্দ যোগ করার জন্য সব ধরনের পিঠাকে নতুন নতুন নামে নামকরণও করা হয়। এর মধ্যে মৃত্তিকাবিজ্ঞান বিভাগের কমলা সুন্দরী, বাংলা বিভাগের বউয়ের মন বোঝার পিঠা, প্রেমের লাড্ডু এবং রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের স্টলের বিসিএস কেডার হওয়ার পিঠা উল্লেখযোগ্য।

এতে কেউ কেউ অভিভাবকদেরও নিয়ে আসে। দুপুরের মধ্যেই সব স্টলের পিঠা শেষ হয়ে যায়। এরপর ছোট্ট ক্যাম্পাসটির পুরোটা জুড়ে অবস্থান করা সব শিক্ষার্থী ৬-৭ জন করে দল বেঁধে সাউন্ড বক্সে চলমান গানের সঙ্গে নৃত্যে কলেজ প্রাঙ্গণটি বসন্তের নৃত্যশালায় পরিণত হয়। পরে তৈরি করা মঞ্চেও একক ও যৌথ নাচ এবং গান পরিবেশন করা হয়। অতঃপর মনোজ্ঞ পরিবেশনার মধ্য দিয়ে প্রাণবন্ত এ আয়োজন সমাপ্ত হয়।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close