সেলিম রানা, ফুলপুর (ময়মনসিংহ)

  ২৫ সেপ্টেম্বর, ২০২২

ফুলপুরে ভাঙা সেতু, দুর্ভোগ

ময়মনসিংহের ফুলপুরে নির্মাণের এক সপ্তাহের মধ্যে ধসে পড়া সেতু ১৬ বছরেও মেরামত হয়নি। সেতু না থাকায় যাতায়াতে চরম দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন এলাকাবাসী।

সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, ফুলপুর উপজেলার সিংহেশ্বর ইউনিয়নের পলাশকান্দা গ্রামের পাশখলা খালের ওপর ২০০৪-০৫ অর্থবছরে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের অর্থায়নে ৬০ লাখ টাকা ব্যয়ে ৩০ ফুট দৈর্ঘ্যরে একটি সেতু নির্মাণ করা হয়। ওই বছরই বন্যার প্রবল স্রোতে সেতুটি হেলে পড়ে ও দুই পাশের মাটি সরে বিশাল গর্ত সৃষ্টি হয়।

এলাকাবাসীর উদ্যোগে হেলে পড়া সেতুটির দুই পাশে বাঁশ ও কাঠের সংযোগ সেতু নির্মাণ করে ঝুঁকি নিয়ে পারাপার হচ্ছে। সেতুটি মেরামত না করায় ১০ গ্রামের মানুষ যাতায়াতে চরম দুর্ভোগ পোহাচ্ছে। তিন কিলোমিটারের পথ পাঁচ কিলোমিটার ঘুরে যানবাহন চলাচল করছে। বর্ষা মৌসুমে জনদুর্ভোগ চরম আকার ধারণ করে।

এ ব্যাপারে সিংহেশ্বর ইউনিয়নের পলাশকান্দা গ্রামের মো. আবদুর রশিদ বলেন, জনগণ চরম দুর্ভোগ পোহালেও বিগত ১৬ বছরেও সংস্কার হয়নি সেতুটি। একই এলাকার বাসিন্দা মো. শহিদুল ইসলাম ও আবদুর রশিদ বলেন, পলাশকান্দা গ্রামে পাশখলা খালের ওপরে প্রায় ১৬ বছর আগে একটি সেতু নির্মাণ করেন এক ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান। সেতুর কাজ সম্পন্ন হলেও সেতুর দুই পাশে মাটি ভরাট না করার করণে বন্যার প্রবল স্রোতে সেতুটি হেলে পড়ে।

পলাশকান্দা গ্রামের বাসিন্দা মো. রহমত আলী বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নানা উন্নয়নমূলক কাজ করে আসছেন। যদি গৃহায়ন ও গণপূর্ত প্রতিমন্ত্রী শরীফ আহমেদ এমপি আমাদের এই পলাশকান্দা পাশখলা সেতুর দিকে একটু নজর দেন তবে সিংহেশ্বর ইউনিয়নের ১০ গ্রামের মানুষের উপকার হতো। সেতুটি অচল থাকায় উপজেলার জিগারকান্দা, পলাশকান্দা, কুটুরাকান্দা, কুলিরকান্দা, বালিচান্দা, পুড়াপুটিয়া, চাতুলিয়াকান্দা, গুনাপাড়াসহ প্রায় ১০টি গ্রামের কয়েক হাজার মানুষ চলাচলে চরম ভোগান্তির শিকার হচ্ছে।

উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের গ্রামীণ সেতু নির্মাণ প্রকল্পের আওতায় ৩০ ফুট দৈর্ঘ্যরে এ সেতুটি ৬০ লাখ টাকা ব্যয়ে নির্মিত হয়।

পলাশকান্দা গ্রামের সুলতান মিয়া জানান, সেতুটি ধসে পড়ায় স্থানীয় কৃষকদের উৎপাদিত খাদ্যশস্য, কৃষিপণ্যসহ বিভিন্ন কাঁচামাল বাজারজাতকরণে যাতায়াত করতে হয় পাঁচ মাইল ঘুরে। বিষয়টি নিয়ে বারবার জনপ্রতিনিধিদের কাছে গেলে তারা আশ্বস্ত করলেও বাস্তবে কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করা হচ্ছে না। ১০ গ্রামের মানুষের ভোগান্তি লাঘবে জনপ্রতিনিধিরা এগিয়ে না আসায় এলাকাবাসী চাঁদা তুলে কাঠ-বাঁশ দিয়ে সাময়িকভাবে অস্থায়ী সেতুটি বানিয়ে ঝুঁকি নিয়ে যাতায়াত করছেন।

পলাশকান্দা গ্রামের নিজাম উদ্দিন জানান, এখানে একটি সেতু নির্মাণ না করায় এলাকার লোকজন ফুলপুর উপজেলা সদরে সঙ্গে সরাসরি চলাচল করতে পারছেন না। কৃষকরা তাদের উৎপাদিত বিভিন্ন কৃষিপণ্য শহরে বাজারজাত করতে না পারায় ন্যায্য দাম থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। ৪নং সিংহেশ্বর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. সাহা আলী জানান, হেলে পড়া সেতুর বিষয়ে উপজেলা এলজিইডি কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ জরুরি ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এই ব্যাপারে উপজেলা এলজিইডি প্রকৌশলী মো. রাকিব উল হাফিজ বলেন, ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে প্রস্তাবনা পাঠানো হয়েছে।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close