reporterঅনলাইন ডেস্ক
  ২৯ জানুয়ারি, ২০২২

মেয়রের উন্নয়ন ভাবনা

নিরাপদ নগরায়ণই লক্ষ্য

গুরুত্বপূর্ণ নগর অবকাঠামো প্রকল্পের অধীন কুলাউড়া শহরে ৪ কোটি টাকা ব্যয়ে রাস্তা সংস্কার ও ড্রেন নির্মাণের কাজ চলছে। ২৪ কোটি টাকা ব্যয়ে ভূ-উপরিস্থ পানি শোধনাগার, সলিড ওয়েস্ট লেন্ডফিল সিস্টেম ও পয়োবর্জ্য ব্যবস্থাপনার কাজ শুরু হয়েছে। একমাত্র সমস্যা জলাবদ্ধতা নিরসনে গোগালী ছড়া উদ্ধার ও খননের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এভাবেই পরিকল্পিত ও নিরাপদ নগরায়ণের লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছি। প্রতিদিনের সংবাদকে কথাগুলো বলছিলেন কুলাউড়া পৌরসভার মেয়র সিপার উদ্দিন আহমদ। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন মৌলভীবাজার প্রতিনিধি ইশরাত জাহান চৌধুরী।

কুলাউড়া পৌরসভা স্থাপিত হয় ১৯৯৬ সালে। ২০১৭ সালে পৌরসভাটি ক শ্রেণিতে উন্নীত হয়। এর আয়তন ১০.৫ বর্গকিলোমিটার। ৯টি ওয়ার্ড এবং ২৬টি মহল্লা নিয়ে এ পৌরসভাটি গঠিত। ভোটার ২০ হাজার ৭৫৯ জন। পৌরসভা গঠনের পর ১৯৯৯ সালে প্রথম নির্বাচন হয়। ২০২১ সালের ১৬ জানুয়ারি অধ্যক্ষ সিপার উদ্দিন আহমদ আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী হিসেবে পঞ্চম মেয়র নির্বাচিত হন। তিনি ছাত্রলীগের উপজেলা কমিটির সাবেক আহ্বায়ক এবং উপজেলার ভাটেরা উচ্চবিদ্যালয় ও কলেজের অধ্যক্ষ।

অধ্যক্ষ সিপার ‘পরিবর্তন উন্নয়ন, পরিকল্পিত নিরাপদ নগরায়ণ’ এই স্লোগান নিয়ে একটি আধুনিক পৌরসভা গড়ার প্রত্যয়ে কাজ করে যাচ্ছেন। সর্বদা মানুষের পাশে থেকে তাদের সেবা করাটাই তার লক্ষ্য। কুলাউড়া পৌরসভার উন্নয়নে জানালেন তার বিভিন্ন পরিকল্পনার কথা।

মেয়র বলেন, একটি সুন্দর ও আধুনিক পৌরসভা বিনির্মাণ করে তার সেই স্লোগান বাস্তবায়ন করবেন। বর্তমানে কুলাউড়া শহরের প্রধান সমস্যা হচ্ছে যানজট। আমি নির্বাচিত হয়ে যানজট নিরসনে শহরের দুই প্রান্তে সিএনজিচালিত অটোরিকশার জন্য দুটি স্ট্যান্ড নির্মাণ করেছি। শহরে অটোরিকশার সংখ্যা অতিমাত্রায় বেড়ে যাওয়াও যানজট সৃষ্টির অন্যতম একটি কারণ। তাই সীমাবদ্ধতা এনে শহরে ৩০০ অটোরিকশা চলাচলের অনুমতি দেওয়া হয়েছে। তাছাড়া রাস্তা প্রশস্ততকরণ ও ফুটপাত নির্মাণের উদ্যোগ নিয়েছি। শহরের যানজট নিরসনে বিকল্প সড়ক তৈরির উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। দ্রুত বাস্তবায়ন করা হবে। যার ফলে হাল্কা যানবাহনগুলো বিকল্প পথে চলাচল করবে।

মেয়র আরো বলেন, পৌর শহরকে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে নিয়মিত অভিযান অব্যাহত আছে। শহরের ময়লা-আবর্জনা ফেলার জন্য পৌরসভার উদ্যোগে রাস্তার মোড়ে প্লাস্টিকের তৈরি ৫০টি মোবাইল ডাস্টবিন রাখা হয়েছে। শিক্ষা ক্ষেত্রে কুলাউড়াকে এগিয়ে নিয়ে যেতে পৌরসভার উদ্যোগে একটি প্রাথমিক ও একটি মাধ্যমিক বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে। বাস্তবায়নের কাজ চলছে। বিগত করোনাকালীন সময়ে বিভিন্ন সুরক্ষাসামগ্রী প্রদান ও শিক্ষার মান উন্নয়নে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান প্রধানদের সঙ্গে নিয়মিত সভা অব্যাহত আছে। করোনা পরবর্তী সময়ে পর্যাপ্ত স্বাস্থ্যবিধি মেনে পাঠদান প্রয়োগ হচ্ছে কিনা সেজন্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর ওপর নজর রাখা হয়েছে।

মেয়র আরো বলেন, দায়িত্ব গ্রহণের পর পৌরসভার বিগত মেয়ররা পৌরকর আদায়ে দারুণভাবে ব্যর্থ হলেও আমি আসার পর তা জোরদার করেছি। ভালো সাড়াও পাচ্ছি।

শহরতলীতে একটি আড়ত বাজার ও শহরের ভেতর দুটি কাঁচাবাজারকে বহুতল বিশিষ্ট ভবনে রূপ দেওয়ার পরিকল্পনা আছে। শহরের পূর্ব পাশে আরেকটি বাজার নির্মাণের উদ্যোগ নিয়েছি। আমি দায়িত্ব পাওয়ার পর প্রশস্ত পশুর হাট নির্মাণ করেছি। ২৪ বছরে কুলাউড়া পৌরসভায় কোনো বড় বাজেট বরাদ্দ হয়নি। বিগত সময়ে সারা দেশের আটটি পৌরসভা সরকারের মেগা প্রকল্প থেকে বঞ্চিত হয়েছে। এই তালিকায় ছিল কুলাউড়া। এ অবস্থার উন্নয়নে সার্বিক চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন তিনি। দায়িত্ব নিয়েছিলাম সাড়ে ৮ কোটি টাকা ঋণের বোঝা মাথায় নিয়ে। বিগত ২৫ বছরে পৌরসভায় উল্লেখযোগ্য উন্নয়ন হয়নি। শুধু গ্রেডের পরিবর্তন হয়েছে।

মেয়র আরো বলেন, পৌর নাগরিকদের জীবনমান উন্নয়নের লক্ষ্যে যানজট নিরসন, জলাবদ্ধতা দূর করা, রাস্তাঘাট-ড্রেন-কালভার্ট নির্মাণ, পৌরবাসীর নিরাপত্তা বিধান, শহরকে মাদক-সন্ত্রাসমুক্ত রাখা, শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ সৃষ্টি, খেলাধুলা ও সাংস্কৃতিক চর্চা সচল রাখা, চিত্তবিনোদনের ব্যবস্থা ইত্যাদি বাস্তবায়নের মাধ্যমে কুলাউড়াকে মানসম্পন্ন আধুনিক পৌরসভায় রূপান্তর করতে চাই।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close