রাকিবুল ইসলাম রাকিব, গৌরীপুর (ময়মনসিংহ)

  ১০ এপ্রিল, ২০১৯

গৌরীপুর রেলওয়ে

রেলওয়ের জায়গা দখল করেন মসিক কর্মচারী

ময়মনসিংহের গৌরীপুর রেলওয়ের সরকারি জমি মাটি ভরাট করে দখল করার অভিযোগ পাওয়া গেছে ময়মনসিংহ সিটি কর্পোরেশনের (মসিক) সহকারী এসেসর আসাদুজ্জামান রমেন্সের বিরুদ্ধে। চলতি বছরের মার্চ মাসের শুরুর দিক থেকে গৌরীপুর পৌর শহরের বাড়িওয়ালাপাড়া সংলগ্ন রেলওয়ে কোয়ার্টার এলাকার একটি ডোবা মাটি ফেলে ভরাটের কাজ শুরু করেন মসিকের ওই কর্মচারী। অভিযোগ আছে গৌরীপুর রেলওয়ের উধ্বর্তন উপসহকারি প্রকৌশলী ওয়াহিদুল ইসলামের সাথে যোগসাজসে ইতিমধ্যে মাটি ফেলে প্রায় ত্রিশ লাখ টাকার জমি দখল করা হয়েছে। প্রকাশ্যে মাটি ফেলে এভাবে রেলওয়ের জায়গা দখল করা হলেও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ ভরাটকৃত মাটি উচ্ছেদ কিংবা দখলদারের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করেননি।

স্থানীয়রা জানান, রেলওয়ের জমি দখলের খবর পেয়ে রেলওয়ে পুলিশ মাটি ভরাট করতে বাধা দিলে কাজ সাময়িক বন্ধ থাকে। কিন্তু পরবর্তীতে রেলওয়ে উর্ধ্বতন সহকারি প্রকৌশলী ওয়াহিদুল ইসলামের সাথে গোপন আঁতাত করে পুনরায় মাটি ভরাটের কাজ শুরু করেন আসাদুজ্জামান।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে প্রকৌশলী ওয়াহিদুল ইসলাম বলেন, রমেন্স নামে এক লোক মাটি ভরাট করে রেলওয়ের জায়গা দখল করছে বিষয়টি জানতে পেরে আমি রেলওয়ে পুলিশ পাঠিয়ে কাজ বন্ধ করে দেই। পরবর্তীতে আবার ভরাট কাজ শুরু হয়েছে কিনা আমার জানা নেই। আর তার সাথে আমার কোনো আঁতাত হয়নি।

স্থানীয় ও রেলওয়ে সূত্রে জানা গেছে, গৌরীপুর রেলওয়ের উধর্বতন উপসহকারি প্রকৌশলীর কার্যালয়ের ১০০ গজ পূর্ব দিকে বাড়িওয়ালা পাড়ায় মসিক কর্মচারী আসাদুজ্জামানের কয়েক শতক জায়গা রযেছে। চলতি বছরের মার্চ মাসে নিজের ওই জায়গা ঘেঁষা রেলওয়ের একটি ডোবা মাটি ফেলে ভরাট কাজ শুরু করেন। দখলকৃত ওই জায়গায় মাটি ভরাট করতে গিয়ে স্থানীয় এক বাসিন্দার ব্যক্তিগত জমির বাঁশঝাড় কেটেছেন মসিকের ওই কর্মচারী।

গতকাল মঙ্গলবার খোঁজ নিয়ে দেখা যায়, আসাদুজ্জামান তার জমি ঘেঁষে রেলওয়ের ডোবার দুপাশে মাটি ফেলে অনেকাংশ দখল করেছেন। অবৈধভাবে মাটি ভরাট করে রেলওয়ের জায়গায় উচু করে রাস্তা নির্মাণের কারণে অনেকের বাড়ির প্রবেশপথও বন্ধ হয়ে গেছে।

স্থানীদের অভিযোগ, রেলওয়ের ডোবার এক কোটি টাকা মূল্যের কয়েক কাঠা জমি দখল করার পরিকল্পনা নিয়ে মাটি ভরাটের কাজ শুরু করেছেন আসাদুজ্জামান। ইতিমধ্যে এক লাখ টাকার মাটি ভরাট করে এক কাঠা জায়গা দখল করা হয়েছে। অবৈধ ভাবে মাটি ভরাট করায় ডোবার পানি চলাচলের রাস্তা বন্ধ হয়ে গেছে। এতে আসছে বর্ষায় এখানে জলাবদ্ধতা হতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে আসাদুজ্জামান রমেন্স বলেন, আমি জায়গা দখল করিনি। জনগণের স্বার্থে মাটি ফেলে রাস্তা করে দিয়েছি। পুলিশ বাধা দিয়েছে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, কেউ আমাকে বাঁধা দেয়নি। আর এই রকম একটু-আধটু জায়গা কমবেশি সবাই দখল করে।

এদিকে ময়মনসিংহ রেলওয়ের সহকারি নির্বাহী প্রকৌশলী সুকুমার বিশ্বাস বলেন, রেলওয়ের জায়গা দখলের বিষয়টি জানতে পেরেছি। আমাদের লোকজন বাধা দিয়ে মাটি ভরাট কাজ বন্ধ রেখেছে। তারপরও কেউ যদি জোরপূর্বক জায়গা দখল করে, আমরা তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নিবো।

অপরদিকে ঢাকা বিভাগীয় রেলওয়ের এস্টেট অফিসারের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, দখলদারের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। পাশাপাশি রেলওয়ের প্রকৌশলী ম্যানেজ হয়েছে কি না সেটাও খতিয়ে দেখা হবে।

এ সময় এ প্রতিবেদক এস্টেট অফিসারের নাম জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি দখলদারের বিরুদ্ধে অ্যাকশন নিবো, পত্রিকায় আমার নাম দিয়ে বক্তব্য দেওয়ার দরকার নেই। আর যদি বেশি প্রয়োজন হয় তাহলে একদিন ঢাকায় আসেন।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close