জহিরুল ইসলাম, কলাপাড়া (পটুয়াখালী)

  ১২ মে, ২০২২

কুয়াকাটায় অসামাজিক কর্মকাণ্ডের অভিযোগ

কুয়াকাটা দেশের অন্যতম জনপ্রিয় পর্যটন এলাকা। তবে কুয়াকাটার সঙ্গে জড়িয়ে গেছে একাধিক নেতিবাচক বিষয়। যার নাম মাদক ব্যবসা ও অসামাজিক কর্মকাণ্ড। কয়েকজন হোটেল মালিক ও স্থানীয় ব্যক্তির কারণে সুন্দর পরিবেশ ও শৃঙ্খলা নষ্ট হচ্ছে বলে অভিযোগ রয়েছে।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ঈদুল ফিতরকে কেন্দ্র করে হাজার হাজার পর্যটকের ভিড় হয়েছে কুয়াকাটায়। সেই সুযোগে মাদক ও যৌনব্যবসায়ীরা বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। কুয়াকাটার পৌরসভাসহ আলিপুর, কালাচান পাড়া, আমখোলা পাড়া, মিশ্রি পাড়াসহ বিভিন্ন স্পটে প্রশাসনের চোখ ফাঁকি দিয়ে প্রভাবশালীদের ছত্রচ্ছায়ায় এসব আইনবিরোধী অসামাজিক ব্যবসা পরিচালনা করা হচ্ছে। মাঝে মধ্যে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে দু-চারজন গ্রেপ্তার হলেও নেপথ্যের গডফাদাররা থেকে যায় ধরাছোঁয়ার বাইরে। এতে ক্ষুব্ধ স্থানীয়রা।

কুয়াকাটা হোটেল-মোটেল মালিক সমিতির সভাপতি মো. শাহআলম প্রতিদিনের সংবাদকে জানান, পাঁচতারা হোটেল, হোটেল ওমর খান, হোটেল এ আর খান, বিচ ভ্যালি, হোটেল নেক্সট এসব হোটেলে প্রতিনিয়ত চলছে যৌন ব্যবসা। বিভিন্ন সময়ে প্রশাসন এসব হোটেল থেকে যৌনকর্মীদের গ্রেপ্তার করেছে। আমরা হোটেল মালিক সমিতির পক্ষ থেকে অনৈতিক ব্যবসা থেকে বিরত থাকতে বলা হলেও মানছে না একাধিক হোটেল মালিক। আমি মনে করি, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী যদি প্রতিদিন গেস্ট লিস্ট অনুযায়ী চিহ্নিত হোটেলগুলোতে অভিযান পরিচালনা করে তাহলেই সম্ভব মাদক ও যৌন ব্যবসা বন্ধ করা।

স্থানীয় বাসিন্দাদের দেওয়া তথ্য মতে, এলাকার চিহ্নিত লিয়াকত অনৈতিক ব্যবসার সঙ্গে জড়িত। তার অধীনে নিরালা ও ঝিলিক নামে দুটি আবাসিক হোটেল রয়েছে। হোটেল ব্যবসার আড়ালে সে মাদক ও নারী ব্যবসা পরিচালনা করছে। এছাড়াও হোটেল-মোটেল জোনে গড়ে ওঠা রেডিসন, ডলফিন, রনি, পায়রা এসব গেস্টহাউসের বেশির ভাগ ভাড়ায় পরিচালিত হয়। অপরাধীরা বাৎসরিক চুক্তিতে এককালীন ভাড়া নিয়ে পর্যটন ব্যবসার আড়ালে মাদক ও নারী ব্যবসার আখড়া তৈরি করেছে।

ট্যুর অপারেটর অ্যাসোসিয়েশন অব কুয়াকাটার (টোয়াক) সভাপতি রুমান ইমতিয়াজ তুষার জানান, বর্তমানে তৃতীয় শ্রেণীর কয়েকটি হোটেলের অসাধু ব্যবসায়ীরা কুয়াকাটার পরিবেশ নোংরা করছে। কোনভাবেই কুয়াকাটাতে নারী ও মাদক ব্যবসার প্রসার না ঘটে প্রশাসনকে সে ব্যাপারে কঠোর হতে হবে। আমরা মনে করি, পর্যটন এলাকায় এসব অবৈধ ব্যবসামুক্ত থাকলে পরিবেশ সুস্থ থাকবে এবং পর্যটক বেশি আসবে। যারা এই অবৈধ ব্যবসার সঙ্গে জড়িত তারা বেশিরভাগই লিজ নেওয়া হোটেল মালিক। যতটুকু জানতে পেরেছি বিভিন্ন জনের কাছ থেকে এরা চার-পাঁচ বছরের জন্য হোটেল লিজ নিয়ে থাকে। অল্প সময়ে কিভাবে লাভসহ ইনভেস্টের টাকা তুলে নিবে সেজন্য অবৈধ পন্থা অবলম্বন করে।

মহিপুর থানার অফিসার ইনচার্জ খোন্দকার মো. আবুল খায়ের প্রতিদিনের সংবাদকে জানান, কুয়াকাটার পরিবেশ সুস্থ রাখার জন্য মহিপুর থানা প্রশাসন সবসময়ই কাজ করে যাচ্ছে। আমাদের তৎপরতার কারণেই এতদিন এই ধরনের কোনো অভিযোগ ওঠেনি। বর্তমানে অপরাধ চক্রের বিরুদ্ধে আমাদের অভিযান অব্যাহত আছে। এরই ধারাবাহিকতায় গত ১০ মে হোটেল এ আর খান থেকে মালিক ও পতিতাসহ চারজন আটক করা হয়েছে। কুয়াকাটাকে মাদক ও পতিতা মুক্ত রাখতে মহিপুর থানা পুলিশ বদ্ধপরিকর। স্থানীয় বাসিন্দা এবং ব্যবসায়ীদের সহযোগিতা কামনা করছি।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close