ফেনী প্রতিনিধি

  ২৫ জানুয়ারি, ২০২৩

ফেনীর সোনাগাজী

লোকবলের অভাবে ব্যাহত প্রাণিসম্পদের উন্নয়ন

ফেনীর সোনাগাজীর প্রাণিসম্পদ উন্নয়ন কেন্দ্রের অবকাঠামো ও চিকিৎসাব্যবস্থা চলছে খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে। এলাকায় পাঁচ শতাধিক খামার দেখভালের দায়িত্ব এই প্রতিষ্ঠানের। কিন্তু দীর্ঘদিন ধরে এ কেন্দ্রে প্রয়োজনীয় লোকবল না থাকায় সেবাবঞ্চিত হচ্ছে এলাকার হাঁসমুরগি ও গবাদিপশুর খামারিরা।

প্রাণিসম্পদ অফিস সূত্রে জানা যায়, সোনাগাজী উপজেলা সদর, চর মজলিশপুর, বগাদানা, মঙ্গলকান্দি, মতিগঞ্জ, চর দরবেশ, চর চান্দিয়া, আমিরাবাদ, নবাবপুর ও পৌরসভার নিবন্ধিত-অনিবন্ধিত মিলে দুই শতাধিক গাভির খামার, ৮৯টি মহিষ, ২০টি ছাগল, ২৭টি ভেড়া, লেয়ার মুরগির তিন শতাধিক, ব্রয়লার মুরগির ১৫০টি, হাঁসের ১৫টি, সোনালি মুরগির ৯টি, টার্কির ২০টি আর কবুতরের ২০টি খামার রয়েছে। এসবের নিয়ন্ত্রণ করে থাকে উপজেলা প্রাণিসম্পদ উন্নয়ন কেন্দ্র।

এসব খামার দেখভালের জন্য সার্বক্ষণিক প্রস্তুত থাকতে হয় কর্মরত চিকিৎসককে। শিডিউল তৈরি করে একেকদিন একেকটি খামার পরিদর্শন করতে হয়। অন-কলে যেকোনো মুহূর্তে প্রস্তুতি নিয়ে জরুরিভিত্তিতে যেতে হয় খামারে। সচেতনতার লক্ষ্যে বিভিন্ন কর্মসূচি বাস্তবায়ন, ক্যাম্পিং, আলোচনা সভা, প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা, সমসাময়িক প্রকল্পের বাস্তবায়ন, বিভিন্ন দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্ত খামারিদের তালিকা করে ক্ষতিপূরণের ব্যবস্থা করতে হয়। এছাড়া উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে বিভিন্ন জাতীয় দিবস, সমন্বয় সভা, মাসিক সভা, ট্যাগ অফিসারের দায়িত্ব পালন করতে হয় এখানকার দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের।

কিন্তু অফিসের প্রধান উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা বদলি হয়ে অন্যত্র চলে যাওয়ায় দীর্ঘদিন শূন্য রয়েছে এ পদটি। বর্তমানে ভেটেরিনারি সার্জন ডা. কল্লোল বড়ুয়া ভারপ্রাপ্ত প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আসছেন। অন্যান্য ১১টি পদের বিপরীতে কর্মরত রয়েছে মাত্র ৪ জন কর্মকর্তা।? এর মধ্যে ভেটেরিনারি মাঠ সহকারী তিনটি পদের বিপরীতে আছেন দুজন। কৃত্রিম প্রজনন কর্মীর দুটি পদ থাকলেও দুটি শূন্য। অফিস সহকারীর একটি পদও শূন্য। ড্রেসার কর্মীর পদটি শূন্য। পিয়নের একটি পদও রয়েছে শূন্য।

সোনাগাজী উপজেলার খামার সমিতির সভাপতি নাছির উদ্দিন জানান, সোনাগাজীতে বিভিন্ন সময় দুর্যোগের কারণে আমরা খামারিরা ব্যাপক ক্ষতির সম্মুখীন হই। উপজেলা কর্মকর্তাসহ অনেকেই নেই।

আবদুল আউয়াল নামে এক খামারি জানান, পর্যাপ্ত লোকবলের অভাবে এখানে সময়মতো চিকিৎসক পাওয়া যায় না। বর্তমানে যথাযথ চিকিৎসা না পেয়ে গ্রামের হাতুড়ে ডাক্তারদের শরণাপন্ন হতে হচ্ছে খামারিদের। আর এদের হাতে বাড়তি টাকা খরচের সেবার শিকার হচ্ছে সাধারণ মানুষ।

সোনাগাজী উপজেলা ভারপ্রাপ্ত প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. কল্লোল বড়ুয়া বলেন, দীর্ঘদিন উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তার পদটির ভারপ্রাপ্ত দায়িত্বে আছি। এছাড়া ১১টি পদের বিপরীতে মাত্র আমরা ৪ জন কর্মরত আছি। কাজের অনেক চাপ। সব কাজ সময়মতো করা সম্ভব হচ্ছে না।

ফেনী জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. আনিছুর রহমান বলেন, উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তার বিষয়টি সরকারের বিষয়। এছাড়া অন্য পদগুলো শুধু সোনাগাজী উপজেলা নয়, ফেনী জেলাসহ দেশের অনেক অফিসেই শূন্য। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি, যাতে দ্রুত এর সমাধান হয়।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close