ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক বলেছেন আনিসুর রহিম ও সুভাষ চৌধুরী সাংবাদিকতায় অবিস্মরণীয়। তারা দুজনই তৃণমূল সাংবাদিকতা থেকেও জাতীয় পর্যায়ে স্থান করে নেওয়ার দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন। সমাজ প্রকৌশলী হিসেবে সমাজে ইতিবাচক পরিবর্তনের জন্য বিশেষ ভূমিকা রেখেছেন। তাদের প্রতি শ্রদ্ধা জানানোর পাশাপাশি তাদের অনুসরণের জন্য নতুন প্রজন্মের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন এই শিক্ষাবিদ। শনিবার (১৮ মার্চ) জাতীয় প্রেস ক্লাবের মওলানা আকরম খাঁ মিলনায়তনে ‘অনন্য আনিস ও সুবাসিত সুভাষ’ শীর্ষক স্মরণানুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন।

সাংবাদিক আনিসুর রহিম ও সুভাষ চৌধুরীর সুহৃদদের পক্ষ থেকে আয়োজিত এ অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন জাতীয় প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক শ্যামল দত্ত। সাংবাদিক নিখিল চন্দ্র ভদ্রের সঞ্চালনায় আলোচনায় অংশ নেন বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের (বিএফইউজে) সভাপতি ওমর ফারুক ও কোষাধ্যক্ষ খায়রুজ্জামান কামাল, প্রয়াত আনিসুর রহিমের স্ত্রী অধ্যক্ষ ড. দিলারা বেগম, প্রয়াত সুভাষ চৌধুরীর স্ত্রী অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক মিনতি চৌধুরী, সংস্কৃতি কর্মী পুলক রাহা, একাত্তর টিভির ভারপ্রাপ্ত প্রধান বার্তা সম্পাদক পলাশ আহসান, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের (ডিইউজে) ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক সম্পাদক সাকিলা পারভীন, স্ক্যান সাধারণ সম্পাদক মনিরুজ্জামান মুকুল, স্বদেশ সংস্থার নির্বাহী পরিচালক মাধব চন্দ্র দত্ত, পত্রদূত সম্পাদক লায়লা পারভীন সেজুতি, সাতক্ষীরার সাংবাদিক শরীফুল্লাহ কায়সার সুমন প্রমুখ।

আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক বলেন, আজকের এই অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে মফস্বল সাংবাদিকদের জাতীয় পর্যায়ে স্বীকৃতির জন্য শুভ সূচনা হলো। কারণ সাতক্ষীরাসহ দক্ষিণ-পশ্চিম উপকূলীয় অঞ্চলে সাংবাদিকতাকে সমৃদ্ধ করার জন্য আনিসুর রহিম ও সুভাষ চৌধুরীর অবদান অবিস্মরণীয়। বিশেষ করে উপকূলীয় সাংবাদিকতায় তারা ছিলেন এক অনন্য দৃষ্টান্ত। তিনি আরো বলেন, প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর সমস্যা-সংকটকে জাতীয় পর্যায়ে তুলে ধরতে বিশেষ ভূমিকা রাখতে পারেন সাংবাদিকরা। সাতক্ষীরার সাংবাদিক অধ্যাপক আনিসুর রহিম ও সুভাষ চৌধুরী সেই ভূমিকা রেখেছেন।

সাংবাদিক নেতা ওমর ফারুক বলেন, সাংবাদিক আনিসুর রহিম ও সুভাষ চৌধুরীর সততা নীতি ও আদর্শ আমাদের সবার জন্য অনুকরণীয়। সভাপতির বক্তব্যে শ্যামল দত্ত বলেন, প্রায়ত এই দুই বন্ধু সাতক্ষীরায় আধুনিক সাংবাদিকতার নবধারা সৃষ্টি করেছিলেন। তারা ছিলেন সৃজনশীল ব্যক্তি, নিরহংকার এবং নির্লোভ মানুষ ও সমাজ সংস্কারক। দুর্নীতি, সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ ও মাদকের বিরুদ্ধে প্রতিবাদী কণ্ঠস্বর। স্মরণসভার শুরুতে আনিসুর রহিম ও সুভাষ চৌধুরীর প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়। পরে দুজনের ওপর নির্মিত একটি প্রমাণ্যচিত্র প্রদর্শন করা হয়। অনুষ্ঠানে ‘সুবাসিত সুভাষ ও অনন্য আনিস’ দুটি বইয়ের মোড়ক উন্মোচন করা হয়।

উল্লেখ্য, বীর মুক্তিযোদ্ধা অধ্যাপক আনিসুর রহিম গত ৩ জানুয়ারি স্বজনদের সঙ্গে সুন্দরবন ভ্রমণকালে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করেন। তিনি দৈনিক সাতক্ষীরা চিত্রের সম্পাদক ও সাতক্ষীরা জেলা নাগরিক কমিটির আহ্বায়ক ছিলেন। সাতক্ষীরার ডায়েরিখ্যাত সুভাষ চৌধুরী সাংবাদিকতায় ছিলেন পথিকৃত। মৃত্যুর আগ পর্যন্ত দৈনিক যুগান্তর ও এনটিভির সাতক্ষীরা প্রতিনিধি হিসেবে কর্মরত ছিলেন তিনি। সাংবাদিকতায় বিশেষ অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ ২০২২ সালের বসুন্ধরা মিডিয়া অ্যাওয়ার্ডসহ বিভিন্ন সম্মাননায় ভূষিত হন এ স্বনাম ধন্য সাংবাদিক।

"