নাজমুল হুদা, পাবিপ্রবি

  ১৭ জানুয়ারি, ২০২৪

কুয়াশার চাদরে আবৃত পাবিপ্রবি ক্যাম্পাস

ষড়ঋতুর দেশ আমাদের এ সবুজে ঘেরা বাংলাদেশে প্রত্যেকটি ঋতু আলাদা আলাদা বৈশিষ্ট্য বহন করে। হেমন্তের বিদায়ের পর শীত তার আগমনী দিয়ে যায় শির শির অনুভূতি জাগিয়ে। দিন যত যায় আস্তে আস্তে তার পূর্ণতা পায়। গ্রামাঞ্চলে খুব কনকনে শীত এলেও শহরে তার তুলনায় কম অনুভূত হয়। গ্রাম-শহরের মাঝামাঝি প্রিয় পাবিপ্রবি ক্যাম্পাস শীতের আগমনে কুয়াশার চাদরে আবৃত থাকে বেশ কিছুক্ষণ। দেখে মনে হয় যেন কুয়াশার চাদরে আদরে আদরে ঘুমিয়ে আছে প্রাণের প্রিয় পাবিপ্রবি ক্যাম্পাস। গাছের পাতা থেকে শিশির ঝরা টুপটাপ শব্দ আর পাখিদের কলরবে ক্যাম্পাস সবাইকে অতীত গ্রামীণ জীবনযাত্রা মনে করিয়ে দেয়। আলস্যের চাদর ও কুয়াশার ধূম্রজাল চিরে পূর্বাকাশে সূর্য নিজেকে জানান দেওয়ার কাজে যখন ব্যস্ত, আলতো সূর্যরশ্মিতে ঘাসের ডগায় শিশিরবিন্দুগুলো মুক্তদানার মতো ঝলমল করে তখন অনেকের পদচারণে মুখর হয়ে উঠে ক্যাম্পাস। সকালে এই মনোরম পরিবেশে ক্লাস করতে আসা বাংলা বিভাগের শিক্ষার্থী আব্দুস সালাম বলেন, কুয়াশার চাদর যেন প্রকৃতির এক অপূর্ব রূপ। কুয়াশার চাদরে ঢাকা পাবিপ্রবি আমার কাছে এক অসাধারণ দৃশ্য। এ দৃশ্য দেখে আমার মনে হয় যেন আমি অন্য এক জগতে এসে পড়েছি। কুয়াশার চাদরে ঢাকা ক্যাম্পাসের গাছপালা, ভবন, সবুজ মাঠ সবকিছুই এক অপূর্ব রূপ ধারণ করেছে। কুয়াশার মধ্য দিয়ে হাঁটতে হাঁটতে মনে হয় যেন আমি এক স্বপ্নের জগতে ভ্রমণ করছি। পাবিপ্রবি আমার কাছে শুধু একটি ক্যাম্পাস নয়, এটি আমার প্রাণের ক্যাম্পাস। এখানে আমি আমার জীবনের অনেক গুরুত্বপূর্ণ সময় কাটিয়েছি। এখানে আমি আমার বন্ধুদের সঙ্গে অনেক আনন্দের মুহূর্ত কাটিয়েছি। এখানে আমি আমার শিক্ষকদের কাছ থেকে অনেক কিছু শিখেছি। কুয়াশা চাদরে ঢাকা পাবিপ্রবি আমার কাছে একটি স্মৃতি বিজড়িত স্থান। এ দৃশ্য দেখে আমার মনে হয় যেন আমি আমার পুরোনো দিনগুলোতে ফিরে গিয়েছি। শীতের সকালে ব্যবহারিক ক্লাস করতে আসা গণিত বিভাগের শিক্ষার্থী নিলয় বলেন, পাবিপ্রবি কুয়াশার চাদরে ঢাকা দৃশ্যটি নিয়ে আমার কয়েকটি অনুভূতি নিম্নরূপ-

প্রকৃতির সৌন্দর্য : কুয়াশার চাদরে ঢাকা পাবিপ্রবির প্রকৃতির সৌন্দর্যের এক অনন্য নিদর্শন। এ দৃশ্য দেখে মনে হয় যেন প্রকৃতি তার সবচেয়ে সুন্দর রূপটি দেখিয়ে দিয়েছে।

স্মৃতিচারণ : কুয়াশা চাদরে ঢাকা পাবিপ্রবি আমার কাছে একটি স্মৃতিবিজড়িত স্থান। এই দৃশ্য দেখে আমার মনে হয় যেন আমি আমার পুরোনো দিনগুলোতে ফিরে গিয়েছি।

অনুভূতির আবেগ : কুয়াশার চাদরে ঢাকা পাবিপ্রবি আমার মনে একটি অসাধারণ আবেগ সৃষ্টি করে। এ দৃশ্য দেখে আমি এক অদ্ভুত অনুভূতি অনুভব করি। যেন আমি অন্য এক জগতে এসে পড়েছি।

অনেকেই ফজরের নামাজ পড়ে ব্যায়াম করার জন্য ক্যাম্পাসে শরীরচর্চা করেন। কেউ কেউ কেন্দ্রীয় খেলার মাঠ দৌড়ে পরিভ্রমণ করেন। পাখি ডাকা শীতের ভোরে ক্যাম্পাস নির্জন না থেকে সবার কর্ম চঞ্চলতায় মুখরিত থাকে। রাত হলেই শুরু হয় ব্যাডমিন্টন খেলা। তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, শীতের সকালে ব্যায়ামের সুবিধা অসুবিধার কথা। গরম কালের তুলনায় শীতকালে ব্যায়াম করা অনেক সুবিধার। মনোরম পরিবেশে ব্যায়াম করতে পেরে সবাই আনন্দিত। বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের বিভিন্ন আবাসিক হল এবং চত্বর ঘুরে দেখা যায়, সব জায়গায় ফুলে ফুলে রঙিন হয়ে গেছে। ফুলে ফুলে শিশিরবিন্দু যেন মুক্তার দানা। আবাসিক হলগুলোর আঙিনার সৌন্দর্য বর্ধনের লক্ষ্যে ফুল গাছের যত্ন নেওয়া হচ্ছে। নতুন নতুন শোভাবর্ধক গাছ লাগানো হচ্ছে। সব মিলিয়ে পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শীতের সকাল যেন গ্রামবাংলার চিরায়ত সেই শীতের সকালের অনেকটা প্রতিচ্ছবি।

রসায়ন বিভাগের শিক্ষার্থী সজীব হোসেন বলেন, পাবিপ্রবি ক্যাম্পাস আমাদের প্রাণের ক্যাম্পাস। কুয়াশার চাদরে মোড়ানো ক্যাম্পাসে পদচারণে অনুভূতি ছোটবেলায় ফিরিয়ে নিয়ে যায়। লোমহর্ষক শীতের শুরুতে পরিপাটি হয়ে ক্যাম্পাসের আঙিনায় সকাল-সন্ধ্যা শিক্ষার্থীদের আনাগোনা নজর কাড়ে। প্রিয় ক্যাম্পাস সেজেছে নতুন নতুন ফুলে। শীতের বাহারি ফুলে নজর কাড়ে সবার। আর ফুলে ফুলে শিশির কণা যে কি অপরূপ সৌন্দর্য তা বোঝানো যাবে না। কুয়াশার চাদরে ঢাকা প্রিয় ক্যাম্পাসকে অনেক ভালোবাসি।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close