দুলাল বিশ্বাস, গোপালগঞ্জ

  ২০ মে, ২০২২

ইবাদ আলীর সুরের আলো

সুললিত কণ্ঠে পরম যত্নে গলা ছেড়ে হারমোনিয়াম বাজিয়ে গোপালগঞ্জ কালীবাড়ি সংলগ্ন নাফকো শপিং কমপ্লেক্সের নিচে বসে গান গাচ্ছিলেন দৃষ্টিহীন প্রতিবন্ধী ইবাদ আলী খান। গাইছিলেন কপাল পোড়া জনম দুখী আমি একজনা..., পোষাপাখি উড়ে যাবে সজনী একদিন ভাবি নাই মনে...। এ গান গেয়ে দর্শক ¯্রােতাদের মন মাতালেন। এ ঘটনা গতকাল বৃহস্পতিবারের।

শিল্পীর বাড়ি গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ার কুশলী ইউনিয়নের কুশলী গ্রামে। জানা যায়, ইবাদ আলী খান জন্ম থেকেই দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী এবং তার ডান হাতের অর্ধেক নেই। পথে পথে, অলিগলিতে, হাটবাজারে গান গেয়ে ভিক্ষা করেন তিনি। এভাবেই দুই মেয়ে, তিন ছেলে ও স্ত্রীকে নিয়ে সংসার চালান তিনি। তার বয়স এখন ৬৫। কিন্তু কণ্ঠে যেন সুরের সুধা।

গোপালগঞ্জের বিভিন্ন স্থানে ৩০ বছর ধরে অবিরাম গান গেয়ে চলছেন। এর আগে তিনি খুলনায় গান গেয়েছেন। জীবন যুদ্ধে তার ভান্ডারে রয়েছে শুধুমাত্র গান আর গান। তিনি ভাটিয়ালি, মুর্শিদী, লালন সংগীত, ভারতীয় বিভিন্ন শিল্পীর বাংলা গানও গান। বলা যায়, সব ধরনের গানই তিনি গাইতে পারেন। গান গাওয়ার সময় ভক্তরা খুশি হয়ে ৫ টাকা ১০ টাকা করে দিয়ে যায়।

প্রতিদিন ২০০ থেকে ৩০০ টাকায় রোজগার করেন তিনি। ইবাদ আলী খান বলেন, অন্ধ প্রতিবন্ধী আমি। ৬৫ বছর জীবনে কারো কোনো রকম সাহায্য সহযোগিতা ছাড়াই পথে পথে গান গেয়ে ৭ সদস্যের সংসার চালাচ্ছি। আক্ষেপ করে তিনি আরো বলেন, অনেক সাংবাদিক আমাকে নিয়ে টেলিভিশনে পত্রিকায় নিউজ করেছেন। লাইভ প্রোগ্রামে আমাকে দেখিয়েছেন কিন্তু আজ পর্যন্ত কোনো ফল পাইনি। এখন আর মিডিয়ায় নিউজ করা নিয়ে আমার আগ্রহ নেই।

জেলা কালচারাল অফিসার মামুন বিন সালেহ বলেন, ইবাদ আলী খান দীর্ঘদিন ধরে গোপালগঞ্জের মানুষকে গান গেয়ে শোনাচ্ছেন। বিভিন্ন রকম গান গেয়েই জীবন-জীবিকা চলে তার। অসহায় দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী এই শিল্পীর বেঁচে থাকার জন্য অবশ্যই সমাজের বিত্তবান ব্যক্তিদের সাহায্য করা উচিত। এছাড়াও তাকে সরকারিভাবে সাহায্য-সহযোগিতা করা দরকার।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close