পলাশ (নরসিংদী) প্রতিনিধি

  ০৬ জুলাই, ২০২০

অস্তিত্বের সংকটে কিন্ডারগার্টেন দুরবস্থায় চার শতাধিক শিক্ষক

পলাশে ৬০ কিন্ডারগার্টেন স্কুলের শিক্ষাজীবন হুমকিতে পড়তে পারে

করোনায় অস্তিত্ব সংকটে পড়েছে নরসিংদীর পলাশ উপজেলার বিভিন্ন কিন্ডারগার্টেন স্কুলগুলো। অর্থ সংকটে পড়ে একে একে বন্ধ হয়ে যাচ্ছে অধিকাংশ স্কুল। এতে মানবেতর জীবন-যাপন করছেন উপজেলার কিন্ডারগার্টেনের ৪ শতাধিক শিক্ষক। এদিকে এসব প্রতিষ্ঠানে অধ্যয়নরত শিশুদের শিক্ষা জীবন নিয়ে অনিশ্চয়তায় পড়েছে বলে মনে করছেন অভিভাবকরা।

উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা যায়, পলাশে প্রায় ৬০টি কিন্ডারগার্টেন স্কুল রয়েছে। এসব স্কুল নিজ নিজ প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপনায় পরিচালিত হয়ে থাকে। যে কারণে এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে সরকারিভাবে তেমন কোনো তদারকি করা হয় না।

উপজেলার বিভিন্ন কিন্ডারগার্টেন স্কুলগুলো ঘুরে দেখা যায়, করোনা সংকটের কারণে সবগুলো কিন্ডারগার্টেন স্কুলই বন্ধ হয়ে রয়েছে। নানা রঙে সাজানো-গুছানো কিন্ডারগার্টেনগুলোও অব্যবস্থাপনায় পাল্টে গেছে স্কুলের চিত্র। সেইসঙ্গে এসব স্কুলে শিক্ষাদানে জড়িত শিক্ষক-শিক্ষিকারা বেকার হয়ে মানবেতর জীবন-যাপন করছে।

পলাশ কিন্ডারগার্টেন এন্ড কোচিং একাডেমীর সভাপতি জাহিদুল ইসলাম জাহিদ। জানতে চাইলে প্রতিদিনের সংবাদকে তিনি বলেন, ছাত্রছাত্রীদের কাছ থেকে নেওয়া মাসিক বেতনের টাকায় কিন্ডারগার্টেন স্কুলগুলোর সমস্ত খরচ চলে। দেশে করোনার আসার পর সরকারি সিদ্ধান্তে সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দেওয়া হয়। ফলে উপজেলার কিন্ডারগার্টেনগুলোও বন্ধ হয়ে যায়। যে কারণে অধিকাংশ স্কুলই ঘর-ভাড়া ও বিদ্যুৎ বিলসহ প্রতিষ্ঠানের বিভিন্ন খরচ বহন করতে গিয়ে বিপাকে পড়েছে।

উপজেলা কিন্ডারগার্টেন ডেভেলপমেন্ট এসোসিয়েশনের প্রতিষ্ঠাতা সম্পাদক মোস্তফা কামাল। তিনি বলেন, কিন্ডারগার্টেন স্কুলগুলোর সঙ্গে জড়িত অধিকাংশ শিক্ষক-শিক্ষিকাই নি¤œবিত্ত ও নি¤œ মধ্যবিত্ত পরিবারের। এ সব শিক্ষক-শিক্ষিকা তাদের লেখাপড়ার খরচ যোগানোর পাশাপাশি এসব কিন্ডারগার্টেনে শিক্ষকতা করে পরিবারের সংসার চালাতে সহায়তা করে থাকে। তাছাড়া অধিকাংশ শিক্ষকই কোচিং সেন্টার চালিয়ে তাদের জীবিকা নির্বাহ করে থাকে। কিন্তু দেশে করোনা সংকটের কারণে বর্তমানে তারা বাড়ি ভাড়া ও সংসার খরচ দিতে গিয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছে।

সেইসঙ্গে এসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদেরও তাদের শিক্ষা জীবন নিয়ে অনেকটা অনিশ্চয়তার ভিতরে পড়েছে। এখন এই স্কুলগুলো যদি টিকিয়ে না রাখা যায়, তবে ভবিষ্যতে এসব শিক্ষার্থীদের পাঠদানের ব্যবস্থা করতে গিয়ে প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোকেও অনেকটা চাপ নিতে হবে। যে কারণে এসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গুলোকে টিকিয়ে রাখার জন্য অতি দ্রুত সরকারি প্রণোদনার দাবি জানান তিনি।

পলাশ উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মাহফুজা খান ইফসুফজী। জানতে চাইলে প্রতিদিনের সংবাদকে তিনি বলেন, সরকারিভাবে কিন্ডারগার্টেন স্কুলগুলোর জন্য কোনো প্রণোদনা সিদ্ধান্ত হয়নি। সরকারিভাবে যদি এমন কোনো নির্দেশনা আসে। তবে কিন্ডারগার্টেনগুলোর তালিকা তৈরি করা হবে।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close