গাজীপুর প্রতিনিধি

  ০৫ অক্টোবর, ২০২২

সহকর্মীকে হত্যা করে ৮ টুকরা

হত্যাকারীর স্বীকারোক্তি

স্ত্রীকে প্রেম নিবেদন ও বিয়ের প্রস্তাব দেওয়ার ক্ষোভে এবং মদ খাওয়া নিয়ে দ্বন্দ্বে গার্মেন্ট কর্মী সবুজ বার্নাড গোছালকে হত্যার পর ৮ টুকরা করেছিল সহকর্মী শাহীনুর রহমান শাহীন (৩২)। ঘটনাটি ঘটেছিল গত ২৮ সেপ্টেম্বর গাজীপুরের কালীগঞ্জের পানজোড়া এলাকায়। গাজীপুর পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) গ্রেপ্তারের পর সোমবার আদালতে হাজির করলে অভিযুক্ত শাহীন স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয়।

মঙ্গলবার (৪ অক্টোবর) গাজীপুর পিবিআইয়ের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মাকছুদের রহমান এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানান। তিনি জানান, গ্রেপ্তার শাহীন সাতক্ষীরা জেলার তালা থানার বালিয়া এলাকার মোসলেম উদ্দিনের ছেলে। সে কালীগঞ্জের দক্ষিণ পানজোড়া এলাকায় ভাড়া থেকে অ্যাপারেল গার্মেন্টে চাকরি করত। গত ২ অক্টোবর খুলনা মেট্রোপলিটনের সোনাডাঙ্গা বাসস্ট্যান্ড এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। ভিকটিম সবুজ বার্নাড গোছাল কালীগঞ্জ থানার নাগরী ভাষানিয়া এলাকার অমূল্য গনসালভেসের ছেলে এবং একই পোশাক কারখানায় চাকরি করতেন। পুলিশ সুপার জানান, একই পোশাক কারখানায় চাকরি করার সুবাদে শাহীনের সঙ্গে ভিকটিম সবুজ বার্নাডের বন্ধুত্ব হয়। এই কারণে সবুজ প্রায়ই শহীনের বাসায় আসা-যাওয়া করত। শাহীনের স্ত্রী জেসমিন আক্তারকে (৩২) ভিকটিম মাঝে মধ্যেই প্রেম ও বিয়ের প্রস্তাব দিত। জেসমিন বিষয়গুলো তার স্বামী শাহীনকে জানিয়ে দিত। এতে শাহীনের মনে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়।

গত ২৮ সেপ্টেম্বর ঘটনার দিন সবুজ বার্নাডের সঙ্গে অভিযুক্ত শাহীনের পানজোড়া এলাকায় দেখা হয়। এ সময় শাহীন নতুন চাকরি পাওয়ায় পার্টি দেওয়ার কথা বলে সবুজ বার্নাড। পরে মদ আনার টাকা দেয় শাহীন। সবুজ বার্নাড মদ এনে শাহীনের ঘরে দুজনে মদ পান করে। এ সময় স্ত্রী বাসায় ছিলেন না। মদ সেবন নিয়ে দুজনের মধ্যে ঝগড়াঝাটি ও মারামারি হয়। এক পর্যায়ে শাহীন সজোরে বুকে ঘুষি মারলে ঘটনাস্থলে ভিকটিমের মৃত্যু হয়। পরে লাশ ৮টি টুকরা করে বস্তায় ভরে খাটের নিচেই রেখে দেয় শাহীন। পর দিন শাহীনের স্ত্রী গার্মেন্টে যাওয়ার পর সবুজের শরীরের এক একটি অংশ বস্তায় ভরে পানজোড়া এলাকার বিভিন্ন স্থানে ফেলে দিয়ে পালিয়ে যায়।

এদিকে সবুজ নিখোঁজ থাকায় পরদিন ২৯ সেপ্টেম্বর বৃহস্পতিবার বাবা অমূল্য গন সালভেস কালীগঞ্জ থানায় নিখোঁজ ডাইরি করেন। পরে ১ অক্টোবর সকালে পানজোড়ার অ্যাপারেল গার্মেন্ট লিমিটেড ফ্যাক্টরির পাশ থেকে সবুজ বার্নাড গোছালের দুইটি হাত, একটি পুকুর থেকে জিন্স প্যান্ট, একটি ডোবা থেকে কোমর থেকে হাঁটু পর্যন্ত অংশ, বাম পায়ের টি খণ্ডিত দুই অংশ ও প্লাস্টিকের পলিথিনে মোড়ানো মাথা, একটি ড্রেনে থেকে বাজারের ব্যাগে মোড়ানো কোমর থেকে গলার অংশ উদ্ধার করা হয়। এ ব্যাপারে ভিকটিমের বাবা অমূল্য গনসালভেস বাদী হয়ে কালীগঞ্জ থানায় মামলা করেন। পুলিশ কর্মকর্তা আরো জানান, গ্রেপ্তাররা শাহীনের দেখানো মতে হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত বঁটি, ভিকটিমের ব্যবহৃত মোবাইল ফোন উদ্ধার করা হয়েছে।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close