নওগাঁ প্রতিনিধি
স্বাধীনতার মাসে পাকিস্তানি সেনার আদলে ভাস্কর্য!
নওগাঁর মান্দায় নির্র্মিত ভাস্কর্য ঘিরে সমালোচনার ঝড় উঠেছে। ভাস্কর্যটি ‘পাকিস্তানি সেনা’র আদলে করা হয়েছে এমন মন্তব্য আসার পর থেকেই এলাকাবাসীর মধ্যে বিরূপ প্রতিক্রিয়া শুরু হয়েছে। এ ছাড়া স্বাধীনতার মাসেই এ ধরনের ভাস্কর্য নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও শুরু হয়েছে ব্যাপক সমালোচনা। দ্রুত ভাস্কর্যটি অপসারণ করে মুক্তিযোদ্ধাদের স্মৃতি সংবলিত ভাস্কর্য স্থাপনেরও দাবি জানানো হয়েছে।
বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি (এডিপি) বাস্তবায়নে ২০১৫-১৬ ও ২০১৬-১৭ অর্থ বছরে ১৫ লাখ ব্যয় এ ভাস্কর্যটি উপজেলার প্রসাদপুর বাজারের চৌরাস্তা মোড়ে গোলচত্বরে তৈরি করা হয়েছে। গোলচত্বরে বেষ্টনীর মধ্যে পিলারের ওপর পূর্ব-পশ্চিম করে দুটি মূর্তি স্থাপন করা আছে। যার দুটি পাকিস্তানি সেনাদের আদলে তৈরি। কোমরে বাউন্ডলি, পরনে পাকিস্তানি পোশাক ও মাথায় হেলমেট। একজন দুই হাতে বন্দুক উঁচু করে মাথার ওপর ধরে আছে। অন্যজন বন্দুক আড়াআড়িভাবে ধরে আছে।
১৯৭১ সালে যুদ্ধে ৩০ লাখ শহীদের রক্তের বিনিময়ে আজকের বাংলাদেশ। পাক সেনারা নিরীহ বাঙালিদের ওপর ভারী অস্ত্র নিয়ে হামলা চালিয়েছে। অসংখ্য মা-বোন হারিয়েছেন তাদের সম্ভ্রম। যারা বাঙালিদের ওপর এত নির্যাতন করেছে তাদের প্রতিকৃতি কেন এ বাংলায়। তাই পাকিস্তানি সেনাদের ভাস্কর্য মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে লজ্জায় মাথা নিচু হয়ে আসছে মান্দাবাসীর। মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বিশ্বাসী মানুষের পক্ষে যা মেনে নেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। এ নিয়ে মান্দাবাসীর মধ্যে বিরূপ প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে।
সুলতান আহমেদ নামে একজন তার ফেসবুক আইডিতে লিখেছেন, ‘কিছুই না, এই প্রতিকৃতি অতি দ্রুত সরাতে হবে। স্বাধীনতার মাসে এ ধরনের প্রতিকৃতি মাথা তুলে দাঁড়িয়ে থাকবে তা হয় না।’
মান্দা থানা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি ও মুক্তিযুদ্ধকালীন কমান্ডার মুক্তিযোদ্ধা অ্যাডভোকেট আবদুল মান্নান বলেন, আমি এ ভাস্কর্যের তীব্র প্রতিবাদ জানাই। এটা মুক্তিযোদ্ধার আদলে তৈরি করা হয়নি। এটা পাকিস্তানি সেনাদের আদলে তৈরি হয়েছে; যাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে দেশ স্বাধীন করেছি। তাদের মূর্তি কেন এখানে তৈরি করা হয়েছে। এটি সত্যিই দুঃখজনক। এটা দ্রুত অপসারণের দাবি জানাই।
নওগাঁ জেলা বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ডা. ইকরামুল বারী টিপু বলেন, এটা আসলে মুক্তিযুদ্ধের ভাস্কর্য কি না, তা এখনো কর্তৃপক্ষ ঘোষণা করেননি। তবে এটা যে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের স্মারক মনে করার মতো না।’ নওগাঁ জেলা পরিষদের নির্বাহী কর্মকর্তা মাহবুবুর রহমান বিষয়টি দেখার পর মন্তব্য করবেন বলে জানান।
পিডিএসও/তাজ