মালয়েশিয়ার মানবসম্পদমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক করেছেন বাংলাদেশের হাইকমিশনার। এ সময় দেশটির শ্রমবাজার, বাংলাদেশি কর্মী এবং দ্বিপক্ষীয় স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিভিন্ন বিষয়ে আন্তরিক আলোচনা হয়েছে।

জানা গেছে, গত বৃহস্পতিবার মালয়েশিয়া সরকারের মানবসম্পদ মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী দাতুক সেরি এম সারাভানানের সঙ্গে তার কার্যালয়ে মালয়েশিয়ায় নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনার মো. শহীদুল ইসলাম বৈঠক করেন। বৈঠকে হাইকমিশনার নবনিযুক্ত মালয়েশিয়ার মানবসম্পদমন্ত্রীকে অভিনন্দন জানান এবং করোনাকালে সাক্ষাৎকার দেওয়ায় ধন্যবাদ জানান। আলোচনায় হাইকমিশনার করোনা নিয়ন্ত্রণে সফলতার জন্য মালয়েশিয়া সরকারের প্রশংসা করেন। দাতুক সেরি দৃঢ়তার সঙ্গে সরকারের ভিশনারি নেতৃত্ব দেওয়া এবং করোনা মোকাবিলায় সাহসী নেতৃত্ব দেওয়ায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভূয়সী প্রশংসা করেন। হাইকমিশনার করোনা পরিস্থিতিতে চলাচল নিয়ন্ত্রণ সংক্রান্ত আদেশের সময়ে মালয়েশিয়া সরকার এবং বিভিন্ন এজেন্সির সঙ্গে বাংলাদেশ হাইকমিশন কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে প্রবাসী বাংলাদেশি কর্মীদের কল্যাণে যে কাজ করেছে, তা এক অনন্য অভিজ্ঞতা হিসাবে উল্লেখ করেন। বিশেষ করে করোনার কারণে বিপদগ্রস্ত প্রবাসী বাংলাদেশি কর্মীদের কাছে খাবার সহায়তা পৌঁছে দেওয়া, চাকরি ও বেতন নিশ্চিত করা, প্রয়োজনীয় কোয়ারেন্টাইন এবং চিকিৎসাব্যবস্থা করার জন্য হাইকমিশনার ধন্যবাদ জানান। তিনি করোনা পরিস্থিতির শিকার হয়ে বাংলাদেশি কর্মীকে যাতে নিজ দেশে ফিরে যেতে না হয়; এজন্য নিয়োগকর্তা পরিবর্তনের সুযোগ দেওয়ায় ধন্যবাদ জানান। মন্ত্রী বলেন, ডিটেনশন সেন্টারে থাকা বিদেশিদের বৈধতা দিয়ে কর্মে নিয়োগ এবং অবৈধদের বৈধতা দেওয়ার জন্য মালয়েশিয়া সরকার কাজ করছে।

মন্ত্রী দাতুক সেরি বলেন, বাংলাদেশের নাগরিকরা অনেক পরিশ্রমী, দক্ষ ও আন্তরিক। তারা মালয়েশিয়ার উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছেন এবং এসব কর্মীর সুরক্ষা দেওয়া হবে। তিনি বলেন, নিয়োগকর্তারা যাতে বিদেশি কর্মীদের সুরক্ষিত কর্মপরিবেশ, যথাযথ আবাসন এবং নিয়মিত বেতন নিশ্চিত করে; সেসব বিষয়ে মালয়েশিয়া সরকার অত্যন্ত গুরুত্ব দিচ্ছে।

তিনি আরো বলেন, বিদেশি কর্মীদের সার্ভিস বেনিফিট দেওয়া হবে এবং সেভিংসের ব্যবস্থা করা হবে, যাতে তারা একেবারে শূন্য হাতে নিজ দেশে ফিরে না যান। হাইকমিশনার বলেন, মালয়েশিয়া থেকে ছুটিতে যাওয়া বাংলাদেশি কর্মীরা কাজে যোগ দিতে চান এবং অনেকের ভিসার মেয়াদ শেষ হয়েছে। কারণ ছুটিতে থাকায় পারমিট রিনিউ করতে পারেননি। এ বিষয়ে মন্ত্রী বলেন, যাদের ভিসার মেয়াদ আছে তারা নিয়ম মেনে মালয়েশিয়া আসতে পারবেন এবং যাদের ভিসার মেয়াদ শেষ হয়েছে; তারা যাতে আবার মালয়েশিয়ায় আসতে পারেন, সে বিষয়ে সরকার শিগগিরই ঘোষণা দেবে।

বৈঠকে মানবসম্পদ মন্ত্রণালয়ের ডেপুটি সেক্রেটারি জেনারেল দাতুক মোহাম্মদ খাইর আজমান বিন মোহামেদ আনুয়ার, আন্ডার সেক্রেটারি (পলিসি) ড. নুর মাজনি বিনতি আবদুল মজিদ, ড. জাকি বিন জাকারিয়া, প্রিন্সিপাল অ্যাসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি শাবুদ্দিন বিন বকর এবং হাইকমিশনের লেবার কাউন্সেলর মোহাম্মদ জহিরুল ইসলাম, লেবার কাউন্সেলর-২ মো. হেদায়েতুল ইসলাম মন্ডল এবং ২য় শ্রম সচিব ফরিদ আহমেদ উপস্থিত ছিলেন।

"