তাজুল ইসলাম পলাশ, চট্টগ্রাম ব্যুরো

  ১৭ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯

বদলে যাবে নগর : দূর হবে রাস্তায় চলাফেরার কষ্ট

চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের ১ হাজার ২৩০ কোটি টাকার প্রকল্প সরকারি অনুমোদনের তালিকায় রয়েছে। সড়ক ও যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নে গৃহীত সড়ক নেটওয়ার্ক প্রকল্পটি এখন চূড়ান্ত অনুমোদন শেষে মন্ত্রণালয়ে আছে। চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন এ তথ্য জানিয়ে বলেন, এ প্রকল্পগুলো বাস্তবায়ন হলে চট্টগ্রাম নগরের চেহারা বদলে যাবে। মানুষের জীবন যাপন ও চলাফেরা খুব সহজ হবে। শহরের সৌন্দর্যও বাড়বে অনেক গুণ। দূর হবে যানবাহনের জট।

তিনি বলেন, দ্রুত সময়ের মধ্যে ১২৩০ কোটি টাকার সড়ক নেটওয়ার্ক প্রকল্পের বাস্তবায়ন কাজ শুরু করা হবে। এই প্রকল্পের অধীনে নগরীর কাঁচা সড়ক পাকাকরণ, অনুন্নত সড়ক উন্নয়নসহ সড়কগুলোর সংস্কার ও মেরামত করা হবে। অগ্রাধিকার ভিত্তিতে সড়কগুলোর উন্নয়ন কাজ যাতে বাস্তবায়ন হয় সেজন্য আমরা পরিকল্পনা গ্রহণ করেছি।

এলক্ষ্যে নগরীর ৪১টি ওয়ার্ড এলাকায় সংস্কার বা মেরামতযোগ্য সড়কগুলো অগ্রাধিকার ভিত্তিতে উন্নয়নের পরিকল্পনা নিতে যাচ্ছে সংস্থাটি। এজন্য স্ব স্ব ওয়ার্ড কাউন্সিলরদের কাছ থেকে উন্নয়নযোগ্য সড়কের তালিকা চাওয়া হয়েছে। জানা যায়, নগরীর ওয়ার্ড এলাকার যোগাযোগ ব্যবস্থা উন্নতকরণের লক্ষ্যে সড়কগুলোকে ৩২২টি লটে ভাগ করা হয়েছে। জিও লেটার(সরকারি অনুমোদন আদেশ) পাওয়া মাত্র যাতে টেন্ডার কার্যক্রম সম্পন্ন করতে বিলম্ব না হয় সে লক্ষ্যে প্রস্তুতিও প্রায় শেষ পর্যায়ে। তবে প্রকৌশল বিভাগ সামগ্রিক সড়কের উন্নয়ন পরিকল্পনা সাজিয়েছে। কাউন্সিলরদের তালিকা অনুযায়ী অনুন্নত বা দ্রুত মেরামতযোগ্য সড়কগুলোতে কাজ শুরু করতে সহায়ক ভূমিকা রাখবে বলে মনে করেন সংশ্লিষ্টরা।

গত বছর সেপ্টেম্বর মাসে জাতীয় অর্থনীতি পরিষদের (একনেক) সভায় চট্টগ্রাম উন্নয়নে দুটি প্রকল্প অনুমোদন পায়। এর একটি চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন গৃহীত ১ হাজার ২৩০ কোটি টাকার সড়ক নেটওয়ার্ক প্রকল্প, অন্যটি বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড গৃহীত প্রকল্প। একনেকে অনুমোদিত সড়ক নেটওয়ার্ক প্রকল্পটিতে স্থানীয় সরকার বিভাগের নিয়মানুযায়ী ২০ শতাংশ ম্যাচিং ফান্ড প্রদানের শর্ত ছিল। কিন্তু একনেক সভায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে শূন্য শতাংশ ম্যাচিং ফান্ডে প্রকল্পটি অনুমোদন দেয়ার অনুরোধ জানান সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মেয়র নাছিরের অনুরোধে প্রকল্পটি সম্পূর্ণ সরকারি বরাদ্দে বাস্তবায়নের অনুমোদন দেন। চসিক প্রধান প্রকৌশলী লেফটেনেন্ট কর্নেল মহিউদ্দিন আহমদ এ ব্যাপারে বলেন, অনুমোদন পাওয়ার পরপরই নগরীর সড়ক নেটওয়ার্ক প্রকল্প বাস্তবায়ন নিয়ে আমাদের প্রস্তুতি শুরু হয়েছে। জনগণের ভোগান্তি, দুর্ভোগ বিবেচনা করে অনুন্নত সড়কের উন্নয়ন কাজ যাতে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে করা হয় সে পরিকল্পনা রয়েছে। তবে প্রকল্পের কাজ শুরুর ব্যাপারে এখনো জিও লেটার আসেনি। জিও লেটার পাওয়ার পর টেন্ডার কার্যক্রম শুরু হবে। প্রকল্পের আওতায় নগরীর ৪১ ওয়ার্ডজুড়ে ৭৫৫ কোটি ১৩ লাখ টাকা ব্যয়ে ৩২০.০৭ কিলোমিটার সড়ক উন্নয়ন করা হবে। ১৩৯ কোটি ১৬ লাখ টাকা ব্যয়ে ৩৭টি ব্রিজ নির্মাণ (এপ্রোচ রোডসহ) করা হবে। ১৬ কোটি ৪৯ লাখ টাকা ব্যয়ে ২১৫ মিটার দৈর্ঘ্যবিশিষ্ট এপ্রোচ রোডসহ কালভার্ট নির্মাণ করা হবে। বাস-ট্রাক টার্মিনালের অবকাঠামো উন্নয়নে সাড়ে ৭ কোটি টাকা, ড্রেনেজ ব্যবস্থাসহ ইয়ার্ড নির্মাণে ২৫ কোটি টাকা, টার্মিনালের জন্য ৮ দশমিক ১০ একর ভূমি ক্রয় বাবদ ব্যয় হবে ২৬০ কোটি টাকা এবং টার্মিনালের জমির উন্নয়ন বাবদ ৩ কোটি ৩৭ লাখ টাকা ব্যয় করা হবে। এসব মিলিয়ে ব্যয় হবে ১২০৬ কোটি ৭৩ লাখ টাকা। বাকি ২৪ কোটি টাকা প্রকল্পের অনির্ধারিত খরচ নির্বাহে ব্যয় করা হবে। নতুন রাস্তা নির্মাণের পর অধিকাংশ সময় চট্টগ্রাম ওয়াসা প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য রাস্তা কাটার কারণে সড়ক নেটওয়ার্ক উন্নয়ন অবকাঠামো দীর্ঘস্থায়ী হচ্ছে না। তাই প্রকল্পের ডিপিপিতে ওয়াসার চলমান প্রকল্পের কাজ সংশ্লিষ্ট এলাকাগুলো বর্জন করা হয়েছে।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close