মাদারীপুর প্রতিনিধি

  ১৩ নভেম্বর, ২০১৯

ঘূর্ণিঝড়ে নুয়ে পড়া ধান দ্রুত কাটার পরামর্শ

ক্ষতি কমাতে ঘূর্ণিঝড় বুলবুলের তোড়ে খেতে নুয়ে পড়া ও পানিতে তলিয়ে যাওয়া ধান দ্রুত কেটে নেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন কৃষি কর্মকর্তারা। মাদারীপুর জেলায় এবার বোনা ও রোপা আমন মিলিয়ে ২৯ হাজার ৪২৯ হেক্টর জমিতে ধান চাষ হয়। ঘূর্ণিঝড় বুলবুল আঘাত হানার পর কৃষি বিভাগের জরিপে উঠে আসে এ জেলায় মাঠে রোপা ও বোনা আমন মিলিয়ে ২৬ হাজার ৭৭৭ হেক্টর জমিতে ধান কাটা হয়নি। বেশিরভাগ ধান পেকে আসায় ‘ঝড়বৃষ্টিতে নুয়ে পড়া ও পানিতে তলিয়ে যাওয়া ধান দ্রুত কেটে নিতে জেলার কৃষি কর্মকর্তারা কৃষকদের পরামর্শ দিয়েছেন বলে জানিয়েছেনে এই কৃষিবিদ। এতে কৃষকদের ক্ষতি কিছুটা কম হবে। সরকারের কৃষি তথ্য সার্ভিস (এআইএস) থেকে জানানো হয়েছে, আষাঢ় মাসে বীজতলায় রোপা আমনের বীজ বোনা হয়, শ্রাবণ-ভাদ্র মাসে জমিতে রোপণ করা হয় এবং এলাকাভেদে কার্তিক-অগ্রহায়ণ-পৌষ মাসে এ ধান কাটা হয়ে থাকে। কৃষি তথ্য সার্ভিস আরো জানিয়েছে, ‘শীষের অগ্রভাগের শতকরা ৮০ ভাগ ধানের চাল শক্ত হলে ধান ঠিকমতো পেকেছে বলে বিবেচিত হবে। এ সময়ে ফসল কেটে মাড়াই করতে হবে। ‘বেশি পাকা অবস্থায় কাটলে অনেক ধান ঝরে পড়ে, শীষ ভেঙে যায়।’

মাদারীপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপপরিচালক জি এস এম গফুর জানান, মাদারীপুরে বুলবুলের আঘাতের আগেই আমন ধান কাটা শুরু হয়েছিল। তাই মাঠ থেকে কৃষক কিছু ধান আগেই কেটে নিয়েছে।

মাদারীপুর সদর উপজেলার কেন্দুয়া ইউনিয়নের আমন চাষি সিদ্দিক হাওলাদার বলেন, কয়েক বছর ধরে ধান চাষ করে শুধু লোকসানই গুনতেছি। তারপরও কৃষিকাজ ছাড়া তো আর কিছু শিখি নাই। তাই এবারো সুদে টাকা ঋণ করে তিন বিঘা জমিতে আমন ধান রোপণ করছিলাম। কিন্তু বুলবুলে আমার সব ধান খাইয়া দিল।

সদরের কলাবাড়ি গ্রামের আরেক ধানচাষি দেলোয়ার হোসেন জানান, তার দুই বিঘা জমির আমন ধানের সব ঘূর্ণিঝড়ে শুয়ে পড়ে পানিতে ডুবে আছে। কোনো কৃষি শ্রমিকও পাচ্ছি না ধানগুলো কেটে আনব। কী যে করব তার কোনো দিশা খুঁজে পাচ্ছি না। চোখের জলই এখন সম্বল। পাকা ধান বেশি দিন পানিতে থাকলে গাজিয়ে যাওয়ার শঙ্কায় ভুগছেন তিনি।

কালকিনি উপজেলার ডাসার থানার কৃষক হরিতষ মল্লিক, নিরঞ্জন বাড়ৈসহ একাধিক কৃষক বলেন, ‘ধান নিয়ে এখন বিপাকে পড়েছি। সরকার যদি আমাদের সহযোগিতা না করে তাহলে আমরা শেষ হয়ে যাব।’

সরকারি তথ্য মতে, ২০১৬-১৭ আমন মৌসুমে দেশে ৫.৫-৫.৬ মিলিয়ন হেক্টর জমিতে আমন ধানের চাষ হয়, এর মধ্যে ০.৩২৮ মিলিয়ন হেক্টর বোনা, ১.০৮৩ মিলিয়ন হে. স্থানীয় জাতের এবং ৪.১৭২ মিলিয়ন হেক্টর জমিতে উফশী রোপা আমন চাষ হয়। ২০১৭-১৮ মৌসুমে সরকারের উদ্যোগের কারণে আমন আবাদ এলাকা দুই শতাংশ বৃদ্ধি পায়।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close