শাহ আলম, খুলনা

  ১৬ জানুয়ারি, ২০২৪

খুলনা নগরী

ফুটপাতে গরম কাপড়ের দোকানে ক্রেতার ভিড়

* ব্যবসায়ীদের মুখে হাসি, বেড়েছে বিকিকিনি * গ্রাহক সামলাতে হিমশিম পিঠা বিক্রেতারা

হাড়কাঁপানো এই শীতের ইতিবাচক প্রভাব পড়েছে খুলনার গরম কাপড়ের বাজারে। হাসি ফুটেছে ব্যবসায়ীদের মুখে। বিশেষ করে নগরীর ফুটপাতগুলোয় গরম কাপড়ের পসরা সাজিয়ে বসা ব্যবসায়ীরা বেশ ব্যস্ত সময় পার করছেন। গরম কাপড়ের সঙ্গে টাকা পয়সায়ও এখন তারা বেশ গরম। তাদের ব্যবসা ভালো হচ্ছে, দেখছেন লাভের মুখ। শীতের তীব্রতা অব্যাহত থাকলে ব্যবসা আরো ভালো হবে বলে আশা করছেন তারা। অন্য দিকে নগরীতে শীতের পিঠা বিক্রেতারাও চুটিয়ে ব্যবসা করছেন গরম গরম পিঠা বেচে।

অসহ্য শীতে শরীর গরম রাখতে দরকার হয় মোটা কাপড়ের। এ ধরনের কাপড়ের এখন কদর বেড়েছে। ভিড় দেখা গেছে শীতবস্ত্রের দোকানগুলোয়। স্বল্প মূল্যের কারণে ফুটপাতের গরম কাপড়ের দোকানগুলোয় হুমড়ি খেয়ে পড়ছেন ক্রেতারা। মধ্যবিত্ত, নিম্ন মধ্যবিত্ত ও দরিদ্র মানুষই বেশি ভিড় করছেন এসব দোকানে। তবে ধনীরাও ঘুরছেন ফুটপাতের দোকানে। শীত নিবারণের জন্য গরম কাপড়, হাত-পা মোজা, টুপি, মাফলার, জ্যাকেট কিনতে অনেকেই সেখানে ছুটছেন।

নগরের আহসান আহমদ রোডের ফুটপাতের গরম কাপড় বিক্রেতা মোহাম্মদ হারুনুর রশিদ জানান, শীতে বিক্রি বেড়েছে। তার দোকানে মাফলার এবং টুপি বেশি বিক্রি হচ্ছে। খুলনা জেলা স্টেডিয়ামণ্ডসংলগ্ন ফুটপাতের বিক্রেতা মো. সজিব বলেন, সাম্প্রতিক সময়ের তীব্র শীতের কারণে ভালো ব্যবসা হচ্ছে। গরম কাপড় বিক্রেতাদের মুখে হাসি ফুটেছে। লাভ হচ্ছে বেশ।

সার্কিট হাউস মাঠে খোলা আকাশের নিচে গরম কাপড় সাজিয়েছেন বিক্রেতা মো. আমিনুর রহমান। তিনি বলেন, অতি স্বল্প মূল্যে তিনি শীতের গরম কাপড় বিক্রি করছেন। এর মধ্যে ২০ থেকে ১০০ টাকা মূল্যে মানসম্মত সোয়েটার পাওয়া যাচ্ছে। ফলে ক্রেতারা হুমড়ি খেয়ে পড়ছেন। ব্যবসা ভালো হচ্ছে। তবে দোকানে একটু দামি পুরোনো কাপড় বিক্রি হচ্ছে কম। এভাবে শীত অব্যাহত থাকলে বিক্রি বাড়বে বলেও আশা করছেন তিনি।

নগরীর রেলওয়ে মার্কেটের ক্রেতা মনিরুল ইসলাম জানান, এখন মনে হচ্ছে শীতকাল এসেছে। ভেবে ছিলাম এ বছর শীতের দেখা মিলবে না। এখন অবস্থা! তাই জ্যাকেট কিনতে চলে এসেছি। কিন্তু শীত দেখে ব্যবসায়ীরা দাম বাড়িয়েছেন। আগে যেসব পোশাক ৫০০-৬০০ টাকা কেনা যেত। সেটি এখন ৭০০-৯০০ টাকা দাম হাঁকাচ্ছেন।

ক্রেতা মো. কামরুজ্জামান বলেন, তীব্র শীতের কারণে মাফলারেও শীত নিবারণ হচ্ছে না। ফুটপাত থেকে স্বল্পমূল্যে একটি গলা-টুপি কিনলাম। ক্রেতা ফাহাদ ইসলাম বলেন, শীত পড়েছে। বড় বড় দোকানে গরম কাপড়ের মূল্য অধিক। দেড় থেকে দুই হাজার টাকার নিচে ভালো সোয়েটার পাওয়া যায় না। তাই মাত্র ৫০-১০০ টাকার বিনিময়ে ফুটপাত থেকেই গরম কাপড় ক্রয় করছি। দোকানো আসা সোহেল রানা বলেন, এখন ব্যবসায়ীদের পোয়াবারো। দাম হাঁকিয়ে বসে থাকছেন। তারপরও পছন্দমতো একটি সোয়েটার কিনতে পেরেছি।

তবে শীতে কষ্টে পড়েছেন নিম্নআয়ের মানুষ। রিকশাচালক আসলাম শেখ বলেন, শীতে অবস্থা কাহিল। কিন্তু পেট তো বাঁচাতে হবে। তাই রিকশা নিয়ে বের হয়েছি। শীতে লোকজনও কম। আবার আয় না হলে ঘরে হাঁড়ি বসবে না। আমাদেরই সমস্যা বেশি।

এছাড়া তীব্র শীতে পিঠাপুলির দোকানে বেচাকেনা জমজমাট। নগরীর তারেরপুকুর, মোল্লাবাড়ী মোড়, দোলখোলা, বৈকালী, খালিশপুরের মৌসুমি পিঠার দোকানে ভিড় লক্ষণীয়। পরিবার নিয়ে পিঠা খেতে আসা মোরশেদ আলম বলেন, শীতে পিঠে খাওয়ার মজাই আলাদা। বাড়িতে পিঠা তৈরিতে ঝামেলা আছে। তাই ছেলে ও ছেলের মাকে নিয়ে চলে এলাম তারেরপুকুর। কিন্তু যে ভিড়। দীর্ঘ সময় দাঁড়িয়ে থাকতে হচ্ছে, পিঠা হাতে পেতে। দোকানি গ্রাহকদের গরম গরম পিঠা দিয়ে সারতে পারছেন না। খুলনা আঞ্চলিক আবহাওয়া অফিসের সরকারি আবহাওয়াবিদ আমিরুল আজাদ জানান, সারা দেশের মতো খুলনা অঞ্চলেও তাপমাত্রা কমছে। মঙ্গলবারের পর তাপমাত্রা একটু বাড়বে। তবে ২০ জানুয়ারি পর আবার তাপমাত্রা কমতে পারে বলেও জানান তিনি।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close