খুলনা ব্যুরো

  ২১ মে, ২০১৯

পাটকল শ্রমিকদের আন্দোলন এক সপ্তাহ স্থগিত

তিন শর্তে পাটকল শ্রমিকদের চলমান আন্দোলন এক সপ্তাহের জন্য স্থগিত করা হয়েছে। মঙ্গলবার সন্ধ্যা ৭টা থেকে শ্রমিকরা কাজে যোগদান করেছেন। খুলনা জেলা প্রশাসন, বিজেএমসি ও শ্রমিকদের ত্রিপক্ষীয় বৈঠকের মাধ্যমে টানা ১৫ দিন ধরে চলা স্থিতাবস্থা দূর হয়।

পাট খাতে প্রয়োজনীয় অর্থ বরাদ্দ, বকেয়া মজুরি-বেতন পরিশোধ, জাতীয় মজুুরি ও উৎপাদনশীলতা কমিশনের রোয়েদাদ ২০১৫ কার্যকর, অবসরপ্রাপ্ত শ্রমিক-কর্মচারীদের পিএফ ও গ্র্যাচুইটির অর্থ পরিশোধ, চাকরিচ্যুত শ্রমিক-কর্মচারীদের পুনর্বহাল, সব মিলে সেটআপের অনুকূলে শ্রমিক-কর্মচারীদের শূন্য পদের বিপরীতে নিয়োগ ও স্থায়ীকরণসহ ৯ দফা দাবিতে দীর্ঘ দিন ধরে রাজপথে আন্দোলন করে পাটকলের প্রায় অর্ধলক্ষাধিক শ্রমিক।

পাটকল শ্রমিক লীগের ডাকে সর্বশেষ রাষ্ট্রায়ত্ত ২৬ পাটকলে গত ১৫ এপ্রিল থেকে ৯৬ ঘণ্টা মিল ধর্মঘটসহ ৪ ঘণ্টা রাজপথ রেলপথ অবরোধ কর্মসূচি পালিত হয়। এ কর্মসূচির প্রথম দিনেই রাজধানীর শ্রম অধিদফতরে পাটকল শ্রমিক লীগ, সিবিএ-নন সিবিএ নেতাসহ বিজেএমসির চেয়ারম্যানের সঙ্গে জরুরি বৈঠকে বসেন শ্রম ও কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী বেগম মন্নুজান সুফিয়ান। বৈঠকে দীর্ঘ ৫ ঘণ্টা আলোচনা শেষে বিজেএমসির চেয়ারম্যান শাহ মোহাম্মদ নাসিম স্বাক্ষরিত একটি চুক্তি হয়।

সেই চুক্তি অনুযায়ী ২৫ এপ্রিলের মধ্যে মজুরি ও ৩ মাসের বেতন পরিশোধে বিজেএমসি ব্যর্থ হলে রাষ্ট্রায়ত্ত ২৬টি পাটকলে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। শ্রমিকদের পাওনা পরিশোধ না হওয়ায় তাদের মধ্যে চাপা ক্ষোভ দেখা যায়।

বিক্ষুব্ধ শ্রমিকরা ৫ মে দুপুর ২টায় স্টার, সন্ধ্যা ৬টায় প্লাটিনাম, রাত ৮টায় ক্রিসেন্ট, রাত ৯টায় আলীম, ইস্টার্ন, কার্পেটিং, জেজেআই ও রাত সাড়ে ৯টায় খালিশপুর জুট মিলের উৎপাদন বন্ধ রাখে। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত শ্রমিকদের কর্মবিরতির পাশাপাশি ২২ মে সকাল ৮টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত প্রতিদিন ৬ ঘণ্টা রাজপথ রেলপথ অবরোধ কর্মসূচির ঘোষণা দেয় পাটকল শ্রমিক লীগ।

অবরোধ ঘোষণার পরপরই জেলা প্রশাসন শ্রমিক নেতাদের সঙ্গে দ্রুত বৈঠকের সিদ্ধান্ত নেয়। মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ৯টায় জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে পাটকল শ্রমিক লীগ, সিবিএ-নন সিবিএ, ৯ পাটকলের প্রকল্প প্রধানদের সঙ্গে বৈঠকে বসেন জেলা প্রশাসক। দীর্ঘ ৫ ঘণ্টার এ বৈঠকে শ্রমিক নেতারা তাদের ৯ দফা বাস্তবায়নের দাবি জানান। এ সময় বিজেএমসি ও মিলের ফান্ডের সার্বিক পরিস্থিতি তুলে ধরেন বিজেএমসির খুলনা অঞ্চলের লিয়াজোঁ কর্মকর্তা।

পরে শ্রমিক নেতারা জানান, চলতি সপ্তাহে দুটি বকেয়া এবং আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে সব বকেয়া মজুরি প্রদান। এছাড়া একদিনের মধ্যে বন্ধ মিলগুলোতে জরুরিভাবে কর্মরত শ্রমিকদের খাতায় মজুরি কমিশন বসানো, এক সপ্তাহর মধ্যে পে স্লিপ প্রদান করা শর্তে আন্দোলন স্থগিত করা যেতে পারে। শ্রমিক নেতাদের এই শর্ত জেলা প্রশাসক মেনে নিলে কর্মসূচি ৭ দিনের জন্য স্থগিত ঘোষণা করেন পাটকল শ্রমিক লীগের নেতারা।

অবশেষে ৩ শর্ত মেনে নেয়ার একটি চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন খুলনা জেলা প্রশাসক।

পিডিএসও/তাজ

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
পাটকল শ্রমিক,শ্রমিকদের আন্দোলন,স্থগিত
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close