আলী আজীম, মোংলা (বাগেরহাট)

  ০২ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩

মোংলা ইপিজেডে আগুন নেভাতে ২৪ ঘণ্টা লড়াই

৪ সদস্যের তদন্ত কমিটি * ১৫০ কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি দাবি * ৭০০ শ্রমিক-কর্মচারী নিরাপদে

মোংলা ইপিজেডে কারখানায় লাগা আগুন ২৪ ঘণ্টার প্রচেষ্টায় নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হয়েছে। ভিআইপি ইন্ডাস্ট্রিজ বাংলাদেশ প্রাইভেট লিমিটেড নামের ওই কারখানার মানবসম্পদ ও প্রশাসন বিভাগের প্রধান মো. মিজানুর রহমান খাঁন বুধবার (১ ফেব্রুয়ারি) সকাল সাড়ে ৯টায় জানান, আগুন নিয়ন্ত্রণে এসেছে তবে কারখানার ভেতর থেকে কালো ধোঁয়া বের হচ্ছে। আগুন পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে আনতে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীদের টানা ২৪ ঘণ্টা লেগে যায়।

মো. মিজানুর রহমান খাঁন ফায়ার সার্ভিসের বরাত দিয়ে জানান, মঙ্গলবার (৩১ জানুয়ারি) বিকাল সাড়ে ৩টার দিকে কারখানায় আগুন ধরে যায়। মোংলা ইপিজেডে ৯টি কারখানার মধ্যে ১ নম্বর কারখানাটিতে শর্টসার্কিটের কারণে আগুন লাগে। ফায়ার সার্ভিসের মোংলা, বাগেরহাট ও রামপালের আটটি ইউনিট এসে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনার আপ্রাণ চেষ্টা চালায়। কিন্তু আগুনে কারখানাটি পুড়ে যায়। কারখানায় লাগেজ তৈরির কাঁচামাল ও তৈরি লাগেজ ছিল। যা কয়েকটি দেশে রপ্তানির অপেক্ষায় ছিল। এছাড়া এ কারখানায় রাসায়নিক, আঠা, পলিথিন জাতীয় দাহ্য পদার্থ ও যন্ত্রপাতি ছিল। সেগুলো সব পুড়ে গেছে। এতে মোট ১৫০ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে জানিয়েছেন মিজানুর রহমান খাঁন। এই ক্ষতি উল্লেখ করে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় মোংলা থানায় একটি জিডি করা হয়।

মিজানুর আরো বলেন, পৃথিবীতে একমাত্র এ ধরণের বৃহত্তম কারখানা এটি। ১ লাখ ১১ হাজার বর্গফুট আয়তনের এ লাগেজ কারখানায় যখন আগুন ধরে যায় তখন সেখানে কর্মরত ছিলেন ৭০০ শ্রমিক। তারা নিরাপদে বেরিয়ে এসেছেন। এজন্য কোনো হতাহতের ঘটনা ঘটেনি।

ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে ইপিজেড কর্তৃপক্ষ চার সদস্যের তদন্ত কমিটি করেছে। এদিকে ভারতীয় কোম্পনি ভিআইপির লাগেজ কারখানায় অগ্নিকাণ্ডে ১৫০ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে দাবি করেছে কারখানার কর্মকর্তারা।

ফায়ার সার্ভিসের মোংলা বন্দর ইউনিটের সিনিয়র স্টেশন কর্মকর্তা মো. আরবেশ আলী বলেন, ভিআইপি কারখানায় লাগা আগুন নিয়ন্ত্রণে আনা হলেও ভেতর থেকে এখনো ধোঁয়া বের হচ্ছে। মনে হচ্ছে এখনো পুরোপুরি নেভেনি। তারপরও মোংলা বন্দর, রামপাল খুলনা ও বাগেরহাটের ৮টি ইউনিট কাজ করে যাচ্ছি।

মোংলা ইপিজেড কর্তৃপক্ষ সূত্র জানায়, ২০১৩ সালে ভারতীয় কোম্পানি ভিআইপি ইন্ডাস্ট্রিজ বাংলাদেশ প্রাইভেট লিমিডেট এখানে বিনিয়োগ শুরু করে। শুরুতে তারা ছয়টি কারখানা দিয়ে পণ্য উৎপাদনে যায়। পরে ২০২৩ সাল পর্যন্ত তাদের কারখানা বাড়ানো হয়। এখন ৯টি কারখানা রয়েছে এখানে। এসব কারখানায় উৎপাদিত জিনিস বিশ্বের সব দেশে রপ্তানি করা হয়।

মোংলা ইপিজেডের নির্বাহী পরিচালক মো. মাহাবুব আহম্মেদ সিদ্দিক বলেন, ইপিজেডের ভেতরে ভিআইপির ১ নম্বর কারখানায় অগুন লাগে। এখনো আগুন পুরোপুরি নেভেনি। কারখানাটিতে আগুন লেগে ভিআইপির অর্থনৈতিকভাবে অনেক ক্ষতি হয়েছে। এ ঘটনায় ইপিজেডের অতিরিক্ত নির্বাহী পরিচালক (হিসাব) আবুল হাসান মুন্সিকে প্রধান করে চার সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। আগামী তিন কার্যদিবসের মধ্যে এই কমিটি প্রতিবেদন জমা দেবেন। এরপর ঘটনার আসল কারণ জানা যাবে।

উল্লেখ্য, ২০২০ সালের ২৮ ডিসেম্বর মোংলা ইপিজেডের একটি সুতার কারখানায় আগুন লাগে।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close