প্রতিদিনের সংবাদ ডেস্ক

  ০২ এপ্রিল, ২০২৪

নির্বাচনের আগে উত্তপ্ত ভারতের রাজনীতি

লোকসভা নির্বাচনের আগে উত্তপ্ত হয়ে উঠছে ভারতের রাজনীতির মাঠ। অভ্যন্তরীণ ইস্যুতে একের পর এক বিদেশিদের মন্তব্যে বেকায়দায় মোদি সরকার। অন্যদিকে, কংগ্রেস ও বাম দলকে আয়কর দফতর থেকে দেয়া বকেয়া মেটানোর নির্দেশ নিয়েও ভারতজুড়ে চলছে তোলপাড়।

ভারতে লোকসভা নির্বাচনের প্রথম দফার ভোটগ্রহণ হবে ১৯ এপ্রিল। রাজনৈতিক দলগুলো যখন দেশজুড়ে প্রচার-প্রচারণায় ব্যস্ত, তখন অনেকটাই এলোমেলো অবস্থা রাহুল গান্ধীর দল কংগ্রেসের। দেশটির আয়কর বিভাগ ১ হাজার ৮২৩ কোটি টাকা বকেয়া কর পরিশোধের নোটিশ পাঠানোয় ভোটের হিসাব-নিকাশ আপাতত পাশে রাখতে হচ্ছে দলটিকে, খাতা কলম নিয়ে দৌড়াতে হচ্ছে জাতীয় কর অফিসে।

নতুন নোটিশকে ক্ষমতাসীন বিজেপি সরকারের ‘কর সন্ত্রাস’ হিসেবে আখ্যা দিয়েছে কংগ্রেস। বিজেপির বিরুদ্ধে পাল্টা অভিযোগ তুলে কংগ্রেসের কোষাধ্যক্ষ অজয় মাকেন বলেন, আয়কর আইনের গুরুতর লঙ্ঘন করেছে দলটি। বিজেপির কাছে ৪ হাজার ৬০০ কোটি রুপি জরিমানা চেয়ে আয়কর নোটিশ পাঠানো উচিত বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

এদিকে কর বিভাগ বলছে, কংগ্রেসের ব্যাংক অ্যাকাউন্টে হিসাবের বাইরে বিপুল অংকের নগদ টাকা জমা পড়েছে, যা করের বাইরে ছিল। এ কারণে বকেয়ার পুরো অর্থই তাদের পরিশোধ করতে হবে।

তবে আসন্ন লোকসভা নির্বাচনের আগে জাতিসংঘ মহাসচিবের মুখপাত্রের বিবৃতি থেকে অক্সিজেন পাচ্ছে বিরোধীরা। সংস্থাটি সম্প্রতি জানায়, ভারতের নির্বাচনে রাজনৈতিক ও নাগরিক অধিকারসহ সবার অধিকার সুরক্ষিত থাকবে- এমনটাই প্রত্যাশা তাদের। এতে সুর মিলিয়ে বিজেপিবিরোধী শিবির বলছে, ভারতে গণতান্ত্রিক পরিবেশ নেই। বিরোধীদের নানাভাবে দেশের দুই তদন্তকারি সংস্থা ইডি ও সিবিআই দিয়ে দমানোর চেষ্টা করা হচ্ছে। জাতিসংঘের মন্তব্য সেই অভিযোগের গায়ে সিলমোহর দিচ্ছে বলেই মনে করছে বিরোধী দলগুলো।

যদিও নির্বাচনের আগে দলের ভেতরে খুব একটা স্বস্তিতে নেই বিজেপি-তৃণমূল কেউই। আর্থিক কারণে মোদি সরকারের প্রভাবশালী মন্ত্রী নির্মলা সীতারমণ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন না বলে দাবি করেছে দেশটির বিভিন্ন গণমাধ্যম। আর একই কারণে পশ্চিমবঙ্গের আরামবাগের বর্তমান তৃণমূল সাংসদ অপরুপা পোদ্দারও এবার প্রার্থী হতে পারেননি বলে জানা গেছে।

এবারের আসন্ন লোকসভা নির্বাচনে বিজেপি, কংগ্রেস, বামদল ছাড়াও প্রাদেশিক দলগুলোও প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছে। এবারের নির্বাচনে নরেন্দ্র মোদি বিজেপির প্রধানমন্ত্রী প্রার্থী হলেও, বিজেপিবিরোধী শিবিরের তেমন কেউ এখনও নেই।

আর বিজেপিবিরোধী ‘ইন্ডিয়া’ জোটের শরিক দলগুলোর মধ্যেও রয়েছে তীব্র মতোবিরোধ। এতে বেশ কিছু রাজ্যে আসন সমঝোতাও হয়নি তাদের। এটিকে ক্ষমতাসীন দল বিজেপির বড় সুযোগ বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।

এরই মধ্যে দেশটিতে নির্বাচনী প্রচারণা শুরু করেছেন মোদিবিরোধী জোট। প্রচারণার প্রথমদিনই বিজেপির বিরুদ্ধে হুঁশিয়ারি দিলেন বিরোধীরা। একাট্টা হয়ে ধরপাকড়কের বিরুদ্ধে অবস্থান জানিয়েছেন কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী ও তৃণমূল কংগ্রেসের সভানেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

গত রবিবার দিল্লির রামলীলা ময়দানে ইন্ডিয়া জোটের সমাবেশ হয়। জোটের অন্যতম প্রধান নেতা অরবিন্দ কেজরিওয়ালের গ্রেফতারের প্রতিবাদে রাজনৈতিক সভায় বক্তব্য রাখতে গিয়ে কার্যত এ নির্বাচনকে গণতন্ত্র এবং সংবিধান বাঁচানোর নির্বাচন বলে মন্তব্য করেন কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close