শাহ্ মুহাম্মদ আব্দুল্লাহ, রাবি

  ২১ মে, ২০২৪

জারুল কৃষ্ণচূড়ায় সেজেছে রাবি ক্যাম্পাস

প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের লীলাভূমি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়। হরেক রকম বৃক্ষরাজিতে সজ্জিত এই ক্যাম্পাস মতিহারের সবুজ চত্বর নামে পরিচিত। কৃষি প্রকল্পের সর্বশেষ বৃক্ষশুমারি অনুযায়ী, বর্তমানে ক্যাম্পাস জুড়ে রয়েছে ৩০ হাজার ১৯১টি বৃক্ষের সমারোহ। ফলদ, ঔষধি, বনজ বৃক্ষের পাশাপাশি এ সংখ্যাটার মধ্যে রয়েছে বিভিন্ন প্রজাতির ফুলগাছও। ঋতুভেদে বিভিন্ন রকমের ফুল ফোটে রাবি ক্যাম্পাসের সৌন্দর্যে বৈচিত্র্যতা নিয়ে আসে।

রৌদ্রের প্রখরতা দেখে সহজেই আঁচ করা যাচ্ছে পঞ্জিকার পাতায় এখন গ্রীষ্মকাল চলছে। গ্রীষ্ম কার্পণ্যহীনভাবে নিজের সরূপ তুলে ধরতে ব্যস্ত। পলাশ আর শিমুলের বসন্ত শেষে প্রকৃতিতে এসেছে গ্রীষ্ম। কাঠফাটা রোদ আর গরমের জন্য গ্রীষ্মের খ্যাতি থাকলেও দৃষ্টিনন্দন ফুলে ফুলে প্রকৃতি সাজাতেও এই ঋতুর জুড়ি নেই। এজন্যই বসন্তকে ঋতুরাজ বলা হলেও অনেকের চোখে গ্রীষ্ম হচ্ছে পুষ্প উৎসবের ঋতু। এই ঋতুতে রাবি ক্যাম্পাসেও হরেক রকম ফুল ফোটে। তারই ধারাবাহিকতায় কোথাও হলুদ সোনালু, কোথাও বেগুনি রঙের জারুল আবার কোথাও রক্তিম কৃষ্ণচূড়া ফুলের বাহারি রঙ্গে অপরূপ সৌন্দর্যে সজ্জিত হয়ে উঠেছে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস। কাঠগোলাপ, স্বর্ণলতা, লিলি ফুলেরও দেখা মিলছে বিভিন্ন জায়গায়।

ফুলেভরা গাছগুলো দেখলে মনে হয় দুর্লভ সব অলংকারে সজ্জিত হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের কাজলা গেট দিয়ে প্রবেশ করলেই চোখে পড়ে দৃষ্টিনন্দন সোনালু ফুল। এ ছাড়া পশ্চিমপাড়া আবাসিক এলাকা অর্থাৎ মেয়েদের হলে যাওয়ার রাস্তার দুইধারে বেগুনি রঙের জারুল ফুল রাবি ক্যাম্পাসের সৌন্দর্য বহু গুণে বাড়িয়ে দিয়েছে। তাপসী রাবেয়া হল, রোকেয়া হল ও বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন্নেছা হল গেটের আশপাশে ফুটেছে আগুনরাঙা কৃষ্ণচূড়া। এ ছাড়া রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর এবং সত্যেন্দ্রনাথ বসু অ্যাকাডেমিক ভবনের সামনে, পরিবহন মার্কেট, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হল এবং পূর্বপাড়া মসজিদের সামনের রাস্তার ধারে, বধ্যভূমি এলাকার পুকুর পাড়ে ও চারুকলা অনুষদ এলাকার বিভিন্ন

জায়গায় দেখা মিলছে চোখ ধাঁধানো কৃষ্ণচূড়া ফুলের।

সূর্যের রক্তিম কিরণ গায়ে মেখে যেন ফুলগুলো আরো রক্তিম হয়ে উঠেছে। তীব্র দাবদাহে অতিষ্ঠ যখন জনজীবন, তখন এসব ফুল গাছের ছায়ায় বসে ফুলের সৌন্দর্য উপভোগের মাধ্যমে কিছুটা হলেও স্বস্তি মিলছে শিক্ষার্থীদের। সৌন্দর্য উপভোগে শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি বহিরাগত দর্শনার্থীদেরও দেখা যাচ্ছে ক্যাম্পাসের বিভিন্ন জায়গায়। কেউ অপলক দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকছে আবার কেউ মাটিতে পড়া তাজা ফুল গুঁজে দিচ্ছে প্রিয়তমার খোঁপায়। কেউ কেউ ফুলের সাথে ছবি তুলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম প্রকাশ করছে।

ফটোগ্রাফাররাও ব্যস্ত এই দৃষ্টিনন্দন দৃশ্য ফ্রেমে বন্দি করতে। ছবি তুলতে ব্যস্ত থাকা বাংলা বিভাগের শিক্ষার্থী রাফিন আহমেদ মুনশি বলেন, প্রতি ঋতুতে হরেক রকমের ফুল ফোটে রাবি ক্যাম্পাসে। সৃষ্টি হয় নৈস্বর্গিক সৌন্দর্যের। এই দৃষ্টিনন্দন দৃশ্য ফ্রেমে বন্দি করার লোভ সামলাতে না পেরে তীব্র রোদেও পুরো ক্যাম্পাস ঘুরে ছবি তুলছি।

বহিরাগত দর্শনার্থী খাদেমুল ইসলাম সাকিব বলেন, ফেসবুকে দেখেছি রাবিতে কৃষ্ণচূড়া, জারুল ফুল ফুটেছে। ফুল আমার বরাবরই পছন্দের এবং ফুল পছন্দ করে না- এমন মানুষ হয়তো পৃথিবীতে একজনও নেই। তাই ছুটির দিনে বউ-বাচ্চাকে নিয়ে ক্যাম্পাসে বেড়াতে এসেছি।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close