টরেন্টো বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ডা. আয়েশা খতিব কাতারের দোহা থেকে উগান্ডার এন্তেবে শহরে উড়ে যাচ্ছিলেন। হঠাৎ প্লেনের ইন্টারকমে শোনা গেল ‘এখানে কি কোনো ডাক্তার আছেন?’ তা শুনেই সাড়া দেন তিনি।

তখন নীল নদের ৩৫ হাজার ফুট উপর দিয়ে উড়ে যাচ্ছে প্লেনটি। হঠাৎ কেন ডাক্তারের খোঁজা হচ্ছে তা জানতে এগিয়ে যান আয়েশা। যেয়ে দেখতে পান এক নারী সন্তান জন্ম দিতে চলেছেন। সৌদি আরব প্রবাসী উগান্ডার নাগরিক ওই নারীর ফুটফুটে একটি মেয়ে সন্তান হয়েছে।

উড়োজাহাজে সন্তান জন্ম দিয়ে প্রথমবার মা হওয়া ওই নারী তার নবাগত সন্তানের নাম রেখেছেন মিরাকল আয়েশা। মূলত ডা. আয়েশা খতিবের নামানুসারেই এই নামকরণ। ৩৫ সপ্তাহেই জন্ম নেয়া ওই শিশু সুস্থ রয়েছে বলে জানানো হয়েছে বিবিসির প্রতিবেদনে।

ডা. আয়েশা খতিব বিবিসি নিউজকে বলেন, ইন্টারকমে ডাক্তার খোঁজার বার্তা পেয়েই ছুটে যাই। যেয়ে দেখি রোগীকে ঘিরে ভিড় জমেছে। প্রথমে ভেবেছিলাম হার্ট অ্যাটাকের মতো কোনো জটিল পরিস্থিতি। কিন্তু পরে দেখি এক নারী সন্তান জন্ম দিতে চলেছেন।

‘আরও দেখি সেখানে একজন অনকোলোজি নার্স ও এক শিশুরোগ বিশেষজ্ঞও রয়েছেন। শিশুটি ভূমিষ্ঠ হয়ে যখন কান্না জুড়ে দিয়ে পৃথিবীর বুকে তার আগমনের জানান দিল তখন তাকে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে দেখলেই সেই শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ।’

তিনি আরও বলেন, যখন ওই শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ জানালেন সদ্যোজাত সুস্থ ও সবল তখন আমি তার মায়ের দিকে তাকালাম। দেখি সেও ঠিক আছে। তখন আমি বলে উঠি, ‘অভিনন্দন, মেয়ে হয়েছে।’ তা শুনে কাতার এয়ারওয়েজে ওই প্লেনটিতে থাকা যাত্রীরা করতালি দিয়ে স্বাগত জানালো নবাগত অতিথিকে।

‘এরপর সবচেয়ে মজার ঘটনাটি ঘটে। ওই মা তার সদ্যোজাত সন্তানের নাম আমার নামের সঙ্গে মিলিয়ে রাখলেন। তা শুনে আমিও উপহার হিসেবে আমার গলায় থাকা সোনার চেইনটি যার লকেটে আরবিতে আয়েশা লেখা রয়েছে সেটি শিশুটির গলায় পরিয়ে দিলাম।’

বিবিসির প্রতিবেদন অনুযায়ী, গত ৫ ডিসেম্বর এ ঘটনা ঘটলেও ব্যস্ততার কারণে এতদিন সেই ঘটনার ছবি শেয়ার করতে পারেননি আয়েশা। কানাডিয়ান চিকিৎসক এই অধ্যাপক আয়েশা উগান্ডায় স্থানীয় শ্রমিকদের স্বাস্থ্য বিষয়ক প্রশিক্ষণ দিয়ে থাকেন বলেও উল্লেখ করা হয়েছে প্রতিবেদনটিতে।