টার্মিনালে বাস থাকলেও মিলছে না যাত্রী
মঞ্জুরুল ইসলাম জয়, ঢাকায় একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করেন। প্রতি বৃহস্পতিবার চলে যান গ্রামের বাড়ি জামালপুরে। ঢাকার পরিস্থিতি বিবেচনায় এ সপ্তাহে বাড়ি যাবেন না বলে সিদ্ধান্ত নেন। সে মোতাবেক মহাখালী বাস টার্মিনালে এসে টিকিট কেটে এখন এক ঘণ্টারও বেশি বসে অপেক্ষা করছেন তিনি।
বাসে বসে থাকা রাজীবের সঙ্গে কথা হয় এই প্রতিবেদকের। তিনি বলেন, ভাইরে, এক ঘণ্টার বেশি হয়ে গেছে। কিন্তু বাস ছাড়ছে না। বাসে যাত্রী পেয়েছে মাত্র তিনজন। কখন যাত্রী আসবে আর এরা গাড়ি ছাড়বে সেই অপেক্ষায় আছি।
অর্নবের টিকিট করা রাজীব পরিবহনের সুপারভাইজার বিপুল সরকার জানান, যাত্রী নেই। যাত্রীরা ভয়ে বের হয়নি। ঢাকা-জামালপুর রুটে ভোর ৪টা থেকে ৯টা পর্যন্ত মোট ১২টি বাস ছেড়েছে। এ পর্যন্ত ১০ জনের বেশি যাত্রী নিয়ে কোনো বাস যেতে পারেনি।
সরেজমিনে শুক্রবার (০৯ ডিসেম্বর) সকাল ৮টা থেকে মহাখালী বাস টার্মিনালে দেখা গেছে, ঢাকার পার্শ্ববর্তী জেলা বিশেষ করে, শেরপুর, ময়মনসিংহ, জামালপুর, নেত্রকোনা, টাঙ্গাইল, কিশোরগঞ্জ, নরসিংদী, ভৈরবগামী বাস বেশি ছেড়ে যাচ্ছে। তবে দূরপাল্লার মধ্যে সিরাজগঞ্জ, রাজশাহী, বগুড়া এবং রংপুর রুটের বাস তুলনামূলক কম ছেড়ে যাচ্ছে।
বেশ কয়েকটি বাস কাউন্টারে কথা বলে জানা গেছে, যে পরিমাণ বাস সড়কে নামানো হয়েছে, সেগুলোও খুব কম যাত্রী নিয়ে গন্তব্যে রওনা দিয়েছে। তবে দুপুরের পর যাত্রী বাড়বে বলে আশা করছেন সংশ্লিষ্টরা।
ঢাকা-নরসিংদী রুটে সকাল থেকে ৯টি বাস ছেড়েছে সম্রাট পরিবহন। কোনো বাসই ১০ জনের বেশি যাত্রী নিয়ে গন্তব্যে রওনা করতে পারেনি। বাসটির মহাখালির কাউন্টার ম্যানেজার আব্দুর রব বলেন, একটু আগে নরসিংদী থেকে একটি বাস তিনজন যাত্রী নিয়ে এসেছে। যাত্রীর অভাবে দীর্ঘসময় বসিয়ে রাখতে হচ্ছে বাস। অথচ অন্যান্য সময়ে প্রায় ১৫ মিনিটের মধ্যেই বাস ছেড়ে দিতে হয়।
ঢাকা-শেরপুর রুটে সুপ্রিম পরিবহনের ৪টি বাস যাতায়াত করে। শুক্রবার ঢাকা থেকে মোট তিনটি বাস ছেড়ে গেছে। সব মিলিয়ে ১৫ জন যাত্রী নিয়ে বাসগুলো ঢাকা ছেড়েছে বলে জানান কাউন্টার ম্যানেজার মকবুল।
মহাখালী বাস টার্মিনাল থেকে সবচেয়ে বেশি বাস ছেড়ে যেতে দেখা গেছে ঢাকা-ময়মনসিংহ রুটের সৌখিন এক্সপ্রেসকে। এ নিয়ে ১৫টি বাস ছেড়েছে কোম্পানিটি। টিকিট বিক্রেতা সোহাগ বলেন, যে পরিমাণ বাস আছে, সে পরিমাণ যাত্রী নেই। মানুষ মনে করছে বাস চলাচল বন্ধ রয়েছে।
মহাখালি সড়কে দায়িত্বে থাকা নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ট্রাফিক সার্জেন্ট বলেন, সকাল ৬টা থেকে এখানে আছি। শেরপুর, জামালপুর, টাঙ্গাইল ও ময়মনসিংহের বাস বেশি দেখা যাচ্ছে। সিরাজগঞ্জ, বগুড়াসহ ওইসব অঞ্চলের বাস খুব একটা দেখা যাচ্ছে না। গতকালের তুলনায় আজকে বাসের সংখ্যা কিছুটা কম দেখা যাচ্ছে।
পিডিএস/এমএইউ