নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধি

  ২৫ মে, ২০১৭

ঘুষের মামলায় ‘সেই’ শিক্ষক কারাগারে

ধর্মীয় অবমাননার অভিযোগ তুলে কান ধরে উঠবস করানোর ঘটনায় সংবাদ শিরোনাম হওয়া নারায়ণগঞ্জের শিক্ষক শ্যামল কান্তি ভক্তকে এবার ঘুষ নেওয়ার মামলায় কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত। পুলিশের দেওয়া অভিযোগপত্র আমলে নিয়ে নারায়ণগঞ্জের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট অশোক কুমার দত্ত গতকাল বুধবার সকালে শ্যামলের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন। এরপর বিকেলে এই শিক্ষক আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিন চাইলে বিচারক অশোক কুমার দত্ত তা নাকচ করে তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। শ্যামলের আইনজীবী সাখাওয়াত হোসেন খান জানান, ঘুষ নেওয়ার অভিযোগ অস্বীকার করে আসা শ্যামল কান্তি ভক্ত এদিন আদালতে সাংবাদিকদের বলেন, তাকে চাপে রাখতে ‘প্রভাবশালী এক ব্যক্তির নির্দেশে ষড়যন্ত্রমূলকভাবে’ ওই মামলা করা হয়েছে।

নারায়ণগঞ্জের বন্দর উপজেলার কল্যাণদীতে পিয়ার সাত্তার লতিফ উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শ্যামল কান্তি ভক্তকে গত বছরের ১৩ মে তারই স্কুলে ধর্মীয় অবমাননার অভিযোগ তুলে শারীরিক নির্যাতন ও কান ধরে উঠবস করানোর ঘটনা ঘটে স্থানীয় এমপি সেলিম ওসমানের নির্দেশে। ওই ঘটনায় সারা দেশে তোলপাড় সৃষ্টি হলে সংসদ সদস্য সেলিম ওসমান সংবাদ সম্মেলন করে বলেন, ‘শিক্ষককে নয়, নাস্তিককে শাস্তি দেওয়া হয়েছে।’ এরপর ২৭ জুলাই ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত, শিক্ষার্থীকে মারধর ও শিক্ষক মোর্শেদাকে এমপিওভুক্ত করে দেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে ঘুষ নেওয়ার অভিযোগে শ্যামল কান্তির বিরুদ্ধে তিনটি মামলার আবেদন নারায়ণগঞ্জের আদালতে জমা পড়ে।

২০১৪ সালের ডিসেম্বরে ঘুষ নেওয়ার অভিযোগে ২০১৬ সালের ২৭ জুলাই শ্যামল কান্তি ভক্তের বিরুদ্ধে মামলা করেন বন্দরের পিয়ার সাত্তার লতিফ উচ্চবিদ্যালয়ের ইংরেজি বিষয়ের শিক্ষক মোর্শেদা বেগম। আর ধর্মীয় অবমাননার অভিযোগ এনে শ্যামল কান্তিকে স্থানীয় সংসদ সদস্য সেলিম ওসমানের নির্দেশে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করা হয় গত বছরের মে মাসে। এর দুই মাস পর মামলাটি করেন ওই শিক্ষিকা।

মামলায় অভিযোগ করা হয়, ২০১৪ সালের ২৪ ডিসেম্বর বন্দরের পিয়ার সাত্তার লতিফ উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শ্যামল কান্তি ভক্ত ইংরেজি শিক্ষক মোর্শেদা বেগমের চাকরি এমপিওভুক্ত করে দেওয়ার জন্য তার কাছ থেকে প্রথমে ৩৫ হাজার টাকা ঘুষ নেন। পরে তার কাছ থেকে আরো এক লাখ টাকা ঘুষ নেন। কিন্তু তাকে এমপিওভুক্ত করার উদ্যোগ নেওয়া হয়নি, টাকাও ফেরত দেওয়া হয়নি। এ ঘটনায় গত বছরের ২৭ জুলাই তিনি আদালতে মামলা করেন।

আদালত সূত্র জানায়, আদালত বন্দর থানার পুলিশকে তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিল করার নির্দেশ দেন। এ বছরের ১৭ এপ্রিল তদন্তকারী কর্মকর্তা বন্দর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) হারুন অর রশিদ আদালতে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন। বরাবরই শ্যামল কান্তি ভক্ত তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ অস্বীকার করে আসছেন। তার দাবি-তাকে চাপে রাখতেই প্রভাবশালী এক ব্যক্তির নির্দেশে ষড়যন্ত্রমূলক মামলাটি করা হয়েছে। এ ব্যাপারে তিনি বলেন, ‘আমি এখানে ন্যায়বিচার পেলাম না। একজন প্রভাবশালী ব্যক্তির কারণে আমাকে ষড়যন্ত্র ও পরিকল্পিতভাবে এই মামলায় ফাঁসানো হয়েছে। আমার বিরুদ্ধে যে ঘুষের অভিযোগ আনা হয়েছে, আমি কখনো এ ধরনের ঘটনার সঙ্গে জড়িত নই। আমাকে ফাঁসানো হয়েছে। যে সময় ঘুষ নেওয়ার কথা বলা হয়েছে, তখন শীতকালীন ছুটি ছিল বিদ্যালয়ে। ’

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close
Error!: SQLSTATE[42S02]: Base table or view not found: 1146 Table 'protidin_sangbad.news_hits_counter_2020_04_07' doesn't exist
Error!: SQLSTATE[42S02]: Base table or view not found: 1146 Table 'protidin_sangbad.news_hits_counter_2020_04_07' doesn't exist