যশোর প্রতিনিধি

  ১৪ নভেম্বর, ২০১৯

যশোরে সেনাপ্রধান

সেনাবাহিনী দেশের স্বার্থে কাজ করে

সেনাবাহিনীর প্রধান জেনারেল আজিজ আহমেদ বলেন, একটি আধুনিক, যুগোপযোগী ও শক্তিশালী সেনাবাহিনী গঠনের প্রয়োজনীয়তা অনস্বীকার্য। সেই লক্ষ্যকে সামনে রেখেই ফোর্সেস গোল ২০৩০ প্রণয়ন ও বাস্তবায়নের অংশ হিসেবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সুযোগ্য নেতৃত্বে সেনাবাহিনীর সাংগঠনিক বিন্যাস ও পরিবর্তনের পাশাপাশি আধুনিকায়নের প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে।

গতকাল বুধবার তিনি যশোরের ৫৫ পদাতিক ডিভিশনে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ৫টি ইউনিটকে রেজিমেন্টাল কালার প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। তিনি আরো বলেন, সেনাবাহিনী সব সময় দেশ ও জাতির স্বার্থে কাজ করে। কাজ করে সরকারের সহায়ক হিসেবেও। সরকারের যে পলিসি থাকে, তা এগিয়ে নিয়ে যাওয়াও আমাদের কাজ। তাই দুদেশের সামরিক বাহিনীর স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিষয় নিয়ে আলোচনার পাশাপাশি রোহিঙ্গা সমস্যা নিয়েও কথা হবে।

সেনাপ্রধান বলেন, আধুনিক প্রযুক্তির সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতে হলে অত্যাধুনিক ও বাস্তবসম্মত প্রশিক্ষণ অপরিহার্য। আর কোনো প্রশিক্ষণই ফলপ্রসূ হবে না, যদি আমাদের মৌলিক প্রশিক্ষণের ঘাটতি থাকে। প্রশিক্ষণ ফলপ্রসূ করার লক্ষ্যে ‘বেসিক সোলডারিং’-এর ওপরও গুরুত্ব দিতে হবে। মনে রাখবেন প্রশিক্ষণই সর্বোচ্চ কল্যাণ। তিনি আরো বলেন, ভবিষ্যতেও মাতৃভূমির অখ-তা রক্ষা তথা জাতীয় যেকোনো প্রয়োজনে সেনাবাহিনীকে সর্বোচ্চ ত্যাগ স্বীকারে সদা প্রস্তুত থাকতে হবে।

যশোর সেনানিবাসের সিগন্যাল ট্রেনিং সেন্টার অ্যান্ড স্কুল প্রাইভেট গ্রাউন্ডে অনুষ্ঠানটির আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানে তিনি আরো বলেন, বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ইতিহাসে আজ প্রথমবারের মতো কোনো সিগন্যাল ইউনিট রেজিমেন্টাল কালার অর্জন করল, যা এক সিগন্যাল ব্যাটালিয়ন তথা কোর অব সিগন্যালসের ইতিহাসে একটি গৌরবময় অধ্যায়ের সূচনা করল। বাংলাদেশ সেনাবাহিনীতে প্রতিষ্ঠিত প্রথম সিগন্যাল ইউনিট সিগন্যাল ব্যাটালিয়ন। ১৯৭১ সালে যাত্রা শুরুর পর থেকে ‘অপারেশন আলোর সন্ধানে’ এবং ‘অপারেশন নবযাত্রা’সহ অর্পিত সব দায়িত্ব অত্যন্ত সফলতার সঙ্গে পালন করেছে। এই ইউনিট বিগত একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনের মাধ্যমে ভোট গ্রহণে সব ধরনের কারিগরি সহায়তা সফলতার সঙ্গে প্রদান করে, যা সব মহলে প্রশংসিত হয়েছে। এ ছাড়া এক সিগন্যাল ব্যাটালিয়ন ফরমেশন পর্যায়ে প্রশিক্ষণ প্রতিযোগিতা ও খেলাধুলায় ৪৬টি ট্রফি অর্জনে সক্ষম হয়।

সেনাবাহিনীর প্রধান বলেন, বাংলাদেশ ও সৌদি আরবের মধ্যে আন্তরাষ্ট্রীয় চুক্তির মাধ্যমে মাইন অপসারণে সহযোগিতার জন্য বাংলাদেশ থেকে সেনাসদস্য মোতায়নের বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন। বাংলাদেশ থেকে ১ হাজার ৭০০ জনবলের দুটি ডি মাইনিং ব্যাটালিয়ন এবং বিএমসি সদর দফতরের সঙ্গে ১৮ জন জনবল সৌদি আরবের জাযান এবং নাজরান এলাকায় নিয়োজিত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এর পরিপ্রেক্ষিতে বাংলাদেশ থেকে এমওইউ সৌদি কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠানো হয়েছে, যা অনুমোদন হওয়ার পর চূড়ান্তভাবে কার্যক্রম শুরু হবে।

অনুষ্ঠানে গৌরবোজ্জ্বল ঐতিহ্যের ধারক, বাহক ইউনিটসমূহ কর্তৃক সেনাবাহিনী তথা দেশমাতৃকার সেবায় বিশেষ অবদানের জন্য রেজমেন্টাল কালার দেওয়া হয়। বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ৮ ফিল্ড রেজিমেন্ট আর্টিলারি, ১২ ফিল্ড রেজিমেন্ট আর্টিলারি, ৩৬ এডি রেজিমেন্ট আর্টিলারি, ৩ ইঞ্জিনিয়ার ব্যাটালিয়ন এবং ১ সিগন্যাল ব্যাটালিয়ন কালার প্যারেডে অংশগ্রহণ করে এবং প্রধান অতিথির কাছ থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে রেজিমেন্টাল পতাকা গ্রহণ করে। উল্লেখ্য, সেনাবাহিনীর সামরিক ঐতিহ্য অনুযায়ী যেকোনো ইউনিটের জন্য রেজিমেন্টাল কালারপ্রাপ্তি অত্যন্ত গৌরবের বিষয়।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close