মহানগর (ময়মনসিংহ) প্রতিনিধি

  ১৫ অক্টোবর, ২০১৯

ময়মনসিংহে প্রস্তাবিত শিশু হাসপাতাল

জায়গা খুঁজতেই পার হলো আড়াই বছর

ময়মনসিংহ শহরে একটি শিশু হাসপাতাল নির্মাণের জন্য ২০১৭ সালের মার্চে ৩০ কোটি টাকা বরাদ্দ দেয় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। অর্থ বরাদ্দের অন্যতম শর্ত ছিল হাসপাতালটি শহরের মধ্যে এবং প্রধান সড়কের পাশে এক একর জায়গায় নির্মাণ করতে হবে। এজন্য দ্রুত গণপূর্ত বিভাগের মাধ্যমে দরপত্র আহ্বান করে কাজ শুরুর কথাও বলা হয়েছিল। কিন্তু আড়াই বছর অতিবাহিত হলেও শহরের ভেতরে জায়গা নির্ধারণ করতে না পারায় শিশু হাসপাতালের নির্মাণকাজ শুরুই করা সম্ভব হয়নি। ফলে ঝুলে গেছে নির্মাণের উদ্যোগ। কেননা ২০২০ সালের মধ্যে কাজ শুরু করতে না পারলে বরাদ্দকৃত অর্থ ফেরত নিয়ে যাওয়ার শঙ্কা রয়েছে।

জানা গেছে, এই প্রকল্পের মূল দায়িত্বে রয়েছে ময়মনসিংহ জেলা সিভিল সার্জন কার্যালয়। তবে স্থান খোঁজার দায়িত্বে গণপূর্ত অধিদফতরের ময়মনসিংহ সার্কেল। কয়েকটি জায়গা দেখলেও নানা জটিলতায় এখনো কোনো স্থান নির্ধারণ করতে পারেননি সংশ্লিষ্টরা।

সিভিল সার্জন কার্যালয় সূত্র জানায়, প্রথমে শহরের এস কে হাসপাতালের পেছনে পাটগুদাম এলাকায় পরিত্যক্ত খালি জায়গা বাছাই করা হয়। কিন্তু জায়গাটি বাংলাদেশ জুট মিলস করপোরশনের (বিজেএমসি) মালিকানা থাকায় সেখানে জায়গা পাওয়া যায়নি। পরে মাসকান্দা এলাকায় ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ-২-এর জন্য নির্ধারিত একটি স্থান বাছাই করা হয়। কিন্তু সেটিও ইনস্টিটিউট অব হেলথ টেকনোলজির জন্য বরাদ্দ থাকায় সেই পদক্ষেপও ভেস্তে যায়। এস কে হাসপাতালের ভেতরে জায়গার প্রস্তাব দেওয়া হলে সেখানেও জায়গা বরাদ্দ দেওয়া সম্ভব হয়নি। কারণ হাসপাতালটি জমিদার আমল থেকেই দেবোত্তর সম্পত্তি হওয়ায় নতুন কোনো স্থাপনা নির্মাণে প্রশাসনের আপত্তি রয়েছে। এছাড়া ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজের স্টাফ কোয়ার্টারের পেছনে একটি ফাঁকা জায়গা বাছাই করা হলেও তা চূড়ান্ত করা যায়নি। আরো দুই-তিনটি খাস জমি দেখা হলেও সেগুলোও আলোর মুখ দেখেনি।

গণপূর্ত অধিদফতরের (ময়মনসিংহ সার্কেল) তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী মো. কামরুজ্জামান বলেন, শহরের একাধিক জায়গা তারা পরিদর্শন করেছেন, কিন্তু স্থান নির্ধারণের বিষয়টি এখনো চূড়ান্ত হয়নি। এ বিষয়ে সহযোগিতার চেয়ে জেলা প্রশাসনের কাছে একাধিকবার চিঠি পাঠানো হয়েছে। সর্বশেষ শিকারিকান্দা বাইপাস এলাকায় একটি স্থান দেখা হয়েছে, চূড়ান্ত অনুমোদন পেলে দ্রুত দরপত্র আহ্বান করে কাজ শুরুর ব্যাপারে আশাবাদী তিনি।

শিশু হাসপাতালটি ১০০ শয্যা দিয়ে শুরু হওয়ার কথা। পরে ধীরে ধীরে এর সেবার পরিধি বাড়ানোর পরিকল্পনা আছে। কিন্তু এখনো এর নির্মাণ কাজই শুরু করা যায়নি। এতে হতাশা ব্যক্ত করেছেন শহরের বাসিন্দা এবং অন্য হাসপাতালের চিকিৎসকেরা।

ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের শিশু বিভাগের সহকারী অধ্যাপক বিশ^জিৎ চৌধুরী বলেন, সারা বছরই তাদের হাসপাতালে শিশু রোগীর চাপ বেশি থাকে। সক্ষমতার দুই-তিন গুণ বেশি দেখতে হয়। শিশু বিভাগের শয্যা পাওয়া যায় না। শিশুদের অনেক সময় মনোযোগ দিয়ে চিকিৎসা দেওয়াও কঠিন হয়ে পড়ে। শিশুদের জন্য বিশেষায়িত নতুন হাসপাতাল হলে তারা আরো ভালোভাবে সেবা পাবে।

ময়মনসিংহ বিভাগীয় কমিশনার খন্দকার মোস্তাফিজুর রহমান এ বিষয়ে জানান, হাসপাতালের জন্য জায়গার খোঁজে তিনি সহযোগিতা করছেন এবং নির্মাণের জন্য দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close