নিজস্ব প্রতিবেদক

  ২৪ ফেব্রুয়ারি, ২০২০

খালেদার শারীরিক অবস্থা জানতে চান হাইকোর্ট

দুর্নীতি মামলায় দ-িত খালেদা জিয়ার চিকিৎসা সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের নির্দেশনা অনুযায়ী হচ্ছে কি না, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কাছে তা জানতে চেয়েছেন হাইকোর্ট। বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সর্বশেষ চিকিৎসা বা শারীরিক অবস্থা জানতে চেয়ে এবং তার জামিন চেয়ে করা দুটি আবেদনের শুনানি করে বিচারপতি ওবায়দুল হাসান ও বিচারপতি কেএম জহিরুল হকের হাইকোর্ট বেঞ্চ গতকাল রোববার আদেশ দেন। খালেদার জামিন আবেদন নাকচ করে গত ১২ ডিসেম্বর এক আদেশে আপিল বিভাগ বলেছিল, বিএনপি চেয়ারপারসনের সম্মতি থাকলে বঙ্গবন্ধু মেডিকেলের মেডিকেল বোর্ডের পরামর্শ অনুযায়ী তাকে দ্রুত ‘অ্যাডভানসড ট্রিটমেন্ট’ দেওয়ার পদক্ষেপ নিতে হবে। সে অনুযায়ী উন্নত চিকিৎসা নিতে খালেদা জিয়া সম্মতি দিয়েছেন কি না, দিয়ে থাকলে তার চিকিৎসা শুরু হয়েছে কি না, শুরু হয়ে থাকলে সর্বশেষ কী অবস্থাÑ তা আগামী বুধবার বিকাল ৫টায় সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রারের জেনারেলের মাধ্যমে আদালতকে জানাতে বঙ্গবন্ধু মেডিকেলের উপাচার্যকে নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। আদালত বলেছেন, আগামী বৃহস্পতিবার আবার এ মামলা পরবর্তী আদেশের জন্য কার্যতালিকায় আসবে।

খালেদা জিয়ার জামিন আবেদনের পক্ষে এদিন শুনানি করেন আইনজীবী জয়নুল আবেদীন। তার সঙ্গে ছিলেন আইনজীবী সগির হোসেন লিয়ন। আইনজীবী খন্দকার মাহবুব হোসেন, মওদুদ আহমদ, নিতাই রায় চৌধুরী, মাহবুব উদ্দিন খোকন, কায়সার কামালের পাশাপাশি বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরও আদালতে উপস্থিত ছিলেন।

রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম। এছাড়া দুদকের আইনজীবী খুরশিদ আলম খান ছিলেন আদালতে। শুনানিতে জয়নুল আবেদীন বলেন, আমরা একমাত্র স্বাস্থ্যগত কারণে আবার আপনার (এই আদালতের) কাছে এসেছি। খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্যগত অবস্থা আগের থেকে অনেক খারাপ। তিনি পাঁচ মিনিটও দাঁড়িয়ে থাকতে পারেন না। নিজ হাতে খেতেও পারেন না। খাবার খেলেও তিনি প্রায়ই বমি করেন। তার পারিবারিক সদস্যরা দেখা করে এসে গণমাধ্যমকে বলেছেন খালেদা জিয়ার অবস্থা অত্যন্ত খারাপ। এভাবে থাকলে তার কখন কী হয়ে যায় তা বলা যাচ্ছে না। তাই আমরা তার জামিন প্রার্থনা করছি।

খালেদা জিয়ার সর্বশেষ শারীরিক অবস্থার প্রতিবেদন দিতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের প্রতি নির্দেশনা চেয়ে করা আবেদন তুলে ধরে জয়নুল আবেদীন বলেন, প্রয়োজনে তার স্বাস্থ্যগত সর্বশেষ অবস্থা কী, সে বিষয়ে একটা প্রতিবেদন চাইতে পারেন।

অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম জামিনের বিরোধিতা করে শুনানিতে বলেন, এর আগে একই আবেদন এই আদালতে হয়েছে এবং সেটা আপনার আদালত এবং আপিল বিভাগে খারিজ হয়েছে। আপিল বিভাগে খারিজ হওয়া আবেদন এবং আজকের আবেদন পুনরাবৃত্তি মাত্র। তিনি বলেন, আপিল বিভাগ তো বলেছেনই উন্নত চিকিৎসার প্রয়োজন হলে তার সম্মতিতে সেটা করা হবে। এছাড়া যে ওষুধ তার চিকিৎসার জন্য প্রয়োজন তা বাংলাদেশে রয়েছে। পরে হাইকোর্ট খালেদা জিয়ার চিকিৎসা ও স্বাস্থ্য পরিস্থিতি নিয়ে প্রতিবেদন দেওয়ার নির্দেশ দিয়ে শুনানি আগামী বৃহস্পতিবার পর্যন্ত মুলতবি করেন।

আদালতের আদেশের পর খালেদা জিয়ার আইনজীবী জয়নুল আবেদীন সাংবাদিকদের বলেন, আমরা যতটুকু জানি, উন্নত চিকিৎসার জন্য খালেদা জিয়া সম্মতি দিয়েছেন। সে অনুযায়ী চিকিৎসাও শুরু হয়েছে, কিন্তু তার শারীরিক অবস্থার উন্নতি হচ্ছে না।

দুর্নীতির দুই মামলায় মোট ১৭ বছরের দ- মাথায় নিয়ে কারাবন্দি সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া গত এপ্রিল থেকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। দল ও পরিবারের সদস্যরা তাকে অন্য হাসপাতালে নিতে চাইলেও তাতে অনুমতি মেলেনি।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close