বেড়া-সাঁথিয়া (পাবনা) প্রতিনিধি

  ২৮ এপ্রিল, ২০২৪

পাবনার বেড়া-সাঁথিয়া

রাতের আঁধারে জমির উর্বর  মাটি কেটে বিক্রি চক্রের 

সাঁথিয়ার মহিষকোলা গ্রামের তিন ফসলী জমি থেকে মাটি উত্তোলন -প্রতিদিনের সংবাদ

পাবনার বেড়া ও সাঁথিয়া উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় রাতের আঁধারে কৃষি জমির উর্বর মাটি কেটে বিক্রি করছে একটি চক্র। এভাবে কমছে ফসলি জমির পরিমাণ, নষ্ট হচ্ছে অল্প মাটিকাটা জমির উর্বরতা। ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে পরিবেশের ভারসাম্য। প্রশাসনের নজরদারি নেই বলে স্থানীয়দের অভিযোগ। এদিকে খোঁজ খবর নিয়ে আইনগত ব্যবস্থা নিবেন বলে জানান সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।

জানা গেছে, বেড়া উপজেলার আমিনপুরের সৈয়দপুর আত্রাই নদীতে চলছে দুইটি মাটি কাটার পয়েন্ট, রানীগ্রাম, ঢালারচর ইউনিয়নের কাসেম মোড়, দাঁতিয়া, নান্দিয়ারা, ঘোপসেলন্দা এবং সাঁথিয়া উপজেলার মহিষাখোলা, হুইখালি, চরভদ্রখোলা, মাছগ্রাম, মুক্তার বিলসহ বিভিন্ন এলাকার কৃষি জমি থেকে মাটি কাটা চলছে। আরো জানা গেছে, এসব মাটি যাচ্ছে ইটভাটা ও বাড়ি ভরাটের কাজে। গভীর গর্ত করে মাটি কেটে নেওয়ায় এরই মধ্যে শতাধিক একর কৃষি জমি জলাশয়ে পরিণত হয়েছে। গভীর গর্ত করে মাটি কাটায় ওই সব জমিতে কমছে ফসল উৎপাদন। এতে করে পরিবেশ ও প্রতিবেশের মারাত্মক ক্ষতি হচ্ছে।

বেড়া উপজেলার আমিনপুর গ্রামের স্থানীয় শিপন আহমেদ জানান, থানা এলাকায় ভেকু দিয়ে সন্ধ্যা থেকে সারারাত কাটা হয় কৃষি জমির মাটি। মাটি কাটার বিরুদ্ধে প্রশাসন কোন ব্যবস্থা নেয়নি। মাটি কাটার সঙ্গে জড়িত স্থানীয় কিছু প্রভাবশালী নেতারা। প্রশাসনকে ম্যানেজ করেই এ কাজ চলছে ধারনা তার।

সরেজমিনে সাঁথিয়ার মহিষাখোলা গ্রামে দেখা গেছে, মহাসড়কের পাশেই ভেকু দিয়ে তিন ফসলি জমি মাটি কেটে করা হচ্ছে গভীর পুকুর। এদিকে সাথিয়ার চর ভদ্রখোলা গ্রামে দেখা গেছে, জমি থেকে ভেকু দিয়ে মাটি কেটে প্রচুর ট্রলি ড্রাম টাক দিয়ে মাটি বিক্রি করছে। এই পয়েন্টে মাটিকাটার সঙ্গে যুক্ত আছে নন্ননপুর ইউনিয়নের ৩ নম্বর ইউপি সদস্য বাবু। তিনি জানায় এলাকার স্বার্থে পানি নিস্কাশনের জন্য ক্যানেল তৈরি করে দিচ্ছেন। কিছু মাটি মসজিদে দিচ্ছেন। তবে এ বিষয়ে উপজেলা প্রশসন বরাবর আবেদন করলেও অনুমতি পাইননি জানান তিনি।

ওই গ্রামের বাসিন্দা বিল্লাল জানান, জমি থেকে মাটি বিক্রির কারণে জমির ব্যাপক ক্ষতি হচ্ছে। এসব বন্ধ না করলে কৃষিজমি হারিয়ে যাবে।

সাঁথিয়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সঞ্জিব কুমার গোস্বামী বলেন, ফসলি জমির উপরিভাগের ৬ থেকে ১২ ইঞ্চির মধ্যে মাটির জৈব উপাদান থাকে। সেই মাটি কাটা হলে জমির জৈব উপাদান চলে যায়। এতে জমির স্থায়ী ক্ষতি হয়।

সাঁথিয়া উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) রিফাতুল ইসলাম জানান, কৃষি জমির মাটি কাটা দণ্ডনীয় অপরাধ। পুরাতন পুকুর পুর্ণসংস্কার করা যাবে, তবে সেটার আবেদন যাচাই করে আমাদের অনুমতি সাপেক্ষে। খোঁজ নিয়ে জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিবেন বলে তিনি জানান।

বেড়া উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মোছা. রিজু তামান্না জানান, উপজেলার সদর থেকে মাটি কাটার এই পয়েন্ট গুলো অনেক দুরে। রাতে অভিযান চালানো একটু কষ্টকর। তবুও খোঁজ খবর নিয়ে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিবেন বলে জানান তিনি।

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
পাবনার বেড়া,পাবনার সাঁথিয়া,তিন ফসলী জমি,জমি মাটি উত্তোলন,অবৈধভাবে মাটি কাটা
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close