আন্তর্জাতিক ডেস্ক

  ১৫ সেপ্টেম্বর, ২০১৮

ম্যার্কেল সরকারের ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত?

জার্মানির সরকারি জোটের ভবিষ্যৎ আবার প্রশ্নের মুখে পড়েছে। অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা সংস্থার প্রধানকে ঘিরে শরিকদের মধ্যে সংঘাত দানা বাঁধছে। আগামী মঙ্গলবার ফয়সালা হওয়ার কথা।

জোট সরকারের শরিকদের মুখে দুশ্চিন্তার ছাপ

জার্মানির অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা সংস্থার প্রধান হান্স গেয়র্গ মাসেন-এর ভবিষ্যৎকে কেন্দ্র করে সরকারি জোটের মধ্যে আবার চিড় ধরছে। কেমনিৎস শহরের সাম্প্রতিক ঘটনাবলিকে কেন্দ্র করে তার মন্তব্য ও আচরণের কারণে তিনি চরম বিতর্কে জড়িয়ে পড়েছেন। সরকারি জোট ও বিরোধী পক্ষের মধ্যে তার প্রতি আস্থা কমে চলেছে। বৃহস্পতিবার ৩ শরিক দলের প্রধান জরুরি বৈঠকে এ বিষয়ে ঐকমত্যে আসতে পারেননি।

বাভেরিয়ার সিএসইউ দলের নেতা ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হর্স্ট সেহোফার মাসেনকে তার পদে বহাল রাখতে বদ্ধপরিকর। তার দাবি, মাসেন চরম দক্ষিণপন্থিদের বিরুদ্ধে কড়া মনোভাব দেখিয়ে এসেছেন।

অন্যদিকে, এসপিডি দল তাকে অবিলম্বে পদচ্যুত করতে চায়। ভাইস চ্যান্সেলর ওলাফ শলৎস বলেন, মাসেন বিশ্বাসযোগ্যতা হারিয়েছেন। এবার তার পরিণতির সময় এসে গেছে। যেকোনো নিরাপত্তা সংস্থার প্রধানকে সম্পূর্ণ আস্থার পাত্র হতে হবে, বলেন শলৎস। চ্যান্সেলর আঙ্গেলা ম্যার্কেলও সম্ভবত মাসেনের প্রতি আস্থা হারিয়েছেন। আগামী মঙ্গলবার সরকারি জোটের নেতারা আবার জরুরি বৈঠকে বসবেন। সরকার গঠনের ৬ মাসের মধ্যেই মন্ত্রিসভার মধ্যে পারস্পরিক আস্থা কমে যাওয়ার ফলে জোটের অস্তিত্ব নিয়ে প্রশ্ন উঠছে।

বৃহস্পতিবার মাসেন নতুন করে আরো বিতর্কে জড়িয়ে পড়েছেন। তার তৈরি বাৎসরিক রিপোর্ট সরকারের হাতে পৌঁছানোর আগেই চরম দক্ষিণপন্থি এএফডি দলের এক সংসদ সদস্যের কাছে চলে এসেছিল বলে অভিযোগ উঠেছে। মাসেন অবশ্য এই অভিযোগ সম্পূর্ণ অস্বীকার করেছেন। তবে একের পর এক বিতর্ক ও তার পরিপ্রেক্ষিতে তার আচরণের কারণে তিনি সমর্থন হারাচ্ছেন।

পরিস্থিতি সামলাতে ও সরকারি জোটের অস্তিত্ব রক্ষার স্বার্থে চাপের মুখে মাসেন নিজে পদত্যাগ করতে পারেন, এমন সম্ভাবনার কথাও শোনা যাচ্ছে। তবে এখনো পর্যন্ত তিনি আত্মসমালোচনা বা পিছু হটার কোনো লক্ষণ দেখাননি। মাসেন বিদায় নিলে সরকারের মধ্যে অনেকে স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলবেন, এ বিষয়ে কোনো সন্দেহ নেই।

মাসেন স্বেচ্ছায় বিদায় না নিলে একমাত্র স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীই তাকে বরখাস্ত করার ক্ষমতা রাখেন। এমনকি চ্যান্সেলরও সেই পদক্ষেপ নিতে পারেন না। সরকারি জোটে আগেই কোণঠাসা সেহোফারের পক্ষে সেই সিদ্ধান্ত নেওয়া কঠিন হবে। বিশেষ করে বাভেরিয়ায় রাজ্য নির্বাচনের ঠিক আগে এমন পদক্ষেপকে তার দুর্বলতা হিসেবে তুলে ধরতে পারে বিরোধীরা। অন্যদিকে, ম্যার্কেলের সঙ্গে আবার সংঘাত শুরু করলে এবার তিনি নিজেই পদ খোয়াতে পারেন। সে ক্ষেত্রে সিএসইউ দল জোট ত্যাগ করবে। আগাম নির্বাচনের সম্ভাবনা বেড়ে যাবে। অথচ জোটের ৩ দলের মধ্যে কেউই এখন নির্বাচন চায় না। তিন শরিক দলের এমন উভয় সংকট পরিস্থিতিকে জটিল কওে তুলেছে। সবার মুখরক্ষা করে এক সমাধানসূত্রের খোঁজ চলছে।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close