নিজস্ব প্রতিবেদক

  ২৫ ডিসেম্বর, ২০১৮

সরকারি চাকরিজীবীদের

গৃহনির্মাণ ঋণ পাওয়ার বয়সসীমা বাড়ছে না

সরকারি চাকরিজীবীদের গৃহঋণ পাওয়ার বয়সসীমা বাড়ানোর একটি প্রস্তাব নাকচ করে দিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত। ব্যাংক থেকে সরকারি চাকরিজীবীদের গৃহনির্মাণ ঋণ নেওয়ার ক্ষেত্রে বয়সসীমা ৫৬ নির্ধারণ করে দেওয়া হয়েছে। তবে সম্প্রতি এই বয়সসীমা ৫৮ বছর করার একটি প্রস্তাব অর্থমন্ত্রীর কাছে পাঠানো হলে তিনি তা বাতিল করে দেন। ওই প্রস্তাবের ওপর অর্থমন্ত্রী মন্তব্য করেছেন, এখন কোনো প্রস্তাব বাঞ্ছনীয় নয়। অর্থ বিভাগ সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।

জানা যায়, প্রস্তাবটি নাকচ করায় সরকারি চাকরিজীবীদের যাদের বয়স ৫৬ বছর পার হয়েছে তারা গৃহনির্মাণ ঋণ পাওয়ার জন্য আবেদন করতে পারবেন না। গৃহনির্মাণ নীতিমালা অনুযায়ী সরকারি চাকরিজীবীরা ৫ শতাংশ সরল সুদে গৃহনির্মাণের জন্য সর্বনি¤œ ৩০ লাখ এবং সর্বোচ্চ ৭৫ লাখ টাকা ঋণ পাওয়ার জন্য আবেদন করতে পারবেন।

সূত্র জানায়, অর্থমন্ত্রীর কাছে গৃহনির্মাণ ঋণ পাওয়ার বয়স বাড়ানো সংক্রান্ত প্রস্তাবে বলা হয়, সরকারি কর্মচারীদের ব্যাংকিং ব্যবস্থার মাধ্যমে গৃহনির্মাণ ঋণ প্রদান নীতিমালা-২০১৮’ পরিপত্রের অনুচ্ছেদ ৩ (খ) তে ঋণ প্রাপ্তির যোগ্যতার অংশে বলা হয়েছে, ‘গৃহনির্মাণ ঋণ প্রাপ্তির জন্য সর্বোচ্চ বয়সসীমা ৫৬ বছর।’ বর্তমানে সরকারি চাকরিজীবীদের চাকরি চলাকালীন বসয়সীমা ৫৯ বছর।

প্রস্তাবে বলা হয়, গৃহনির্মাণ ঋণ নীতিমালা অনুযায়ী ঋণপ্রাপ্তির সর্বোচ্চ বয়সসীমা ৫৬ বছর হওয়ায় ১ জুলাই তারিখে ৫৬ বছর (পরিপত্র জারির তারিখে) অতিক্রান্ত হয়েছে এমন অনেক কর্মকর্তাই এ ঋণের সুযোগ গ্রহণ করতে পারছেন না। এ ক্ষেত্রে নীতিমালায় ঋণপ্রাপ্তির সর্বোচ্চ বসয়সীমা ৫৬ বছরের পরিবর্তে ৫৮ বছর করা হলে সরকারি বহু কর্মচারী এ ঋণ সুবিধার মাধ্যমে উপকৃত হবেন মর্মে প্রতীয়মান হয়।

প্রস্তাবে বলা হয়েছে, প্রাধিকারপ্রাপ্ত সরকারি কর্মকর্তাদের গাড়িসেবা নগদায়ন নীতিমালা অনুযায়ী কর্মকর্তাদের বিশেষ অগ্রিম প্রাপ্তির সুবিধা ৫৮ বছর নির্ধারিত রয়েছে। সে আলোকে গৃহনির্মাণ ঋণ প্রদান নীতিমালায় বয়স ৫৮ বছর নির্ধারণ করা হলে উভয় ক্ষেত্রে সামঞ্জস্য রক্ষা করা সম্ভব হবে।

প্রস্তাবটি অর্থমন্ত্রীর কাছে অনুমোদনের জন্য পাঠানো হলে তিনি সেখানে লিখেন, ‘এমন কোনো পরিবর্তন বাঞ্ছনীয় নয়, নতুন সরকার আসলে সম্ভবত অবসরের বয়স ইত্যাদি সম্বন্ধে নয়া নীতিমালা আসবে। তখন এই বিষয়ে পরিবর্তন আনা যাবে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে অর্থবিভাগের এক কর্মকর্তা বলেন, সরকারি প্রশাসনে কর্মরত অনেক অতিরিক্ত সচিবের বয়স ৫৬ বছর অতিক্রান্ত হয়েছে। তাদের অনুরোধেরই বয়স বাড়ানোর একটি প্রস্তাব আনা হয়েছিল। কিন্তু অর্থমন্ত্রীর এ মতামত পাওয়ার পর আপাতত ঋণ প্রাপ্তির বয়স বাড়ানো সম্ভব হচ্ছে না। তবে আগামী বছরে নতুন যে সরকার আসুক না কেন বয়স বাড়ানোর প্রস্তাবটি আবার উত্থাপন করার সুযোগ রয়েছে।

গত ৩০ জুলাই সরকারি কর্মচারীদের স্বল্পসুদে বর্ধিত হারে গৃহনির্মাণ ঋণ নীতিমালা প্রজ্ঞাপন আকারে জারি করে অর্থ বিভাগ। প্রজ্ঞাপনের অনুসারে জাতীয় বেতন স্কেলের গ্রেড ভেদে সর্বোচ্চ ৭৫ লাখ এবং সর্বনিম্ন ৩০ লাখ টাকা পর্যন্ত ঋণ নিতে পারবেন একজন সরকারি চাকরিজীবী।

এ ঋণের মোট সুদহার ১০ শতাংশ হবে। তবে এ ১০ শতাংশ সুদের ৫ শতাংশ সরকার ভর্তুকি হিসেবে দিবে এবং বাকি ৫ শতাংশ ঋণগ্রহীতা পরিশোধ করবে। ছয় মাস (ফ্ল্যাট ক্রয়ের ক্ষেত্রে) থেকে এক বছরের (বাড়ি নির্মাণ) গ্রেস পিরিয়ডসহ (এই সময়ের মধ্যে ঋণের কিস্তি পরিশোধ করা লাগবে না) ২০ বছর মেয়াদে এ ঋণ পরিশোধ করতে হবে। তবে কোনো সরকারি চাকুরের বিরুদ্ধে কোনো বিভাগীয় মামলা বা দুর্নীতির মামলা থাকলে ওই মামলা নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত তিনি এই ঋণ পাবেন না।

পিডিএসও/তাজ

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
সরকারি চাকরিজীবী,গৃহঋণ,বয়সসীমা,গৃহঋণ পাওয়ার বয়সসীমা
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close