খুলনা ব্যুরো

  ২৪ জানুয়ারি, ২০২১

মৃত বাঘ নিয়ে গবেষণা

চিড়িয়াখানায় স্বাভাবিক মৃত্যুবরণ করা জাতীয় পশু সুন্দরবনের রয়েল বেঙ্গল টাইগার দিয়েই গবেষণা কাজ শুরু করেছে খুলনা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়।

জানা গেছে, গত ২০ জানুয়ারি খুলনার জাহানাবাদ ক্যান্টনমেন্টের বন বিলাস চিড়িয়াখানায় বার্ধক্যজনিত কারণে একটি রয়েল বেঙ্গল টাইগার মারা যায়। চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষ মৃত বাঘটিকে মাটিচাপা না দিয়ে ভেটেরিনারি শিক্ষায় সহায়তার ইচ্ছা পোষণ করে। বিষয়টি সংশ্লিষ্ট বিভাগের শিক্ষকরা খুলনা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. মো. শহীদুর রহমান খানকে অবহিত করেন। উপাচার্য মৃত বাঘটি পরিদর্শন ও বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বার্থে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশনা প্রদান করেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলরের তৎক্ষণাৎ নির্দেশে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভেটেরিনারি, এনিম্যাল অ্যান্ড বায়োমেডিকেল সায়েন্সেস অনুষদের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের একটি মেডিকেল টিম চিড়িয়াখানায় মৃত বাঘটিকে পরিদর্শন করেন। পরিদর্শনকালে উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের এনিম্যাল নিউট্রিশন বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ড. মো. তসলিম হোসেন, ফিজিওলজি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ড. এম এ হান্নান এবং বিভিন্ন বিভাগের প্রভাষকদের মধ্যে ডা. পাপিয়া খাতুন, ডা. জান্নাত হোসেন, ডা. স্বরূপ কুমার কুন্ডু, ডা. শাহাবুদ্দীন আহমেদ, ডা. মো. শহীদুল্লাহ্, ডা. শারমিন জামান, নাজমুল হক অপুসহ ছাত্রছাত্রীরা। পরিদর্শন শেষে জাহানাবাদ ক্যান্টনমেন্ট কর্তৃপক্ষের অনুমতিক্রমে বাঘটিকে খুকৃবির ভেটেরিনারি, এনিম্যাল অ্যান্ড বায়োমেডিকেল সায়েন্সেস অনুষদের কাছে হস্তান্তর করা হয়। পরে বাঘটি দৌলতপুরে অবস্থিত খুকৃবির অস্থায়ী ক্যাম্পাসে আনা হয় এবং বাঘটির চামড়া, কংকাল ও অভ্যন্তরীণ গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গগুলো সংরক্ষণ করা হয়। যা ভবিষ্যতে ভেটেরিনারি, এনিম্যাল অ্যান্ড বায়োমেডিকেল সায়েন্সেস অনুষদের বিভিন্ন বিভাগের ব্যবহারিক পাঠদানে ও গবেষণার কাজে ব্যবহার করা হবে।

খুলনা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভেটেরিনারি, এনিম্যাল অ্যান্ড বায়োমেডিকেল সায়েন্সেস অনুষদের শিক্ষার্থী মাহিরুল হল শিলং ও পিয়াল রায় বলেন, দেশের নবীনতম কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী হিসাবে গবেষণার কাজে রয়েল বেঙ্গল টাইগার ব্যবহারের সুযোগ পাওয়া সত্যিই আনন্দদায়ক ও গর্বের।

খুলনা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিজিওলজি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ড. এম এ হান্নান বলেন, ভেটেরিনারি শিক্ষা ও গবেষণায় খুলনা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে নতুন দ্বার উন্মোচনের জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. মো. শহীদুর রহমান খান স্যারের প্রতি শিক্ষকরা চিরকৃতজ্ঞ। এই ধরনের বিভিন্ন শিক্ষামূলক কর্মকান্ডের মাধ্যমে খুকৃবি উচ্চতর কৃষি শিক্ষার সব স্তরে সামনের দিকে এগিয়ে যাবে। পাশাপাশি, ভবিষ্যতে শিক্ষা ও গবেষণায় এ ধরনের নতুন নতুন ইতিহাসের সাক্ষী হবে খুকৃবি বলেও বিশ্বাস করেন তিনি। এছাড়া খুকৃবির এনাটমি ও হিস্টোলজি বিভাগের প্রস্তাবিত ‘এনাটমি মিউজিয়াম’ বাস্তবায়িত হলে রয়েল বেঙ্গল টাইগারের পুরো দেহের কঙ্কালটিকে সর্বসাধারণের জন্য উন্মোচন করা হবে। অধিকন্তু, মৃত বাঘটি হস্তান্তরের জন্য বন বিলাস চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষকে ধন্যবাদ জানান তিনি।

খুলনা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. মো. শহীদুর রহমান খান বলেন, খুলনা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষা ও গবেষণায় নতুন ইতিহাসের সাক্ষী হবে। মৃত বাঘের কংকাল ও অভ্যন্তরীণ গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ প্রতঙ্গ বৈজ্ঞানিক প্রক্রিয়ায় সংরক্ষণ করা হবে। খুলনা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষায় দক্ষিণ এশিয়ার একটি সেরা বিশ্ববিদ্যালয়ে পরিণত করবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close